ইলিশ ধরা বন্ধ, মধ্যরাতে মেঘনা থেকে উঠে আসবে জেলেরা
মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে আগামী ২২ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। নদী ছেড়ে ডাঙায় উঠে আসবে জেলেরা। কারণ এ আদেশ অমান্য করলে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুরের ৩৫ হাজার ৩২৬ জন জেলেকে সরকারিভাবে বিনামূল্যে চাল দেওয়া হবে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার জেলের কার্ড রয়েছে। কার্ড থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১৫ হাজার জেলে সরকারি সহায়তা পান না। দাদন ও আড়তদারদের থেকে ঋণই তাদের পুঁজি। এ কারণেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদেরকে বাধ্য হয়ে নদীতে নামতে হয়। আর নদীতে না নামলেও নিষেধাজ্ঞাকালীন তাদেরকে অলস সময় কাটাতে হয়। ধার দেনা করে সংসার চালাতে হয়।
জানা গেছে, চন্দ্রমাসের ভিত্তিতে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার দিন, আগের চারদিন ও পরের ১৭ দিন ইলিশের প্রজনন মৌসুম ধরা হয়। আশ্বিন মাসের ভরা পূর্ণিমায় মা ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে। এজন্য মা ইলিশ মেঘনা উপকূলে আসে। ৯ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ৩০ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত এ ২২দিন রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে ২২ দিন সকল প্রকার মাছ শিকার নিষিদ্ধ। সরকারের এ আইন বাস্তবায়ন করতে রামগতির আলেকজান্ডার থেকে রায়পুরের টাংকির পুল পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার মেঘনা এলাকায় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, বিক্রয় ও মজুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলা, উপজেলা ও মৎস্য বিভাগ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলেদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে অবহিতকরণ সভা, মাইকিং, ব্যানার ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ আইন বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহ বলেন, 'এখানকার জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা নিষেধাজ্ঞার সময় এখন আর নদীতে যান না। তবুও সরকারি আইন বাস্তবায়নে আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। এ সময়ে ৩৫ হাজার ৩২৬ জন জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।'