শর্টলিস্ট নিয়ে জল্পনা-কল্পনা, ৩ নভেম্বর ‘ম্যান বুকার‘ পুরস্কার ঘোষণা

  • সাঈদ চৌধুরী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

২০২১ সালের বুকার প্রাইজ় নিয়ে বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। নোবেল পুরস্কারের পরই ’বুকার প্রাইজ ফর ফিকশন’ সবচেয়ে আলোচিত এবং সম্মানীত। ফলাফল ঘোষণার ক্ষেত্রে যথার্থ যাচাই-বাছাই এবং অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।

বৃটেন সহ দুনিয়াব্যাপী লেখক-পাঠকরা কারো কারো নাম প্রস্তাব করে থাকেন। জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ সমূহ থেকে প্রথমে লংলিস্ট এবং পরে শর্টলিস্ট হয়। সবশেষে নির্বাচকদের বিচারে চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম ঘোষিত হয়। আগামী ৩ নভেম্বর জানা যাবে কে হলেন বুকারজয়ী সৌভাগ্যবান।

বিজ্ঞাপন

প্রতি বছরের মত এবারো কর্তৃপক্ষ অসংখ্য বই থেকে বাছাই করে একটি তালিকা তৈরী করেন। এবার ১৩টি বই নিয়ে ‘লংলিস্ট’ বা দীর্ঘ তালিকা হয়। তারা আরো অনেক যাচাই-বাছাই শেষে এখন শর্টলিস্ট বা সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছেন। ছ’টি উপন্যাস আছে এই শর্টলিস্টে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে ঘোষিত লিস্ট মোতাবেক কাঙ্ক্ষিত প্রাইজের জন্য লড়াই হয় ১৩ জন লেখকের ১৩টি বই। এরমধ্যে ২০১৭ সালে সাহিত্য নোবেল এবং ১৯৮৯ সালে বুকার পুরস্কার বিজয়ী জাপানি লেখক স্যার কাজুও ইশিগুরো ছিলেন দীর্ঘ তালিকায়। তার ‘ক্লারা এন্ড দ্য সান’ বইটি ছিল বিশেষ বিবেচনায়। ২০১৯ সালে পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী আমেরিকান লেখক রিচার্ড পাওয়ার্স-এর ‘বিউইল্ডারমেন্ট’ রয়েছে পুরস্কারের তালিকায়। তিনি ১৯৯১ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা বই পুরস্কার অর্জন করেন।

বিজ্ঞাপন

 ব্রিটিশ-ভারতীয় লেখক সঞ্জীব সাহোতার ‘চায়না রুম’ দীর্ঘ তালিকায় জায়গা করে নেয়। তার ‘দ্য ইয়ার অব দ্য রানআওয়েজ’ ২০১৫ সালের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল। কানাডীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক র্যাচেল কাস্কের ‘সেকেন্ড প্লেস’ এবারের দীর্ঘ তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০০৫ সালে তার ‘ইন দ্য ফোল্ড’ এই তালিকায় ছিল।

শ্রীলংকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট তামিল ঔপন্যাসিক অনুক অরুদপরগসম-এর ‘আ প্যাসেজ নর্থ’ বইটি তালিকাভুক্ত হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশীয় সাহিত্যের ডিএসসি পুরস্কার জিতেছেন। ব্রিটিশ-সোমালি লেখক নাদিফা মোহামেদের ‘দ্য ফরচুনম্যান’, আমেরিকান ঔপন্যাসিক ও কবি প্যাট্রিকা লকউডের ‘নো ওয়ান ইজ টকিং অ্যাবাউট দিস’, মার্কিন লেখক ম্যাগি শিপস্টিডের ‘গ্রেট সার্কেল’, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেমন গ্যালগাট এর ‘দ্য প্রমিস’ তালিকায় আছে। ২০০৩ সালে তার ‘দ্য গুড ডক্টর’ এবং ২০১০ সালে ‘ইন এ স্ট্র্যাঞ্জ রুম’ সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল। 

কানাডীয় উপন্যাসিক ম্যারি লসনের ‘দ্য টাউন কল্ড সোলাস’ এবার দীর্ঘ তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০০৬ সালে তার ‘দ্য আদার সাইড অব দ্য ব্রিজ’ দীর্ঘ তালিকায় ছিল। এই তালিকায় আরো আছে মার্কিন লেখক নাথান হ্যারিসের ‘দ্য সুইটনেস অব ওয়াটার’, দক্ষিণ আফ্রিকার লেখক ক্যারেন জ্যানিংসের ‘অ্যান আইল্যান্ড’, এবং ব্রিটিশ লেখক ফ্রান্সিস স্পাফর্ডের ‘লাইট পার্পেচুয়াল’।

অবশেষে ছ’টি উপন্যাস শর্টলিস্ট হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সাহিত্যিক ড্যামন গ্যালগাট-এর দ্য প্রমিস, আমেরিকান ঔপন্যাসিক ও কবি প্যাট্রিসিয়া লকউড-এর নো ওয়ান ইজ় টকিং আবাউট দিস, আমেরিকান ঔপন্যাসিক রিচার্ড পাওয়ার্স-এর বিউইল্ডারমেন্ট, শ্রীলঙ্কার অনুক অরূদপ্রগসম-এর আ প্যাসেজ নর্থ, ব্রিটিশ-সোমালি সাহিত্যিক নাদিফা মোহামেদ-এর দ্য ফরচুন মেন এবং আমেরিকান ঔপন্যাসিক ম্যাগি শিপস্টেড-এর গ্রেট সার্কেল।

এবছরের বিচারক কমিটির প্রধান হয়েছেন ইতিহাসবিদ মায়া জেসনফ। বুকার বিজয়ী পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশী হিসেবে প্রায় ৫৯ লাখ টাকা।

‘ম্যান বুকার‘ বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম মর্যাদা সম্পন্ন পুরস্কার। বিগত এক বছরে প্রকাশিত পূর্ণ-দৈর্ঘ্যের উপন্যাস থেকে বাছাই করা শ্রেষ্ঠটি এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এক সময় শুধুমাত্র কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশ এবং আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ২০০৫ সাল থেকে এই পুরস্কার আন্তর্জাতিক ভাবে বিশ্বময় সম্প্রসারিত হয়েছে। 

৫২তম বুকার পুরস্কার বিজয়ীর নাম ১৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখে ঘোষণা হল। সেরা হাসি হাসলেন স্কটিশ-আমেরিকান লেখক ডগলাস স্টুয়ার্ট। বিশ্ব সাহিত্যে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হল। তার ‘ শুগি বাইন‘ সেরা হিসেবে বেছে নিলেন বুকার পুরস্কার কমিটির বিচারক মন্ডলী। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তিনি এই মর্যাদা সম্পন্ন পুরস্কার পেলেন। বিজয়ী ঘোষণার পর তার হাতে স্মারক তুলে দেন প্রধান বিচারক মার্গারেট বাসবি। প্রদান করা হয় ৫০ হাজার ইউরোর অর্থমূল্য। বারাক ওবামা, মার্গারেট অ্যাটউড সহ বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা শুভেচ্ছা পাঠান স্টুয়ার্টের উদ্দেশ্যে।

২০২০ বুকার পুরস্কারের মনোনয়নের তালিকায় ছিল- দ্য নিউ ওয়াইল্ডারনেসের জন্যে ডায়ান কুক, এই মরনোয়ল বডির জন্যে সিৎসি ডাঙ্গারেমবাগা, বার্ন সুগার‘র জন্যে অবনী দোশি, হু দে ওয়াজ‘র জন্য গ্যাব্রিয়েল ক্রাউজে, মিরর এবং দ্য লাইট‘র জন্যে হিলারি মন্টেল, অ্যাপিরোগন‘র জন্য কলম ম্যাকক্যান, শ্যাডো কিং এর জন্যে মাজা মেনগিস্টের, সাচ আ ফান এজ‘র জন্যে কাইলি রেইড, রিয়েল লাইফ‘র জন্যে ব্র্যান্ডন টেইলার, রেডহেড বাই দ্য সাইড অফ দ্য রোড‘র জন্যে অ্যানি টেলার, শুগি বাইন‘র জন্যে ডগলাস স্টুয়ার্ট, লাভ অ্যান্ড আদার থট এক্সপেরিমেন্ট‘র জন্যে সোফি ওয়ার্ড, হাউ মাচ অফ দিজ হিলস ইস গোল্ড‘র জন্যে সি পাম জাং।

পুরস্কার জেতার পর স্টুয়ার্ট মুগ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। নিজের মাকে প্রাণময় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, উপন্যাসের পরতে পরতে মা সম্পর্কে আমি পরিষ্কার করে বলেছি। তাকে ছাড়া এখানে আসতে পারতাম না। আমার কাজ কোন ভাবেই এখানে পৌঁছাত না। মাত্র ১৬ বছর বয়সে মাতৃ বিচ্ছেদের যন্ত্রনাকে অনুভব করেছিলেন স্টুয়ার্ট। অকালে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়া মাকেই নিজের লেখা প্রথম উপন্যাস উৎসর্গ করেছেন এই স্কটিশ লেখক। মা-ই ছিলেন তার সব থেকে কাছের মানুষ। মায়ের মাদকাসক্তি বেড়েই চলেছিল দিনের পর দিন। বার বার বুঝিয়েও লাভ হয়নি কোনো। ভেতর ভেতর অ্যালকোহল তাকে নিশ্চুপেই ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। ‘শুগি বাইন‘ উপন্যাসে ওঠে এসেছে তার বেড়ে ওঠা আর নিজের জীবনের অসংখ্য স্মৃতি। মিশে আছে মায়ের মৃত্যু যন্ত্রণা, তার মূল্যবোধ, সামাজিক বেড়াজাল, উত্থান-পতনের কথা। রয়েছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক হৃদয়ভেদী আখ্যান। 

গ্লাসগোতে বেড়ে ওঠা স্টুয়ার্ট তার জন্মভূমি স্কটল্যান্ডবাসীকেও ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে গ্লাসগোর অধিবাসীদের। তিনি বলেন, গ্লাসগোবাসী মানুষের সহানুভূতি, রসবোধ, প্রেম ও সংগ্রাম এই বইয়ে মূল কেন্দ্রবিন্দু। গ্লাসগো স্কটল্যান্ডের বৃহত্তম এবং যুক্তরাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। এটি গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের উত্তর দিকের এক তৃতীয়াংশে অবস্থিত। এর দক্ষিণ-পূর্বে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ৯৬ মাইল দীর্ঘ সীমান্ত, উত্তর ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তর-পূর্বে উত্তর সাগর এবং দক্ষিণে আইরিশ সাগর অবস্থিত। মূল ভূখন্ড ছাড়াও দেশটির অনেক দ্বীপ রয়েছে। এক সময়কার বিশ্বের নেতৃস্থানীয় শিল্প শহর ছিল। স্কটিশ পানি সীমা উত্তর আটলান্টিক এবং উত্তর সাগর বেষ্টিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বৃহত্তম তেল মজুদ এরিয়া। এজন্যই গ্লাসগো ও অ্যাবরদিনকে স্কটল্যান্ড তৃতীয় বৃহত্তম শহর এবং ইউরোপের তেল রাজধানী বলা হয়।

ম্যান বুকার বিজয়ী ডগলাস স্টুয়ার্ট ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে এখন নিউইয়র্কে বসবাস করেন। গত দুই দশকে তিনি কাজ করেছেন কেলভিন ক্লেইন, বানানা রিপাবলিক, জ্যাক স্পেড প্রভৃতি বহুজাতিক সংস্থায়। রয়্যাল আর্ট কলেজ থেকে স্নাতক করার পরই তিনি পাড়ি দিয়ে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২৪ বছর বয়স থেকেই থাকেন নিউইয়র্ক শহর। এ বছরেই তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘লক অ’ শেষ করেছেন, যার পটভূমি গ্লাসগো ঘিরেই গড়ে উঠেছে। 

এ পর্যন্ত ম্যান বুকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বিশ্বখ্যাত অনেক লেখক। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাজ্যের পি. এইচ. নিউবি - সামথিং টু আনসার ফর উপন্যাস, ১৯৭০ সালে যুক্তরাজ্যের বার্নিস রুবেনস- দ্য ইলেক্টেড মেম্বার উপন্যাস, ১৯৭১ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ভি এস নাইপল- ইন অ্যা ফ্রি স্টেট ছোটগল্প, ১৯৭২ সালে যুক্তরাজ্যের জন বার্গার- জি উপন্যাস, ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য আয়ারল্যান্ডের জেমস গর্ডন ফারেল- দ্য সেইজ অফ কৃষ্ণপুর উপন্যাস, ১৯৭৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার নাডিন গর্ডিমার- দ্য কনজারভেশনিস্ট উপন্যাস ও যুক্তরাজ্যের স্ট্যানলি মিডলটন- হলিডে উপন্যাস, ১৯৭৫ সালে যুক্তরাজ্যের রুথ প্রয়ার ইয়াবভালা- হিট অ্যান্ড ডাস্ট  উপন্যাস , ১৯৭৬ সালে যুক্তরাজ্যের  ডেভিড স্টোরি- স্যাভাইল উপন্যাস,  ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্যের পল স্কট- স্টেয়িং অন উপন্যাস, ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যের আইরিশ মুরডক- দ্য সী, দ্য সী উপন্যাস।

১৯৭৯ সালে যুক্তরাজ্যের পেনেলোপে ফিটজেরাল্ড- অফশোর দর্শনতাত্ত্বিক উপন্যাস, ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের উইলিয়াম গোল্ডিং- রায়টস অফ পেসেজ উপন্যাস, ১৯৮১ সালে ভারতের সালমান রুশদি- মিডনাইট চিলড্রেন উপন্যাস, ১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়ার  থমাস কেনিলি- শিন্ডলার্স আর্ক জীবনী উপন্যাস,  ১৯৮৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার  জন ম্যাক্সওয়েল কুতসি লাইফ অ্যান্ড টাইম অফ মাইকেল কে উপন্যাস, ১৯৮৪ সালে যুক্তরাজ্যের আনিতা ব্রুকনার- হোটেল ডু লাক উপন্যাস, ১৯৮৫ সালে নিউজিল্যান্ডের  কেরি হুম- দ্য বোন পিপল রহস্য উপন্যাস, ১৯৮৬  কিংস্লে অ্যামিস- দ্য ওল্ড ডেভিলস্ কমিক উপন্যাস, ১৯৮৭ সালে যুক্তরাজ্যের পেনেলোপে লাইভলি- মুন টাইগার উপন্যাস, ১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার  পিটার কেরি- অস্কার অ্যান্ড লুসিন্ডা ঐতিহাসিক উপন্যাস।

১৯৮৯ সালে যুক্তরাজ্যের জাপানী কাজুও ইশিগুরো- দ্য রিমেইনস অফ দ্য ডে ঐতিহাসিক উপন্যাস, ১৯৯০ সালে যুক্তরাজ্যের এ. এস. বায়াত- পজেসন: অ্যা রোমান্স ঐতিহাসিক উপন্যাস, ১৯৯১ সালে নাইজেরিয়ান বেন ওকরি- দ্য ফ্যামিস্ড রোড উপন্যাস, ১৯৯২ সালে কানাডার মাইকেল ওন্ডাৎজি- দ্য ইংলিশ পেশেন্ট ও  যুক্তরাজ্যের        ব্যারি উন্সওর্থ- স্যাক্রেড হাঙ্গার ঐতিহাসিক উপন্যাস, ১৯৯৩ সালে যুক্তরাজ্য আয়ারল্যান্ডের রডি ডয়েল- প্যাডি ক্লার্ক হা হা হা উপন্যাস,  ১৯৯৪ সালে যুক্তরাজ্যের জেমস কেলম্যান- হাউ লেট ইট ওয়াজ, হাউ লেট উপন্যাস, ১৯৯৫ সালে যুক্তরাজ্যের প্যাট বার্কার- দ্য গোস্ট রোড যুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস, ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের গ্রাহাম সুইফট লাস্ট অর্ডারস্ উপন্যাস, ১৯৯৭ সালে ভারতের অরুন্ধতী রায়- দ্য গড অফ স্মল থিংস উপন্যাস, ১৯৯৮ সালে যুক্তরাজ্যের ইয়ান ম্যাক্ইউয়ান- অ্যামস্টারডাম উপন্যাস।

১৯৯৯ সালে  দক্ষিণ আফ্রিকার জন ম্যাক্সওয়েল কুতসি- ডিসগ্রেস উপন্যাস, ২০০০ সালে কানাডার মার্গারেট অ্যাটউড- দ্য ব্লাইন্ড অ্যাসাসিন ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০০১ সালে যুক্তরাজ্যের পিটার কেরি- ট্রু হিস্ট্রি অফ দ্য কেলি গ্যাং ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০০২ সালে কানাডার ইয়ান মার্টেল- লাইফ অফ পাই রোমাঞ্চকর উপন্যাস, ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার ডিবিসি পিঁয়ের- ভার্নন গড লিটল ব্ল্যাক কমেডি, ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের অ্যালান হলিংঘার্স্ট- দ্য লাইন অফ বিউটি ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য আয়ারল্যান্ডের জন ব্যানভিল- দ্য সী উপন্যাস, ২০০৬ সালে ভারতের কিরণ দেশাই- দ্য ইনহেরিটেন্স অফ লস উপন্যাস, ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্য আয়ারল্যান্ডের অ্যান এনরাইট- দ্য গেদারিং উপন্যাস, ২০০৮ সালে ভারতের অরবিন্দ আদিগা- দ্য হোয়াইট টাইগার উপন্যাস।

২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের হিলারি ম্যান্টেল- উলফ হল ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের হাওয়ার্ড জ্যাকবসন- দ্য ফিঙ্কলার কোশ্চেন উপন্যাস, ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের জুলিয়ান বার্নস- দ্য সেন্স অফ অ্যান এন্ডিং উপন্যাস, ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের হিলারি ম্যান্টেল- ব্রিং আপ দ্য বডিজ উপন্যাস, ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের এলিয়ানর ক্যাটন- দ্য লুমিনারিজ উপন্যাস, ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার রিচার্ড ফ্লানাগান- দ্য ন্যারো রোড টু দ্য ডিপ নর্থ উপন্যাস, ২০১৫ সালে জ্যামাইকার মারলন জেমস- অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অফ সেভেন কিলিং উপন্যাস, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পল বিটি- দ্য সেলআউট ব্যঙ্গধর্মী উপন্যাস, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ সান্ডার্স- লিংকন ইন দ্য বার্ডো ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের অ্যানা বার্নস- মিল্কম্যান উপন্যাস, ২০১৯ সালে কানাডার মার্গারেট অ্যাটউড- দ্য টেস্টামেন্টস উপন্যাস ও যুক্তরাজ্যের বার্নার্ডাইন এভারিস্টো- গার্ল, উইমেন, আদার উপন্যাস।

বাংলাদেশী পাঠকের কাছে ‘ম্যান বুকার‘ পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচিতদের মধ্যে রয়েছেন, ২০০১ সালে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী প্রখ্যাত লেখক স্যার ভিএস নাইপল। ‘ইন আ ফ্রি স্টেট’ এর জন্য তিনি ম্যান অব বুকার অর্জন করেন। পিস অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে ডেভিড গ্রুসম্যানকে সবাই চিনে। ব্যতিক্রমী একটি উপন্যাস লিখে ২০১৭ সালে বুকার প্রাইজ লাভ করেন তিনি।  ২০১০ সালে ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে অবস্থান ও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে মারও খেয়েছেন ইসরায়েলের লেখক ও মানবাধিকার কর্মী ডেভিড গ্রুসম্যান।

অরুন্ধতী রায় ভারতীয় ঔপন্যাসিক, বুদ্ধিজীবী এবং পিস অ্যাকটিভিস্ট। তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে আছেন তার উপন্যাস ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ এর জন্য। ১৯৯৭ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী হৈচৈ পড়ে যায়। ১৯৯৮ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন উপন্যাসটির জন্য। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি পরিবেশগত সংশ্লিষ্টতা এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়েও কাজ করেন। ভারতের আসাম রাজ্যের শিলংয়ে অরুন্ধতী জন্মগ্রহণ করেন।

সালমান রুশদি একজন ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। তার দ্বিতীয় উপন্যাস মিডনাইটস চিলড্রেন ১৯৮১ সালে বুকার প্রাইজ অর্জন করে। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত তার লেখা জঘন্য বিতর্কিত বই স্যাটানিক ভার্সেস বিশ্বের অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। বইটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এর প্রতিবাদ হয় বিশ্বের সকল মুসলিম দেশে। বাংলাদেশে সহ বিভিন্ন দেমে বইটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।

আরব বিশ্বের প্রথম সাহিত্যিক হিসেবে ২০১৯ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার জিতেছেন জোখা আলহারথি। মাতৃভূমি ওমানের রূপান্তর বিষয়ক উপন্যাস ‘সেলেস্টিয়াল বডিস’র জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন তিনি। বৈচিত্র্যময় আরব সংস্কৃতির নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে এই উপন্যাসে। বিচারকরা আলহারথির ঐশ্বর্যময় কল্পনাশক্তি, লেখার চিত্তাকর্ষক শৈলি এবং কাব্যিক অন্তর্দৃষ্টির প্রশংসা করেন। উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে আল-আওয়াফি গ্রামকে ঘিরে। একটি সনাতনী সমাজ থেকে ঔপনিবেশ-উত্তর যুগে যে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল ওমান, তিন বোনের মাধ্যমে সেই পরিবর্তন, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ওমানিরা কীভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে তা দেখাতে চেয়েছেন জোখা আলহারথি।

লেখক: লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক।