বগুড়ায় ভেড়া পালনে আগ্রহ বাড়ছে

  • গনেশ দাস,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,বগুড়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় ভেড়া পালন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ছবি: বার্তা২৪.কম

বগুড়ায় ভেড়া পালন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ছবি: বার্তা২৪.কম

বগুড়ায় ভেড়ার মাংস তেমন জনপ্রিয় না হলেও দিন দিন ভেড়া পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেক পরিবার। খরচ কম ও লালনপালন তুলনামূলক সহজ হওয়ায় বগুড়ার বেশিরভাগ উপজেলাতেই ভেড়া পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছে পরিবারগুলো। তবে শাজাহানপুর,গাবতলী ও ধুনট উপজেলায় ভেড়া পালন তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়।

ভেড়াপালন লাভজনক হওয়ায় উপজেলার অনেক পরিবার ভেড়া পালনে উৎসাহী হচ্ছেন। শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান। তিনি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। অসুস্থতার কারণে তিনি চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন। এক বছর বেকার থাকার পর জানতে পারেন ভেড়া পালন এখন লাভজনক ব্যবসা।

বিজ্ঞাপন

শুরু করেন ভেড়া পালন। ব্যবসার শুরুতে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩০টি ভেড়া কেনেন তিনি। এক বছর পর লক্ষাধিক টাকায় ভেড়াগুলো বিক্রি করেন। বর্তমানে তার খামারে ৩৮টি ভেড়া রয়েছে।

আব্দুর রহমান বলেন, ছাগল ও গরু পালনের চেয়ে ভেড়া পালন লাভজনক। ভেড়া সব ধরনের ঘাস ও লতা পাতা খায়। এ কারণে ভেড়ার জন্য বাড়তি খাবার প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও ভেড়ার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে না।

বিজ্ঞাপন
গরু-ছাগলের থেকে ভেড়া পালন সহজ হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে ভেড়ার খামারের
৮ থেকে ১০ মাস বয়সী ভেড়া বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায়

হাট বাজারে ভেড়ার চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৮ থেকে ১০ মাস বয়সী ভেড়া বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায়। কুরবানির সময় ভেড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকে।

আব্দুর রহমান ছাড়াও খোট্টাপাড়া গ্রামের আসাদুল, লয়া মিয়া, মরিয়ম বেগম তাদের বাড়িতে ছোট আকারে বাড়িতে ভেড়ার খামার গড়ে তুলেছেন।

গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের রোজিনা বেগম একবছর আগে ৩৩০০ টাকায় ১টি ভেড়া কিনে বাড়িতে লালন পালন শুরু করেন। এখন তার বাড়িতে বাচ্চাসহ তিনটি ভেড়া। ধুনট উপজেলার খোকশাহাটা গ্রামের আব্দুর রশিদও বাড়িতে ভেড়ার খামার গড়ে তুলেছেন। ১৬টি ভেড়া বিক্রি করার পর তার খামারে এখনও ১২টি ভেড়া রয়েছে।

আব্দুর রশিদ বার্তা২৪.কমকে জানান, ভেড়া পালনের জন্য দরকার চারণ ভূমি। ইরি-বরো মৌসুম শুরু হওয়ায় জমি ফাঁকা নাই। এ কারণে ভেড়ার খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে তিনি ১২টি ভেড়া বিক্রি করে দিয়েছেন। ফসলের মাঠ ফাঁকা হলে তার খামারে আবারো ভেড়া ওঠাবেন।

ভেড়া সব ধরনের ঘাস ও লতা পাতা খায়। এ কারণে ভেড়ার জন্য বাড়তি খাবার প্রয়োজন হয় না।
ভেড়া সব ধরনের ঘাস ও লতা পাতা খায়। এ কারণে ভেড়ার জন্য বাড়তি খাবার প্রয়োজন হয় না

এদিকে, ভেড়া পালনকারীদের অভিযোগ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা তাদের খামারের কোনো খোঁজ খবর রাখেন না। তাদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ, নেই কোনো অভিজ্ঞতা। ভেড়ার রোগ বালাই হলে গ্রামের প্রাণী চিকিৎসকরাই তাদের এক মাত্র ভরসা।

বগুড়া জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, দুই বছর আগে একটি প্রকপ্লের আওতায় ভেড়া পালনে আগ্রহী এবং খামারিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। এছাড়াও ভেড়া পালনে আগ্রহী কেউ অফিসে যোগাযোগ করলে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়।’