প্রযুক্তির যুগেও গরু দিয়ে হাল চাষ
কৃষিতে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গরু দিয়ে হাল চাষ এখন বিলুপ্তির পথে। অথচ এক সময় ফসল উৎপাদনের জন্য গরু দিয়ে জমিতে হাল চাষ করা হতো। তবে বিশ্বে ষাটের দশকে সবুজ বিপ্লবের সূচনা ঘটার পর কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু হয়। আর বাংলাদেশের কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় আশির দশক থেকে।
কৃষিতে আধুনিকায়নের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত গরুই ছিল জমিতে হাল দেয়ার একমাত্র অবলম্বন। আশির দশক থেকে নব্বই দশকের শেষ ভাগ পর্যন্ত কৃষি কাজে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টরের ব্যবহার ছিল একেবারেই কম। তখন গরু দিয়ে হাল চাষ চলত বেশির ভাগ এলাকায়। এখন দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে জমিতে গরু দিয়ে হাল চাষ আর চোখেই পড়ে না।
তবে যেসব জমিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না, সেসব জায়গায় এখনো গরু দিয়েই জমিতে হাল চাষ করা হয়। মূলত এভাবেই কোথাও কোথাও টিকে আছে গরু দিয়ে হাল চাষ।
সোমবার (২ মার্চ) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কদমতলী গ্রামে একটি মাঠে গরু দিয়ে হাল চাষ করতে দেখা গেছে। ওই সময় কথা হয় স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালেকের সঙ্গে। তিনি গরু দিয়ে জমি চাষ করছিলেন। হাল চাষের গরুগুলো তার নিজেরই।
তিনি জানান, জমি চাষ করার জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে দুটি গরু কিনেছেন তিনি। ৫ বছর ধরে হালের গরু দিয়ে জমি চাষ করছেন। মাঝে মাঝে প্রতিবেশীরা তার কাছ থেকে গরু নিয়ে জমি চাষ করে।
মূলত সনাতন পদ্ধতির এই হাল চাষ এখন আর তেমন নেই। তাই এই ঐতিহ্যটিও হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যকে যেন মানুষ ভুলে না যায় সে কারণে গত কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাল দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।