‘সব কেড়ে নিয়েছে নদী, প্রধানমন্ত্রীকে একটু কও’

  • সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙছে পদ্মা নদী। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙছে পদ্মা নদী। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সর্বনাশা প্রবাহমান প্রমত্তা পদ্মা নদীর করাল গ্রাসে দিশেহারা হয়ে পড়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের নদী পাড়ের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ। পদ্মায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে নদীতে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এরই মধ্যে ৪টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

আর দৌলতদিয়া ১ নং ফেরি ঘাট সংলগ্ন নদীর পাড়ে বসবাসরত মানুষগুলো নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। যাদের অন্য কোনো জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই তারা খোলা আকাশের নিচেই পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বিজ্ঞাপন

নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ওই ৪ গ্রাম হলো- আফছার শেখের পাড়া, ধল্লাপাড়া, হাতেম মণ্ডলের পাড়া ও লালু মণ্ডলের পাড়া। এই ৪টি গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। সরকারি তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ অক্টোবর) সরেজমিনে দৌলতদিয়া ১ নং ফেরি ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবারেই বিলীন হয়ে গেছে ফেরি ঘাটটি। সেই সঙ্গে ওই এলাকার অনেক বসতি ও গাছপালা ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। এ কারণে এখানকার মানুষ নিরাপত্তার কথা ভেবে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। অনেকে আবার তাদের গাছগুলো কেটে নিচ্ছে।

১নং ঘাটের নদী পাড়ের বাসিন্দা ফুলমতি বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এখানে আমাদের বাড়ি ছিল। কিন্তু সব কেড়ে নিয়েছে নদী। এখন অন্য কোথায় গিয়ে থাকব আমরা। আমাগো তো আর কিছুই থাকল না। বাবা তোমরা আমাদের দুঃখের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটু কও।’

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, নদীতে ৪টি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। এ সকল নদী ভাঙনের শিকার মানুষগুলো এখন দিশেহারা। কী করবে, কোথায় যাবে কিছুই তারা বুঝতে পারছে না। সত্যি তারা বড় অসহায় হয়ে পড়েছে।

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব নদী ভাঙনরোধের জন্য জিও ব্যাগ ফেলতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এরই মধ্যে যাদের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে আমরা তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করছি। তালিকার কাজ শেষ হলে নদী ভাঙনের শিকার মানুষের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।’

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘নদী ভাঙনরোধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও জেলা প্রশাসক আমাকে বলেছেন। নদী ভাঙনরোধে দিনরাত প্রায় ১০০ শ্রমিক কাজ করছে।’