৫ মাস পর সুমাইয়া ফিরল মায়ের কাছে
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৫ মাস পর শিশু সুমাইয়াকে (১০) ফিরে পেয়েছে তার মা।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরিচয় না পাওয়ায় গত ২ নভেম্বর আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) পাঠানো হয়। ফেসবুকে খোঁজ পেয়ে তার মা এসে যোগাযোগ করেছে। পরে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল কাদেরের নির্দেশে সুমাইয়াকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সুমাইয়া ভোলা জেলার বাসিন্দা দিনমজুর সজিবের মেয়ে। তবে শিশুটির বাবা অন্যত্র বিয়ে করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। মা মারজাহানের সঙ্গে শিশুটি কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকায় নানার বাড়িতে থাকে।
আদালত ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়াসহ তিন শিশু সন্তান নিয়ে অভাব-অনটনে হিমশিম খাচ্ছিল মা মারজাহান। যে কারণে পড়ালেখারও সুযোগ পায়নি শিশু সুমাইয়া। ৫ মাস আগে সুমাইয়া নানার বাড়ি থেকে স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে ভিক্ষা করতে বের হয়। কিন্তু সে মনভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকায় চলে যায়। সেখানে কোতোয়ালি বারাকা শিশু সেন্টার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাকে পথশিশু হিসেবে চিহ্নিত করে।
সবশেষ গত ২ নভেম্বর ঢাকা থেকে শিশুটি লক্ষ্মীপুর চলে আসে। তখন শহরের ঝুমুর এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সদর মডেল থানা হেফাজতে পাঠায়। পরে শিশুটিকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সমন্বয়ে আদালতের মাধ্যমে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) পাঠানো হয়।
সুমাইয়ার মা মারজাহান বলেন, ‘সুমাইয়া হারানোর পর মাইকিং করা হয়েছিল। তিনদিন আগে ফেসবুকে দেখতে পেয়ে লোকজন আমাকে জানিয়েছে। পরে আমি সমাজসেবা অফিসে এসে যোগাযোগ করলে আদালতের মাধ্যমে তাকে ফিরে পেয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ২ নভেম্বর সুমাইয়ার সঙ্গে পপি নামে ৯ বছর বয়সী আরও এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। তার বাবার নাম মালেক ও মায়ের নাম সাথী। ঠিকানা বলতে না পারায় বর্তমানে শিশুটিকে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) রাখা হয়েছে।