বাল্যবিয়েকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পরীক্ষার হলে সাদিয়া
পাঁচ মাস আগের কথা। সাদিয়া আক্তার তখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শৈশবের দুরন্তপনা ও পড়াশোনা করে দিন কাটত তার। চোখে তার বড় হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোপনে তাকে বাল্যবিয়ে দেন বাবা। এতে স্বপ্ন ভেঙে যায় সাদিয়ার। কিন্তু প্রতিবাদী সাদিয়া বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে গ্রাম ছেড়ে মায়ের সঙ্গে ঢাকায় যায়।
চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে ফের গ্রামে ফিরেছে সাদিয়া। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে শনিবার (২ নভেম্বর) জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
সাদিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলের সিংরুইল ইউনিয়নের হায়াতপুর গ্রামে। স্থানীয় মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম সাইদুল ইসলাম, মা মাহমুদা খাতুন।
জানা গেছে, সাদিয়ার জন্মের এক বছরের মাথায় তার মায়ের সঙ্গে বাবার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। জীবিকার তাগিদে মাহমুদা খাতুন ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। সাদিয়াকে রেখে যান তার নানির কাছে। তবে বাবার সঙ্গে সাদিয়ার যোগাযোগ ছিল।
পাঁচ মাস আগে সাদিয়াকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবাদী সাদিয়া স্বামীর ঘরে যেতে বেঁকে বসে। এক পর্যায়ে ঢাকায় মায়ের কাছে চলে যায় সে। সেখানে থেকেই জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে।
গতকাল শনিবার নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ফাজিল মাদরাসার পরীক্ষা কেন্দ্রে সহপাঠীদের সঙ্গে জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাদিয়া। তার রোল নম্বর ১৪৩৫৭৯।
পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে সাদিয়া জানায়, পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে। সামনের পরীক্ষাগুলো ভালো করে দিতে চায় সে।
সাদিয়া আক্তারের মা মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘সাদিয়া পড়াশোনা করে বড় হতে চায়। আমি তার পাশে আছি।’