খননের উদ্যোগ নেই, বগুড়ার ১৮ নদী এখন মরা খাল
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে বগুড়ার নদীগুলো। নাব্যতা হারিয়ে নদীগুলো এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে চাষ করছেন ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল। আর প্রভাবশালীরা নদীর বুক থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা।
বগুড়া জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট বড় ১৮টি নদী। নদী গুলো হচ্ছে যমুনা,বাঙ্গালী,করতোয়া,নাগর, হলহলিয়া, ইছামতি, মহিষাবান, সুখদহ, ডাকুরিয়া, বেলাই, ভদ্রবতী, চন্দ্রাবতী, গাংনাই, গজারিয়া, মানস, বানিয়াজান, ইরামতি ও ভোলকা।
এ নদীগুলোর মধ্যে যমুনা, বাঙ্গালী এবং করতোয়া অন্যতম। কিন্তু এই প্রধান তিন নদীর অবস্থা এখন সবচেয়ে করুণ। যমুনা এবং বাঙ্গালী নদীতে বিশাল বিশাল চর জেগে নদীর নাব্যতা একেবারেই নেই। আর করতোয়া নদী দখলদারদের কবলে পড়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে অনেক আগে। অন্য নদীগুলো ছোট হলেও প্রত্যেকটি নদী গুরুত্ব বহন করে নিজ নিজ এলাকায়।
এক সময় এসব নদীগুলোতে সারা বছর পানি থাকায় নিয়মিত নৌ-চলাচল হতো। এতে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটতো নৌ পথের মাধ্যমে। এছাড়াও নদীর পানি দিয়ে ফসলের জমিতে সেচ কাজ চলতো। নদীর সুস্বাদু মাছ স্থানীয় জনগণের মাছের চাহিদা মেটাতো। অসংখ্য জেলে পরিবার মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো।
বছরের পর পর বছর নদীর দুই পাড় দখল, অবৈধ বালু উত্তোলন, ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবসহ নানা কারণে নদীগুলো আজ পানি শুন্য। নিরঞ্জন ও বেহুলার খাড়ি নামে দুটি নদী নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেক আগে। এই নদী দুটির কোন চিহ্ন পর্যন্ত নেই। অপর ১৮টি নদীতে বর্ষা মৌসুমে পানি থাকলেও অনু মৌসুমে এলাকাবাসীর অভিশাপে পরিণত হয়। নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে ফেলার কারণে নৌ চলাচলের পথ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদী থেকে আর মাছ পাওয়া যায় না। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে চাষ হয় ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে গত বছর ভদ্রবতী, সুখদহ, বানিয়াজানসহ বেশ কয়টি নদী খনন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নদীগুলো খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।