পুলিশের ভুলে জেল, জামিন পেল নিরপরাধ মিজান

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুলিশের ভুলে জেল খাটলেন মিজান, ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের ভুলে জেল খাটলেন মিজান, ছবি: সংগৃহীত

যশোরে পুলিশের ভুলে একদিন কারাভোগ করলেন মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজান নামের এক ব্যক্তি। বিস্ফোরক মামলার আসামি পাগলা মিজান নামের একজনকে গ্রেফতার করতে গেলে তাকে না পেয়ে ভুলবশত তোতলা মিজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভোরে পুলিশ তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ভুল বুঝতে পেরে বুধবার আদালতে প্রতিবেদন দিলে জামিন মেলে ভুলবশত গ্রেফতার হওয়া তোতলা মিজানের।

বিজ্ঞাপন

দিনমজুর তোতলা মিজান যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে।

আর বোমা বিস্ফোরণ মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি সুজলপুর হঠাৎপাড়া’র নূরুল হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান।

বিজ্ঞাপন

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি শহরতলীর সুজলপুর জামতলা আকবর মিয়ার রড ফ্যাক্টরির সামনে খোলাডাঙ্গা গ্রামের সাগর, তাহের, সুজলপুরের হঠাৎপাড়ার মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান, নাজু, জাহাঙ্গীর, রিপন, রনি ও রবিউলসহ ১০/১২জন নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশে লেখা কিছু পোস্টার টাঙাতে যায়। এসময় সুজলপুর গ্রামের আব্দুস সালাম মিঠু তাদের পোস্টার লাগাতে নিষেধ করে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুস সালাম মিঠুকে লক্ষ্য করে কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। মিঠুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে সাগর ও তাহেরকে দু’টি বোমাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

এ ঘটনায় আব্দুস সালাম মিঠু বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২ জনের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। সর্বশেষ মামলাটি তদন্ত করে ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এসআই হায়াৎ মাহমুদ খান।

মামলার এজাহারে এবং চার্জশিটে আসামির নাম উল্লেখ করা হয় মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। পিতার নাম নূরুল হাওলাদার ও গ্রামের নাম সুজলপুর হঠাৎপাড়া উল্লেখ করা হয়।

অথচ গত মঙ্গলবার ভোররাতে খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজানকে গ্রেফতার করেন কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই আল মিরাজ খান। এ সময় মিজান জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে চাইলেও ওই দারোগা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগী মিজান মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের বারান্দায় সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্যানেটারি মিস্ত্রির কাজ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করেন। তার বিরুদ্ধে কোনদিন মামলা হয়নি। কিন্তু দারোগা কোনো কথাই না শুনেই তাকে গ্রেফতার করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের কর্তাব্যক্তিরাও অবহিত হন। পরে তারা খোঁজখবর নিয়ে ভুল বুঝতে পারেন। এর প্রেক্ষিতে বুধবার আদালতে বিষয়টি অবহিত করা হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদি হাসান তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে জানান, ভুল আসামি ধরার অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। বুধবার আদালতে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এরপর আদালত আটক মিজানের জামিন দিয়েছেন।