বিদ্যাসাগর কেন জরুরি: ড. মাহফুজ পারভেজ



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও লেখক ড. মাহফুজ পারভেজ

‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও লেখক ড. মাহফুজ পারভেজ

  • Font increase
  • Font Decrease

২৯ জুলাই তাঁর প্রয়াণ দিবস। ১৩০ বছর আগে ১৮৯১ সালে তিনি লোকান্তরিত হন। ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ছিল তাঁর দ্বিশত জনমবার্ষিকী। হাজার বছরের বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যে টানা দুইটি শতাব্দী ধরে সামাজিক-সাংস্কৃতিক চিন্তায় ও মননচর্চায় তাঁর মতো সগৌরবে বিরাজমান ব্যক্তিত্ব বিরল। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই অত্যল্প কীর্তিমান বাঙালির একজন, যিনি রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত বঙ্গসমাজে দ্বিশত জন্মবর্ষেও সমুজ্জ্বল এবং ‘বিবিসি’ পরিচালিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় অষ্টম স্থানের অধিকারী। বিদ্যাসাগরকে কেবল বিদ্যা ও দয়ার আধার বলে স্বীকৃতি দেওয়াকে রবীন্দ্রনাথ যথেষ্ট মনে করেন নি। তাঁর মতে বিদ্যাসাগরের ‘প্রধান গৌরব তাঁর অজেয় পৌরুষ ও মনুষ্যত্ব’।

২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে-সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারির কারণে এই মনীষীর দ্বিশত জন্মবর্ষের আনুষ্ঠানিক উদযাপন বিঘ্নিত হলেও তিনি ছিলেন স্মরণের আলোকধারায় স্রোত। বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্মের নির্যাস উপস্থাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ চেষ্টা করেছেন, কেন তিনি অদ্যাবধি আলোচিত ও প্রাসঙ্গিক, তা চিত্রিত করতে। সংক্ষিপ্ত পরিসরে বিদ্যাসাগরের কর্ম ও জীবনালেখ্য এবং প্রাসঙ্গিক-সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণ-পর্যালোচনার মাধ্যমে তিনি ‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থে দ্বিশত জন্মবর্ষের পটভূমিতে তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন এবং দ্বিশত জন্মবর্ষেও কেন তিনি বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর চিন্তা, কর্ম, দৃষ্টি ও মননচর্চাকে এগিয়ে নিতে সহায়ক ও প্রাসঙ্গিক, সে সত্যটিই গবেষণার মাধ্যমে অনুসন্ধান করেছেন।

বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে ‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থের আলোকে ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অনন্য, দৃশ্যমান, কর্ম, কৃতিত্ব, বৈশিষ্ট্য ও ব্যক্তিত্ব সত্যিকার অর্থেই বহুমাত্রিক এবং সুদূরপ্রসারী। জন্মের ২০০ বছর পরেও সর্বস্তরে স্মরণীয় হওয়ার গৌরব লক্ষ-কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র এক-দুজনের ক্ষেত্রেই সম্ভব। বহুজনের নাম লোকশ্রুতি এবং ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকলেও মানুষ প্রকৃত অর্থে মনে রেখেছে কয়জনকে? খোদ রবীন্দ্রনাথের মতে, ‘একজনই’। তাঁর নাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। জন্ম ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। প্রয়াণ ২৯ জুলাই ১৮৯১ সাল। রবীন্দ্রনাথ খুব বেশি মানুষের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন নি। তবে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আবেগের সঙ্গে বিদ্যাসাগর চরিত ও কর্মসমূহের মূল্যায়নে লিপ্ত হয়েছিলেন জীবনস্মৃতি গ্রন্থের ‘শিক্ষারম্ভ’ ও ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায় দুটিতে। শৈশব-বাল্যের স্মৃতিতে বিদ্যাসাগরকে বর্ণনা করেছেন শিশু-মন আবিষ্ট করা, শিশু-পাঠ রচয়িতা অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব রূপে। পরবর্তীতে ‘বিদ্যাসাগর চরিত’ রচনায় তিনি উল্লেখ করেছেন: ‘বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করিয়া দেখিলে এই কথাটি বারবার মনে উদয় হয়ে যে, তিনি যে বাঙালি বড়লোক ছিলেন তাহা নহে, তিনি যে রীতিমত হিন্দু ছিলেন তাহাও নহে, তিনি তাহা অপেক্ষাও অনেক বেশি বড়ো ছিলেন, তিনি যথার্থ মানুষ ছিলেন।’

ড. মাহফুজ পারভেজ জানান যে, বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আরো অনেক বিশ্লেষণাত্ম উক্তি ঐতিহাসিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্মের আলোকিত দিকগুলোর পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিত্বের মূল প্রবণতা শনাক্ত করেছেন তিনি: ‘বিদ্যাসাগর স্বভাবতই সম্পূর্ণ স্বাধীনতন্ত্রের লোক ছিলেন।’ রবীন্দ্রনাথ দ্বিধাহীন চিত্তে বলেছেন, ‘বিদ্যাসাগর এই বঙ্গদেশে একক ছিলেন।’ দুঃখ ভারাক্রান্তভাবে রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করেছেন, তাঁর (বিদ্যাসাগর) সমযোগ্য সহযোগীর অভাবে আমৃত্যুকাল নির্বাসন ভোগ করিয়া গিয়াছেন। তিনি সুখী ছিলেন না।...প্রতিদিন দেখিয়াছেন, আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না। যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না ও যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না।...এই দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক ও তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্কার ছিল।’

‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থের লেখক ড. মাহফুজ পারভেজ মনে করেন, বিদ্যাসাগরকে কেবল বিদ্যা ও দয়ার আধার বলে স্বীকৃতি দেওয়াকে রবীন্দ্রনাথ যথেষ্ট মনে করেন নি। তাঁর (রবীন্দ্রনাথ) মতে বিদ্যাসাগরের ‘প্রধান গৌরব তাঁর অজেয় পৌরুষ ও মনুষ্যত্ব’। রবীন্দ্রনাথ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ আন্দোলন, বাল্যবিবাহ বন্ধ, পণপ্রথা রোধের সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়েছিল সাহিত্যে, সামাজিক ও শিক্ষা আন্দোলনে। পাশাপাশি এটি গুরুত্ব পেয়েছিল রামমোহন-পরবর্তী সমাজ অগ্রগতির জন্য সূচিত নারী আন্দোলনেও। রবীন্দ্রনাথ প্রত্যয় ও দৃঢ়তার সঙ্গে ‘বিশিষ্টতম বাঙালি মনীষা’ রূপে বিদ্যাসাগরের যে মূল্যায়ন, বিশ্লেষণ ও বর্ণনা দিয়েছেন, তা কালোত্তীর্ণ, দ্বিশত জন্মবর্ষেও দেদীপ্যমান এবং অখ- বাঙালির চিন্তা, কর্ম, দৃষ্টি ও মননচর্চাকে এগিয়ে নিতে সহায়ক ও প্রাসঙ্গিক।      

ড. মাহফুজ পারভেজের বিশ্লেষণে, নিজের অশনবসনেও বিদ্যাসাগরের একটি দৃঢ়তাযুক্ত অটল সরলতা ছিল। এবং সেই সরলতার মধ্যেও ইস্পাতকঠিন মনোবলের অস্তিত্ব ছিল। নিজের তিলমাত্র সম্মান রক্ষার প্রতিও তাঁর লেশমাত্র শৈথিল্য ছিল না। ঔপনিবেশিক কুসংস্কৃতিতে প্রবল সাহেবিয়ানা ও নবাবি দেখিয়ে সম্মান লাভের যে ঠুনকো প্রবণতা ইংরেজ কোম্পানি শাসিত পরাধীন কলকাতার নব্য-বনেদি অভিজাতদের মধ্যে প্রচলিত ছিল, বিদ্যাসাগর আচারে, আচরণে ও পরিচ্ছদে তা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেন। বিদ্যাসাগরের ছবির পাশে তৎকালীন কৃতিদের ছবি রেখে তুলনামূলক পর্যালোচনা করা হলেই বিষয়টি স্পষ্টতর হয়। রবীন্দ্রনাথ যে বিষয়টিকে আরো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, ‘ভূষণহীন সারল্যই তাঁহার রাজভূষণ ছিল’।

দৃষ্টান্ত স্বরূপ ড. মাহফুজ পারভেজ উল্লেখ করেন, বিদ্যাসাগর যখন কলিকাতায় (তখন কলিকাতা বলা হতো, কলকাতা নয়) অধ্যয়ন করছিলেন, তখন তাঁর মা চরকায় সুতা কেটে পুত্রের বস্ত্র প্রস্তুত করে পাঠাতেন, যে মোটা কাপড় তিনি মাতৃস্নেমণ্ডিত গৌরবে চিরকাল সর্বাঙ্গে ধারণ করেছেন। বিদ্যাসাগরকে তৎকালীন লেফটেনেন্ট গভর্নর হ্যালিডে সাহেব রাজসাক্ষাতে উপযুক্ত পোষাক পরিধান করে আসার জন্য বলেছিলেন। শুধু সেই একবার তিনি চোগা-চাপকান পরিধান করে সাহেবের সঙ্গে দেখা করলেও রাজ-কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন, ‘আমাকে যদি এই বেশে আসিতে হয়, তবে এখানে আর আমি আসিতে পারিব না।’ ফলে লেফটেনেন্ট গভর্নর বা ছোটলাট বিদ্যাসাগরকে তাঁর অভ্যস্ত বেশে আসার জন্য বিশেষ অনুমতি দিতে বাধ্য হন। মোটা কাপড়, চটিজুতা, চাদর পরিধান করে তিনি রাজগৃহ থেকে দরিদ্র্যের বাড়িতে অবাধে ও সম্মানের সঙ্গে যাতায়াত করতেন। ঔপনিবেশিক আমলের তথাকথিক অনেক বিখ্যাতই যে সাহস, আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচিতি দেখাতে পারেন নি। বিদ্যাসাগরের সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য ছিল এই যে, তিনি নিজের মর্যাদা, সম্মান ও পরিচিতি রক্ষা করেই ইংরেজদের সঙ্গে মিশেছিলেন। তিনি মিশেছিলেন দিতে, নিতে নয়। ভাষা ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মতৎপরতায় ইংরেজ শাসকগণ তাঁর সাহায্য ও সহযোগিতার মুখাপেক্ষী ছিল। তিনি আত্মসম্মানের সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু অন্যরা লেজুড় ও অনুকরণের মাধ্যমে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে মিশেছিলেন এবং নতজানু হয়ে ইংরেজ শাসকের কাছ থেকে দয়া ভিক্ষা এবং বস্তুগত ও আর্থিক সুবিধা লাভের বাঞ্ছা করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের সঙ্গে আর সকলের  ‘পার্থক্য ছিল মেরুদণ্ডের’। তাঁর সবল ও সুদৃঢ় মেরুদণ্ড ছিল। আত্মসম্মান ছিল। অন্যদের এসব ছিল না। 

গবেষক ড. মাহফুজ পারভেজ মনে করেন, দুঃখজনক বিষয় হলো এই যে, বিদ্যাসাগর তৎকালীন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তির আঘাত ও সমালোচনার কবল থেকে রক্ষা পান নি; এখনো তিনি জন্মের দুইশত বছর পরেও ধর্মীয় মৌলবাদীদের হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। খোদ কলকাতার বুকে বিদ্যাসাগর কলেজ প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ফেলার ঘটনায় এই নির্মম সত্যটিই উন্মোচিত হয়। তবে, দ্বিশত বর্ষেও আঘাত-প্রাপ্ত-বিদ্যাসাগর বৃহত্তর বাংলার ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, কূপমণ্ডুকতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রয়োজনেই প্রাসঙ্গিক ব্যক্তিত্ব ও অপরিহার্য্য চরিত্র। 

প্রফেসর ড.মাহফুজ পারভেজ রচিত ‘দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর’ গ্রন্থের প্রকাশক ঐতিহ্যবাহী সংস্থা স্টুডেন্ট ওয়েজ। অনলাআনে বইটি বিশেষ ছাড়ে রকমারি.কম থেকে পাওয়া যাচ্ছে:

https://www.rokomari.com/book/215155/deshto-jonmoborshe-biddasagor 

 

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;