‘মনুষ্যত্ব বোধের জায়গাটাকে বড় করে দেখাই হচ্ছে জীবন’



ইজাজ আহমেদ মিলন
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সেলিনা হোসেন। বাংলা ভাষাভাষিই শুধু নয়,বিভিন্ন ভাষার পাঠকের কাছে অতিপ্রিয় একটি নাম। প্রিয় সাহিত্যিক। কালোত্তীর্ণ নানা উপন্যাসে কিংবা গল্প লিখে জয় করেছেন অগণিত পাঠকের হৃদয়। মানুষের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছেন অনেক আগেই। অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেছে তাঁর লেখক জীবনের। কথাশিল্পী সেলিনা হোসেনের হৃদপিণ্ডে বহুকাল ধরেই ঘটে চলছে নিরন্তর রক্তক্ষরণ। কিন্ত এই রক্তক্ষরণও তাঁকে দমাতে পারেনি সৃষ্টিশীলতা থেকে। দ্বিতীয় সন্তান প্রশিক্ষণরত বৈমানিক ফারিয়া লারা মৃত্যু বরণ করলে সেলিনা হোসেন ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু কন্যা হারানোর সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে সৃষ্টিশীলতার উর্বর ভূমিতে চষে সাহিত্যের সোনালি ফসল ফলাতে আবার ফিরে আসেন লেখার টেবিলে। সৃষ্টি করতে থাকেন একের পর এক সাহিত্যকর্ম।

সোমবার (১৪ জুন) পাঠক নন্দিত কথাকার সেলিনা হোসেন ৭৫ বছরে পা রাখবেন। জন্মদিনকে উপলক্ষ করে যাপিত জীবন, সাহিত্য সাধনা ও সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে সেলিনা হোসেনের মুখোমুখি হয়েছিলেন- সাহিত্যিক ও সাংবাদিক ইজাজ আহমেদ মিলন -  

ইজাজ আহমেদ মিলন: আপনার কাছে জীবন মানে আসলে কী?

সেলিনা হোসেন: জীবনের সংজ্ঞা হলো অধিকারের মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার সত্যকে আলিঙ্গন করা। জীবনের সংজ্ঞা মানের অধিকারের সবটুকু অর্জন। আমার অধিকারের জায়গাটা পূর্ণ করার অর্থই হচ্ছে জীবন। মনুষ্যত্ব বোধের জায়গাটাকে বড় করে দেখাই হচ্ছে জীবন। 

ইজাজ আহমেদ মিলন: সুখ-দুঃখ, আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়েই তো বেড়ে উঠেছেন, সাহিত্য কর্ম অব্যাহত রেখেছেন চলার পথটি নিশ্চয়ই মসৃণ ছিল না !

সেলিনা হোসেন: না, আমার চলার পথটা তেমন অমসৃণও ছিল না। জীবনে আমার হৈহুল্লুড় করার বড় একটা জায়গা ছিল। জীবনের চলার পথটি আমার মোটেও বন্ধুর ছিল না। তবে ব্যক্তিগত জীবনে আমার কিছু শোক আছে, দুঃখ আছে। আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে আমার হাতের ওপরে। আস্তে করে তিনি চলে গেলেন। আমি মেনেই নিয়েছিলাম মৃত্যু একটি অনিবার্য সত্য। যাপিত জীবনে কোনো দুঃখবোধই আমি বিশাল করে দেখিনি। মেয়ে হিসেবে আমি কখনো সামাজিক কোনো বিরোধিতার মুখে পড়িনি। পারিবারিক তো নয়-ই। আমার মা বাবা খুবই উদার মনের মানুষ ছিলেন।

ইজাজ আহমেদ মিলন: নানা রকম বাঁধা উপেক্ষা করে পর্যন্ত এসেছেন ক্ষেত্রে আপনার জীবনসঙ্গী বীরযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খানের ভূমিকা সম্পর্কে কিছু বলবেন ?

সেলিনা হোসেন: আমি একজন ভাগ্যবান মানুষ। আমি একজন ভালো মনের মানুষের সঙ্গে জীবনটা কাটালাম। আনোয়ার হোসেন কখনো আমাকে বলেনি রান্না করতে হবে, রান্না করছো না কেন? বরং ও ওল্টো বলতো- বলতো, তুমি লেখার টেবিলেই থাকো। রান্না ঘরে ঢুকে তোমাকে সময় নষ্ট করতে হবে না। সুতরাং আমি একটি স্বাধীন জীবন অতিবাহিত করলাম। আনোয়ারের কাছে অবশ্য এ জন্য আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই।

ইজাজ আহমেদ মিলন: সাহিত্য সাধনার বাইরেও তো আপনার একটা বড় জগৎ আছে!

সেলিনা হোসেন: লেখালেখির বাইরেও আমি নানা রকম সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি। এসব কাজকর্মে অংশ নিয়ে মানুষের মাঝে থেকেছি বলেই অভিজ্ঞতা পেয়েছি। শুধু ঘরের মধ্যে বসে আমি কী করতে পারতাম? সামাজিক দায়িত্ব পালন না করে যদি কেবল লেখালেখি করতাম, মনে হয় পারতামই না। মানুষের মধ্যে না গেলে আমি নিজেকেও বুঝতাম না। আমার শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল হাফিজ বলেছিলেন,  মেয়ে হয়েছ বলে নিজেকে চার দেয়ালে বন্দী রেখো না, বিশ্বটাকে দেখো। খুব যত্ন করে স্যারের কথাটা মনে রেখেছি। লেখালেখির শুরুর পর থেকে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় এক হাতে  লেখালেখি, অন্য হাতে নানা বিষয়-আশয় সামলেছি। শত ঝড় ঝাপটাও লেখালেখি থেকে কখনো নিজেকে বিচ্ছিন্ন করিনি।

ইজাজ আহমেদ মিলন : ইদানিং একটা প্রসঙ্গ তরুণ লেখকদের মধ্যে আলোচিত হয়, সেটা হলো অনুবাদ আমাদের অনেক দাপুটে লেখক লেখা থাকার পরও শুধুমাত্র ভাষার কারণে বিশ্ব পরিমন্ডলে আমাদের লেখাগুলো পৌঁছাতে ব্যর্থ এক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী ভূমিকা নিতে পারে, নিশ্চয়ই...

সেলিনা হোসেন: তরুণ লেখকদের সঙ্গে আমি একমত। বাংলা একাডেমি অনুবাদের ব্যাপারে বড় দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে। কিংবা অনুবাদ কর্মের জন্য অন্য একটি প্রতিষ্ঠান করতে পারে সরকার। তরুণেরা যা ভাবছে তা নিয়ে ওরা সামনে এগিয়ে যাক।

ইজাজ আহমেদ মিলনছোট গল্প, উপন্যাস কিংবা নানা প্রবন্ধ নিবন্ধে  আপনি সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্বপ্ন দেখেছেন লেখার মধ্যে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং নিজে দেখেছেন তার কতটুকু পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন ?

সেলিনা হোসেন: সামাজিকভাবে অবকাঠামোগত দিক থেকে কিছুটা পূরণ হয়েছে। যেমন মেয়েরা এখন অনেকেই স্কুলে যাচ্ছে, চাকুরিতে জায়গা হচ্ছে, তাদের উপার্জনের ক্ষেত্র হয়েছে। সেটা কিন্তু আগে একদমই ছিল না। কিন্তু মূল্যবোধের জায়গা থেকে, সামাজিক অবক্ষয়ের জায়গা থেকে আরো দমে যাচ্ছে বলে মনে হয়। এতো নির্যাতন, এতো অপরাধ, ধর্ষণ হচ্ছে। একটা জনজীবন কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় বারবার সে কথাই বলার চেষ্টা করি। কিন্তু সেটা কি সম্ভব হচ্ছে? প্রতিদিনই ধর্ষণের খবর পাচ্ছি, নির্যাতনের খবর পাচ্ছি। নানা অপরাধের খবর আসছে। জনজীবন মানেই তো শুধু পুরুষ না। জনজীবন মানে নারী শিশু কিংবা পুরুষ সব মিলিয়েই। সব কিছু মিলিয়ে জীবনের সমগ্রতা। এই সমগ্রতার একটা পিছুটান আছে। এটাকে অতিক্রম করতে হবে আমাদের। 

ইজাজ আহমেদ মিলন: ‘ হাঙর নদী গ্রেনেডআপনার তুমুল পাঠক প্রিয় উপন্যাস পরবর্তী সময় উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে লেখার পেছনের গল্পটা শুনতে চাই

সেলিনা হোসেন: আমি ঢাকার এলিফ্যান্ট  রোডে, একটি বাসায় থাকি। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে রেসকোর্সে যাওয়ার সময় আমি কেমন আছি জানতে স্যার এলেন আমার সায়েন্স ল্যাবরেটরি কলোনির বাসায়। তার সাথে ছিলেন আমার খালাতো ভাই আবু ইউসুফ। কর্নেল তাহেরের বড় ভাই ছিলেন। তারা দুজনই আমাকে যুদ্ধের দুটি বাস্তব ঘটনা বললেন। স্যারের কাছ থেকে এক মায়ের গল্প শুনলাম, যিনি দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচানোর জন্য নিজের প্রতিবন্ধী সন্তানকে তুলে দিয়েছিলেন পাকিস্তনি সৈন্যদের হাতে। ঘটনাটি যশোরের কালীগঞ্জের। হাঙর নদী গ্রেনেডের এই ঘটনা বললেন এবং ওই মাকে নিয়ে স্যার আমাকে একটি গল্প লিখতে বললেন। ইউসুফ ভাই বললেন কর্নেল তাহেরের বাম পায়ের হাটুঁর ওপর কিভাবে এসে শেল পড়ে পা টি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায। রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমপর্ণ অনুষ্ঠানটি আমি দেখতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই দুটি ঘটনা শোনার পর আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি। আর যেতে পারিনি। প্রথমে ভেবেছিলাম, ছোটগল্পই লিখব। পরে মনে হলো, না, এই কাহিনীর যে ব্যাপ্তি সেটি উপন্যাসের। হাঙর নদী  গ্রেনেড শুরু করেছি বুড়ির শৈশব থেকে। বারো ভাইবোনের মধ্যে একটি মেয়ে সচেতনভাবে তার বাবাকে বলছে তার নামটি বদলে দিতে। বুড়ির প্রতিবাদের এই জায়গা থেকে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে নিজের সন্তানকে তুলে দেওয়া পর্যন্ত উপন্যাসটির পরিসর। একজন মা ভাবছেন, তাঁর নিজের সন্তানের বিনিময়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচিয়ে দিলে তিনি স্বাধীনতা পাবেন। এই যে উৎসর্গ তিনি করলেন, এমন অসংখ্য উৎসর্গের বিনিময়ে  তো আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বিজয়। ১৯৭৪ সালের উপন্যাসটি প্রথম বের হয়।

ইজাজ আহমেদ মিলন: আগস্টের একরাত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি উপন্যাস বঙ্গবন্ধু আপনার  লেখাকে  কীভাবে  প্রভাবিত করেছে ?

সেলিনা হোসেন: বঙ্গবন্ধু একজন মানুষ যাকে নিয়ে একটা পুরো সাহিত্য জগৎ তৈরি করা যাবে। শুধু আমার  লেখায়  কেন, বঙ্গবন্ধু একটি জাতির জীবনকে প্রভাবিত করেছে।

ইজাজ আহমেদ মিলন: বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো আপনার বৈমানিক কন্যা ফারিয়া লারা সম্পর্কে কিছু জানতে চাই

সেলিনা হোসেন: ১৯৯৮ সালের ২৭  সেপ্টেম্বরের ঘটনা। ফারিয়া লারার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। আকাশে উড়তে উড়তেই এক সময় ওর বিমানটা নেমে এল মাটির দিকে। কিছু  বোঝার আগেই লারা হয়ে গেল অতীতের একটি নাম। দু’জন ছিল এয়ার পারাবতের বিমানটিতে। দুই আসনবিশিষ্ট  সেসনা প্রশিক্ষণ বিমানটি  পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের কাছে এলে ইঞ্জিনে আগুন  লেগে যায়।  সেখানেই জ্বলন্ত বিমানটি আকাশে ডিগবাজি  খেয়ে  নেমে আসে মাটিতে। ফারিয়া লারা শেষবারের মতো  দেখেছিলেন নিঃসীম নীলাকাশ। এরপর ...। আর বলতে পারছি না। চোখ ঝাঁপসা হয়ে আসছে।

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান



কনক জ্যোতি,  কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে ছায়ানট (কলকাতা) এবং লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস যৌথভাবে আয়োজন করে একটি কবিতা সন্ধ্যার। অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতায় অবস্থিত একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট তাপাস্তে - তে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছায়ানট (কলকাতা)-এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক এবং পরিকল্পনা করেন  লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিৎ রায়।

এই বিশেষ দিনে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করা হয় বাংলা এবং স্প্যানিশে। বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতার ভাষায় এক হয়ে যায় বাংলা এবং স্পেন। এক করলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এই আয়োজন।

বাংলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সৌভিক শাসমল, তিস্তা দে, দেবলীনা চৌধুরী এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ ও পাঠ করেন শুভজিৎ রায়। অনুষ্ঠানটি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথভাবে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র বাসভবনে। প্রায় ৫০ জন কবি এবং বাচিক শিল্পী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন কবির কবিতা এই অনুষ্ঠানে শোনা যায়।

;

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;