লকডাউনে নিথর বাংলাবাজার

  • কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লকডাউনে নিথর বাংলাবাজার। ছবি: মোহাম্মাদ মুশফিকউল্লাহ তন্ময়

লকডাউনে নিথর বাংলাবাজার। ছবি: মোহাম্মাদ মুশফিকউল্লাহ তন্ময়

'আমরা তো শুধু মেলার জন্য বই করিনা, সারা বছরই প্রকাশনার কাজ করি। অনেক বইয়ের পাণ্ডুলিপি বাছাই করা, সম্পাদনা, প্রুফ, প্রি-প্রেস, বাইন্ডিং ইত্যাদি অনেক কিছু বছর জুড়েই চলে। করোনায় মেলার মতো বাংলাবাজারও নিথর। সর্বত্র ভাঙ্গনের সুর', বললেন 'স্টুডেন্ট ওয়েজ' ও 'বর্ষা দুপুর' প্রকাশনীর পরিচালক মোহাম্মাদ মুশফিকউল্লাহ তন্ময়।

লকডাউনে কেমন আছে বাংলা প্রকাশনা শিল্পের নাভিমূল বাংলাবাজার, জানতে চেয়েছিলাম তার কাছে। তিনি জানালেন, শুনশান, নিথর বাংলাবাজারের কথা। বললেন, জন্ম থেকেই বাংলাবাজারের মানুষ আমি। ১৯৫০ সালে আমার পিতামহ মোহাম্মাদ হাবিবউল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেন দেশের প্রাচীনতম অগ্রণী প্রকাশনা 'স্টুডেন্ট ওয়েজ'। তারপর আমার বাবা মোহাম্মাদ লিয়াকতউল্লাহ প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন। এখন তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি রূপে আমি কাজকর্ম সামলাচ্ছি। কিন্তু কখনওই এতো কর্মহীন বইপাড়া চোখে পড়েনি, যা দেখছি করোনাকালে।

বিজ্ঞাপন

মোহাম্মাদ মুশফিকউল্লাহ তন্ময় বলেন, অন্যান্য বছর এমন সময় স্কুল-কলেজের বই ছাপার ধুম চলতো। আসলে বাংলাবাজার পুরো বছরে ঈদের দুই-চারদিনের ছুটি ছাড়া বিরামহীনভাবে কাজ করে। হাজার খানেক দোকান আর তিন শতাধিক প্রকাশকের সূত্রে কম্পোজ, ছাপা, বাইন্ডিং ইত্যাদি মিলিয়ে হাজার হাজার মানুষের কর্মচঞ্চল্যে সর্বদা মুখরিত বাংলাবাজার দেড় বছর ধরে চলমান করোনার থাবায় প্রায়-মুখ থুবড়ে পড়েছে।

তিনি জানান, বাংলাবাজার সংশ্লিষ্ট ছোট ছোট পেশার মানুষেরা তীব্র অর্থ কষ্টে পড়েছেন। অনেকে পেশা বদল করেছেন। করোনার প্রকোপের কারণে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন।

মোহাম্মাদ মুশফিকউল্লাহ তন্ময় বলেন, পর পর দুটি বইমেলা করোনার কারণে সীমিত আকারে হয়েছে। প্রকাশকদের বিনিয়োগের টাকা আটকে আছে। প্রকাশনা শিল্পে একটি সঙ্কটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের তরফে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা অতি জরুরি। কারণ, আমাদের সকলের অভীষ্ট 'জ্ঞানভিত্তিক সমাজ' গঠনে লেখক-গবেষকদের পাশাপাশি বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশক লাগবে এবং প্রকাশনা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।