'আমার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাজগুলোই উল্লেখযোগ্য'



তাশরিক-ই-হাবিব
সাহিদা বেগমের সঙ্গে তাশরিক-ই-হাবিব

সাহিদা বেগমের সঙ্গে তাশরিক-ই-হাবিব

  • Font increase
  • Font Decrease

[সাহিদা বেগম, লেখক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ সরকার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণার জন্য "বাংলা একাডেমি পুরস্কার-২০২০" অর্জনকারী। সাহিত্য সাময়িকী 'পরানকথা' সম্পাদক ড. তাশরিক-ই-হাবিব তার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন, যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ বার্তা২৪.কম পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।]

প্রশ্ন: আপনি বীর  মুক্তিযোদ্ধা। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক - এই পরিচয় এবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অর্জন করল আপনার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণার জন্য "বাংলা একাডেমি পুরস্কার-২০২০" প্রাপ্তির মাধ্যমে। দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি ও গবেষণার পরিণতিতে এই স্বীকৃতি অর্জনকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

উত্তর: আসলে যে কোনো স্বীকৃতি, যে কোনো স্রষ্টা বা যে কিছু সৃষ্টি করেন, তা স্বীকৃতি অর্জন করলে মানুষকে আন্দোলিত করে, আনন্দিত করে। ভালো লাগে। আমারও ভালো লেগেছে। তবে এই স্বীকৃতি শুধু আমি না, আমাকে যারা চেনেন, জানেন, তারাও বলেছেন যে আরো অনেক আগেই আমার পাওয়া উচিত ছিল। কারণ যখন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে তেমন লেখালেখি হচ্ছিল না, তখন আমার প্রথম লেখা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই ‘যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস’ আমি ১৯৮৩ সালে লিখেছি। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় সাহিত্য পত্রিকা ‘সচিত্র সন্ধানী’তে এটি এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। পরে শিশু একডেমির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম বই আমার লেখা "মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো" ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। বইটি তিনটি সংস্করণে ত্রিশ হাজার কপি বিক্রি শেষ হয়েছে। এটির অংশবিশেষ ১৯৯৬ সালে  জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ষষ্ঠ শ্রেণির  পাঠভুক্ত হয়। এরপর থেকে আমার প্রকাশিত লেখাগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাজগুলোই বেশি উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের কাজটিকে আমি ভালোবেসেছি, এই কাজটিই করেছি। বাংলা একাডেমির গবেষণা উপবিভাগ থেকে বিশাল আয়তনের গ্রন্থটি “আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রাসঙ্গিক দরিলপত্র” নামে বেরিয়েছিল ২০০০ সালে। আমার প্রত্যাশা ছিল, তার পরের বছর বা তারও পরের বছর আমি “বাংলা একাডেমি পুরস্কার” পাবো। আমার বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজন বলেছেন, আমার এই পুরস্কার অনেক আগেই পাওয়া উচিত ছিল। আমিও তা-ই মনে করি। তবে দেরিতে হলেও আমি তা পেয়েছি। আমি খুশি, আমি সন্তুষ্ট।

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, প্রসঙ্গ, অনুপ্রেরণা - এই বিষয়গুলোকে  আপনি নিজের লেখালেখি, কর্মকাণ্ড, ভাবনা ও মননে নানাভাবে ধারণ করতে আগ্রহী হয়েছেন। কেন?

উত্তর: আমি  মুক্তিযোদ্ধা, দুই নম্বর সেক্টরের ফ্রন্টফাইটার। নিজে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলাম, আমি যুদ্ধটাকে দেখেছি।

প্রশ্ন :  কোন জেলায়, আপা?

উত্তর: তখন ঢাকা জেলা, কিন্তু পরবর্তীকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা, আড়াইহাজার থানা। দুই নম্বর সেক্টরের অন্তর্গত। সত্তরের নির্বাচনের সময় আমি গাইবান্ধায় ছিলাম। আমি সেই বছর এসএসসি পাস করেছি গাইবান্ধা গার্লস স্কুল থেকে। আমাদের বাসার পেছনে ইসলামিয়া হাইস্কুল। সেই স্কুলে নির্বাচনী কেন্দ্র ছিল। সেখানে যে মহিলারা ভোট দিতে আসতেন, আমি সেই কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর যখন একাত্তর সালের  মার্চের এক তারিখে ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলেন. তখন থেকে সাতই মার্চ পর্যন্ত যে উত্তাল দিনগুলি, তা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। আমি তখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে। এরপর আমি আবার গাইবান্ধা চলে যাই। তার আগে আমি একাত্তরের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। সেই বৃত্তান্ত লিখেছিলাম আমার "যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস" গ্রন্থে। এটি স্মৃতিচারণমূলক বই। আপনি জানতে চেয়েছেন, কেন আমি যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হলাম। আমি এই ঘটনা, প্রসঙ্গগুলো দেখেছি, জেনেছি, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর ট্রেনিং নিয়েছি, মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ করেছি, এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। দেশ স্বাধীন হবার পর আবার যখন শিক্ষাজীবনে ফিরে আসলাম, তখন আমার ভেতরে বরাবরই একটা তাগিদ ছিল। এই যে একটা অন্যরকম সময় এসেছিল বাঙালির জীবনে, তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানের আর বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের জীবনে, মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনে, এই যে আমাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, অর্জন বিসর্জন, এগুলি ইতিহাসের বিষয়। কিন্তু আমরা যখন থাকব না, ধীরে ধীরে এগুলি তখন হয়ত মুছে যাবে। কিন্তু আমরা যারা এগুলি দেখেছি, জেনেছি, তাদেরই এগুলি লিখে যাওয়া উচিৎ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। সেই অনুপ্রেরণা থেকে আমি মুক্তিযুদ্ধেও লেখালেখি শুরু করলাম। আমার লেখালেখি শুরুই হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক লেখা দিয়ে।

প্রশ্ন: এ ব্যাপারে আরেকটু যদি বলেন! কী লিখলেন আপনি? গদ্য, নাকি কবিতা?

উত্তর: আমি ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি করতাম। আমি যখন স্কুলে পড়ি, তখন থেকেই জানি, রংপুর-গাইবান্ধা এলাকা সংস্কৃতিচর্চায় অগ্রগামী। আমাদের স্কুলে যে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হত, সাহিত্য প্রতিযোগিতা হত। সেই সাহিত্য প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতায় আমি অংশ নিতাম। সেখানে আমি প্রথম হতাম। আমি কবিতা লিখে, আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়তাম। আমার হাতে লেখা সেই কবিতাটা এখনো আমার সংগ্রহে আছে। তা সেই কবিতাটি লিখে আমি প্রথম হয়েছিলাম। ওখানে বি ডি হল নামে একটা হল ছিল। টাউন হল নামে একটা পাঠাগার ছিল। সেখানে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের জন্য সাহিত্য প্রতিযোগিতা হত। তখন তো পাকিস্তান। পাকিস্তান দিবসে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন রচনা প্রতিযোগিতা হত।  বেগম রোকেয়া, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও অন্যদের জন্মবার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকীতে রচনা প্রতিযোগিতা হত। এ প্রতিযোগিতায় আমি রচনা লিখে সবসময় যোগ্যতাবলে ও সৌভাগ্যবলে পুরস্কৃত হতাম। এই যে অনুপ্রেরণা, এটাই আমাকে পরবর্তীকালে লেখালেখির দিকে এগিয়ে নিয়ে আসে। এবং যে বিশেষ ব্যাপারটি আমার এখন মনে হয়, একাত্তর সালে দেশ স্বাধীন হবার পর বাহাত্তর সালে যখন আবার ফিরে আসলাম লেখাপড়ার জগতে। বাহাত্তরে বা তিয়াত্তরে ইত্তেফাক পত্রিকার মহিলা পাতায় আমার একটা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। এটি আমি অনেকদিন থেকেই খুঁজছি। এটির একটি সংখ্যা আমার কাছে ছিল। কিন্তু ১৯৯৮ সালের বর্সা মৌসুমে আমি তখন বাসাবোতে আমাদের বাসায়। একতলায় বাসায় বন্যার পানি ঢুকেছিল। বন্যার পানিতে আমার সকল কাগজপত্র ভেসে গিয়েছিল। এ কাগজগুলোও আমার কাছে নেই। এজন্য আমি গিয়েছিলাম বাংলা একাডেমির পত্রিকা বিভাগে, ১৯৭২-১৯৭৩ মালের পত্রিকাগুলো খুঁজে আমার এ লেখা বের করার জন্য।

প্রশ্ন: আপনি একটু আগে বললেন যে আপনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা এবং গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন,  মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এক্ষেত্রে আপনার পরিবার বিষয়টিকে কীভাবে দেখেছে এবং কী ভূমিকা রেখেছে? আপনি যে বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন, সেক্ষেত্রে পরিবারের সমর্থন বা নিষেধাজ্ঞা - বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই।

উত্তর: আমার আব্বা আনোয়ার আলি ভুঞা সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি সবসময়ই খুব উদারপন্থী মানুষ ছিলেন। আরেকটা কথা না বললেই নয়। তখন আমাদের বাসায় সবসময় দুটো পত্রিকা রাখা হত। ‘দৈনিক পাকিন্তান’ ও ‘দৈনিক আজাদ’। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি যে আব্বা পত্রিকাগুলো পড়েন। ১৯৮৫ সালে আমি যখন লইয়ার হয়ে কোর্টে জয়েন করলাম, তখন আমার মনে হলো, সেই যে ছোটবেলায় আব্বা পত্রিকা পড়ে পড়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কার্যবিবরণী, ধারাবিবরণী পড়ে শোনাতেন, সেই মামলাটা আসলে কী ছিল? কেন এই মামলাটা হয়েছিল? আসলে মামলাটার বিষয়বস্তু কী? এসব জানার খুব আগ্রহ হল। তাই ১৯৮৬ সাল থেকে আমি এ মামলার নথিপত্র খোঁজা শুরু করি। মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা চলল। আপনারা জানেন যে এগুলো ইতিহাস। এ মামলার রায় হয়নি, কিন্তু কয়েকটা সাক্ষী হওয়ার পরই আমাদের দেশপ্রেমিক সাংবাদিকরা এ মামলার খবরাখবর প্রতিদিন সংবাদপত্রে উপস্থাপন করেছেন অনুপুঙ্খভাবে।

আপনার কথার সূত্র ধরেই বলি,  বাঙালি ঘরের একটা মেয়ের এ ধরনের কাজে অংশগ্রহণ সহজ ছিল না। তাছাড়া সময়টা বিবেচনায় রাখতে হবে। এখন তো মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হওয়া ও বিভিন্ন সুযোগ প্রাপ্তি এসব অনেক বেড়েছে। কিন্তু তখনকার সময়ে একজন মেয়ে মুক্তিযুদ্ধে আসবে বা ঘরের বাইরে এসে পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে, এটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু আমার আব্বা সবসময়ই খুব সহানুভূতিশীল ও  উদারমনের মানুষ ছিলেন। আমরা ছয় বোন। আব্বা বলতেন যে, আমার যদি ছয়টা ছেলে হত, আমি সবগুলিকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠাতাম। আমার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রশিক্ষণ নেবার ব্যাপারে আব্বা সবসময় উৎসাহ, সাহস, সমর্থন যুগিয়েছেন। আব্বার অনুপ্রেরণায় আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পেরেছি। আমার পরিবার থেকে বাধা আসেনি। তবে আমার মা নিমরাজি ছিলেন, কিছুটা ভয় পেতেন। আর একারণে আমি ১২ মার্চ থেকে ২৫ মার্চের এই সময়ে  আমাদের শহরবাসী মানুষকে উজ্জীবিত করার জন্য ‘অগ্নিস্ফুলিঙ্গেদের ডাক’ নামে একটি দেয়াল পত্রিকা করেছিলাম। এবং পরবর্তীকালে যে যুদ্ধের ট্রেনিং নেয়া, স্বেচ্ছাসেবকের ট্রেনিং নেয়া এসব কারণে আমাদের বাসা মে মাসে মিলিটারি দিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল। মিলিটারি ঘেরাও করে ফেলেছিল আমাদের বাসা। দেশের ভেতরেই আমরা শরণার্থীর জীবন যাপন করেছি এক মাস।

প্রশ্ন: এই সময়ের স্মৃতিকথা কি আপনার ‘যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস নামের স্মৃতিকথামূলক বইটাতে বিধৃত হয়েছে?

উত্তর: হ্যা। আমি এই স্মৃতিকথাগুলোকে উপন্যাসের মতো করে লিখেছি। ‘ইত্তেফাক’ পত্রিকায় আমার এ বইটার একটা রিভিউ বেরিয়েছিল। সেই রিভিউয়ার লিখেছিলেন - এটা কি স্মৃতিকথা? এটা কি ঐতিহাসিক দলিল? এটা কি ইতিহাস? এটা কি উপন্যাস? যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এটার আবেদন অতুলনীয়। কিন্তু ঐ কাগজটাও হারিয়ে ফেলেছি ১৯৯৮ এর বর্ষা মৌসুমে।

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;