ঐশ্বর্যময় কবি দিলওয়ার



সাঈদ চৌধুরী
ঐশ্বর্যময় কবি দিলওয়ার

ঐশ্বর্যময় কবি দিলওয়ার

  • Font increase
  • Font Decrease

কবি দিলওয়ার বাংলা সাহিত্যের এক প্রবাদ পুরুষ। তার মন ছিল গভীর ঐশ্বর্যময়। স্বভাব ছিল বহতা নদীর মতো, সতত বহমান।

দিলওয়ার এক বিস্ময় প্রতিভা। মানুষ হিসেবে এবং কবি হিসেবে ছিলেন অনেক বড় মাপের অনন্য একজন। তিনি গণমানুষের কবি। মুক্তিকামী মানুষের কবি। তার নিজের ভাষায়- ‘পৃথিবী স্বদেশ যার, আমি তার সঙ্গী চিরদিন’।

কাব্যের সুদূর প্রসারী আবেদন সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন বলেই কবি বলতে পেরেছেন- ‘এবার এলো শক্তিহীনের/ শক্তি লাভের দিন/ নবীন ভুবন সৃষ্টি হবে/ ঐক্যে অমলিন।‘

২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা টাউন হলে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ কর্তৃক কবি দিলওয়ারকে প্রদত্ত সংবর্ধনার মানপত্রে উল্লেখ করা হয়- ‘সাথী আজ তোমাকে সংবর্ধিত করার সুযোগ পেয়ে আমরা আনন্দিত। তোমাকে সম্মান জানানোর নাম মানুষকে ভালোবাসা। … তুমি কোনো একটি দেশের নও। কোনো দেশের কোন সীমানা তোমাকে বেঁধে রাখতে পারেনি। তোমার আশ্চর্যজনক সুস্থমন, প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় আত্মসম্মানবোধ তোমাকে এক কর্মযোগী করে তুলেছে।’

কবি দিলওয়ার সাম্য, মানবতা ও শোষিত মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তিনি আমাদের অনেক স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তার কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষেরও মুখস্থ। সমাজ পরিবর্তনে সংগ্রামীদের উদ্দীপ্ত করে তার এসব ছড়া ও কবিতা।

জাতীয় মুক্তির সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ কবি বলেন- ‘চাই বিপ্লব, চাই বিপ্লব, চাই/ বিপ্লব ছাড়া মুক্তির উপায় নাই/ পুরাতন করে কর্তন/ আনো নব পরিবর্তন/ নরদানবের বংশ/ করবো সমুলে ধ্বংস/ বুঝে নাও আজ এই ধরণীর/ প্রাপ্য যে যার অংশ/ রুখিয়া দাঁড়াও ভাইরে/ জীবনের গান গাইরে/ প্রাণ ধারণের প্রাপ্য রাসদ/ চাইরে মোদের চাই/ বিপ্লব ছাড়া জীবন জাগার কোনো উপায় নাই/ দাও তবে প্রতিঘাত/ হাতেতে মিলাও হাত/ দাও হুঙ্কার, টুটাবোই মোরা/ দুঃস্বপ্নের রাত।’


সিলেট শহরতলীতে ঠিকানা থাকলেও কবি দিলওয়ার আলোচিত ও সমাদৃত ছিলেন রাজধানী ঢাকা ও কলকাতার শীর্ষ কবিদের মধ্যে। ১৯৮০ সালে কবি দিলওয়ার কাব্য চর্চায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন ১৯৮১ সালে। ২০০৮ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য তাকে একুশে পদক প্রদান করা হয়। তিনি একাধারে কবি, ছড়াকার, সাংবাদিক, নাট্যকার ও গীতিকার ছিলেন। বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামে তার কবিতা প্রেরণা সঞ্চার করেছে।

দিলওয়ার গণমানুষকে হদয়ে কতটা জায়গা দিয়েছিলেন তার প্রমাণ মিলে বিভিন্ন কবিতায়। ‘আয়রে চাষি মজুর কুলি মেথর কুমার কামার/ বাংলা ভাষা ডাক দিয়েছে বাংলা তোমার-আমার।’ অথবা ‘বহু লাঞ্ছনা, বহু অপমান/ সহিয়াছে যারা মুখ করি ম্লান/ জয় হবে সেই নিপীড়িতদের/ জালিমেরা শির নোয়াবে/ এইবারে রাত পোহাবে।‘

কবি দিলওয়ারের কণ্ঠে জাগরনীর সুর ছিল। নিজ সৃষ্টির বৈশিষ্ট্যে তিনি উজ্জ্বল হয়ে আছেন। বেদনাক্লিষ্ট মানুষকে জাগ্রত করে কবি বলেন-‘পৃথিবীতে এসে কেঁদে যায় যারা বেদনার গেয়ে গান/ হতাশার কালো নয়নে মাখিয়া তপ্ত নিশ্বাস ফেলে/ নত করি শির চরণে নিজের দুঃখের পসরা ঠেলে/ মহাজীবনের ললাটে আঁকিয়া তলোয়ার খরশান/ তাদের বিফল জীবনের লাগি, বলো ঠিক দায়ী কারা/ বিধি না জনক? শাক্ত না ধনী? কোথায় জবাব তার/ লুকালো কোথায় উত্তরদাতা, সে কোন অন্ধাকার?/ নিবিড় আবেগে কাঁপিছে আমার দুইটি আঁখির তারা!’

‘গণমানুষের কবি’ বললে তার নাম বলতে হয়না। ১৯৭৭ সালের ৭ মার্চ সিলেটে কবি দিলওয়ারকে দেয়া নাগরিক সংবর্ধনার মানপত্রে ‘গণমানুষের কবি’ অভিধায় অভিষিক্ত করা হয়। এরপর তিনি আজীবন বরণীয় হয়েছেন এই নামেই।

শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রতি কবির ভালোবাসার অন্ত নেই। শিশুর মত তার সরল কবি মন কোমলমতি মানুষদের টানে। ছোট বেলায় কবির কথা মনে হলে শান্ত সকালে সুরমা পারের সূর্যোদয় অবলোকন করে করে অনাবিল আনন্দে ছুটে যেতাম। মনে মনে আবৃতি করতাম তার ‘কীনব্রীজে সূর্যোদয়’। ‘এখন প্রশান্ত ভোর। ঝিরঝিরে শীতল বাতাস/ রাত্রির ঘুমের ক্লান্তি মন থেকে ঝেড়ে মুছে নিয়ে/ আমাকে সজীব করে। উর্ধ্বে ব্যাপ্ত সুনীল আকাশ/ পাঠায় দূরের ডাক নীড়াশ্রয়ী পাখীকে দুলিয়ে।/ নীচে জল কলকল বেগবতী নদী সুরমার,/ কান পেতে শুনি সেই অপরূপ তটিনীর ভাষা/ গতিবন্ত প্রাণ যার জীবনের সেই শ্রেয় আশা/ সৃষ্টির পলিতে সেই বীজ বোনে অক্ষয় প্রজ্ঞার।/ সহসা ফিরিয়ে চোখ দিয়ে দেখি দূর পূবাকাশে/ তরুণ রক্তের মতো জাগে লাল সাহসী অরুণ/ পাখীর কাকলি জাগে। ঝিরঝিরে শীতল বাতাসে/ দিনের যাত্রার শুরু। অন্তরালে রজনী কুরণ!/ ধারালো বর্শার মতো স্বর্ণময় সূর্যরশ্মি ফলা/ কীন ব্রীজে আঘাত হানে। শুরু হয় জনতার চলা।’

সিলেটে বৃটিশ ঐতিহ্যের নিদর্শন এই ব্রিজ। পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ পায়ে হাঁটার সেতু। বড় বড় লোহার কাঠামোয় অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। ১৯৩৩ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় ১৯৩৬ সালে। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কীনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয় কীনব্রিজ। ১১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৮ ফুট প্রস্থ ব্রিজ দিয়ে হাঁটার সময় বড় মনোরম দেখায়। নদীর কাব্যময় ঢেউ বয়ে চলে অবিরাম। বুকের মধ্যে ছল ছল করে ঢেউ ছলকায়। কখন পৌছে যাই কবি মন্জিল। ভার্থখলা, খান মন্জিল।

খান মঞ্জিল আমার খালার বাড়ি। মুসলিম খান আমার খালু। তিনি কবি দিলওয়ারের বড় ভাই। বিশিষ্ট ছড়াকার কাদের নওয়াজ খান ও ছড়াকার বদরুল আলম খান আমার খালাত ভাই। কবিপুত্র কিশওয়ার ইবনে দিলওয়ার, শাহীন ইবনে দিলওয়ার, কামরান ইবনে দিলওয়ার এবং তাদের ভাই-ভাতিজাসহ অনেকে লেখেন। মান সম্পন্ন লেখ। তবে আমার কাছে মূলত তিনিই প্রধান আকর্ষণ। মনের গভীরে থাকে সুরমা পারের কবি, আমাদের প্রিয় দিলু মাম।

সমকালীন বাংলা সাহিত্যের জননন্দিত লেখক কবি দিলওয়ার আমাদের সাহিত্যে দৃঢ়তা ও শক্তিময়তার অভাব অবলীলায় পূরণ করেছেন। তার কবিতা স্বাধীনতা, মানবতা এবং সুবিচার প্রত্যাশায় তীক্ষ্ণ, তীর্য ও উজ্জ্বল। তার কল্পনায় ধর্মীয় উদারতা ও সাম্যবাদ আবার কখনো নৈরাজ্য স্পর্শ করেছে। তবে ভালোবাসা সর্বত্র প্রাধান্য পেয়েছে।

‘সে’ কবিতায় কবি দিলওয়ার বলেন- ‘ভারি মজার মজার কতো কথাই-না সে বলতো/ সে বলতো হাত দুটি নেড়ে নেড়ে, সহাস্যে, সোল্লাসে/ ছাই ছাপা আগুনের মত সেই ক্ষণে সে জ্বলতো/ আমি বুঝতাম বৈকি। আমি বুঝতাম অনায়াসে।/ … তার সেই ক‘টি কথা এই মনে এখনো সরব/ হিটলারের মুন্ডু হাতে আমি যেন মার্শাল জুকভ।’

কবির মুখে কত শত পংক্তিমালা শুনেছি, আজো কানে বাজে। সমাজ বিকাশের চেতনাকে কেন্দ্র করে সৃজিত অবিস্মরণীয় পংক্তিমালা। যে কবিতা সূর্যের মতো সর্বত্রই রশ্মি ছড়ায়। ‘যতদিন বেঁচে আছো ততদিন মুক্ত হয়ে বাঁচো/ আকাশ-মাটির কন্ঠে শুনি যেনো তুমি বেঁচে আছো।’ অথবা ‘মৃত্যুর মিছিলে তুমি জীবনের দীপ্ত তরবারী/ একথা নতুন করে তোমাকে জানাতে হবে নাকি?/ এ-কথারি ঢেউ নিয়ে কখন ছেড়েছে নীড় পাখী/ উন্মুক্ত আকাশ তলে তোমারি বন্দনা শুনি, নারী...সে কথা ভুলোনা তুমি। ভুলো না পাথর চাপা ঘাসে/ তোমারি সৌহার্দে, নারী, ঈশ্বর শিশুর মতো হাসে।

‘তুমি রহমতের নদীয়া, দোয়া করো মোরে হযরত শাহজালাল আউলিয়া’ এসব গান ও কবিতা সিলেটের জনমনে এখনো ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আছে। সিলেট বেতার কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিলো কবি দিলওয়ারের এই গানটি দিয়ে। প্রায় পাঁচ দশক ধরে সিলেটের অসংখ্য শিল্পী তার লেখা গান গেয়ে আসছেন। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে তার লেখনি নিসৃত হয়েছে। করিব কণ্ঠে কতবার শুনেছি- ‘আমিতো কাঠুরে নই, আমি তো চাইনে কেটে নিতে/ ফুলের ফলের উৎস: গাছের সবুজ বাহুগুলি/ চুলোর নারকী ক্ষুধা নেই তো ইচ্ছের চারিভিতে/ নির্বিকার বহ্নিমান পোড়াতে বাসনা শতমূলী।/ আমার একান্ত সুখ বৃক্ষের আদিম সমতায়/ যে-পাখীরা নীড়ভ্রষ্ট, আসুক উল্লাসে তারা ফিরে/ সবুজ সুঠাম যতো বাহুর সহিষ্ণু মমতায়/ শূন্যের বিপুল আর্তি ফিরুক শূন্যের বুক চিরে!/ আমার কুঠার যেই, রইবে সে ক্রোধে চিরকাল/ শ্বাপদসংকুল যতো গহন অরণ্যপানে খাড়া/ অশান্ত কাঁপিয়ে যাবে জীঘাংসু রাত্রির শিরদাঁড়া/ কুঠারের তীক্ষ্ণ ধারে বহমান অনন্ত সকাল!/ ফুলের গন্ধের নদী ফলের নৌকোর খোলে হাল/ বৃক্ষের বাহুতে বসে পাখিরা সংগীতে তোলে তাল।

‘শ্রদ্ধেয় পিতা ক্ষমা করবেন’ কবিতায় শ্রেণি বিভক্তির বিরুদ্ধে কবির দৃপ্ত উচ্চরণ- ‘শ্রদ্ধেয় পিতা ক্ষমা করবেন যদি অপরাধ হয়/ আমরা কি আজো দিতে পারলাম/ মানুষের পরিচয়?/ ডুবে আছি আজো খন্ডে খন্ডে সাম্প্রদায়িক পাঁকে/ দম্ভদূষিত নাগপাশে বেঁধে/ মানুষের বিধাতাকে।/ প্রতিদিন ভোরে ও-কার সূর্য মর্মরক্তে ভিজে/ আমাদের ঘরে আলো দিয়ে যায়/ বিগলিত হয়ে নিজে?/ ও-কার বাতাস প্রতি নিশ্বাসে বিশ্বজনীন হয়?

শ্রদ্ধেয় পিতা ক্ষমা করবেন/ এ তো ভুলবার নয়।/ শুধু মুখে নয় বুকেও ক্ষরিত সাম্প্রদায়িক বিষ/ অঘ্রাণে তাই ব্যথারক্তিম ঐশী ধানের শিষ!/ কতকাল ধরে, বলতে পারি না/ আত্মহনন কাজে/ ব্যস্ত রয়েছি আমরা সবাই। প্রভাত মথিত সাঁঝে।/ কেটে গেল কত পিতামহ আর/ প্রপিতামহের কাল/ বোধির গোড়ায় সার হলো কত বিভেদের জঞ্জাল।

শ্রদ্ধেয় পিতা ক্ষমা করবেন/ চিরাচরিতের পথে/ জীবন কখনো চলতে পারে না- নদীর জীবন স্রোতে!/ ঔরসজাত মানবতা চাই/ কালের শুদ্ধসুধা/ রক্তে আমার এই তো ধর্ম/ এই তো মাতৃক্ষুধা।

‘বলে রাখি শোনো, করো নাকো হৈ চৈ/ যতদিন আছে শ্রেণি বিভক্ত জাতি/ আমি কিছুতেই তোমাদের দলে নই।’

নিপীড়িত জনতার সাহসের বাতিঘর গণ মানুষের কবি দিলওয়ার বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিলেন সদা সোচ্চার। তার ভাষায়- ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি: পদ্মা তোমার যৌবন চাই/ যমুনা তোমার প্রেম/ সুরমা তোমার কাজল বুকের পলিতে গলিত হেম।/ পদ্মা যমুনা সুরমা মেঘনা/ গঙ্গা কর্ণফুলী/ তোমাদের বুকে আমি নিরবধি/ গণমানবের তুলি!/ কত বিচিত্র জীবনের রং/ চারদিকে করে খেলা/ মুগ্ধ মরণ বাঁকে বাঁকে ঘুরে/ কাটায় মারণ বেলা!/ রেখেছি আমার প্রাণ স্বপ্নকে/ বঙ্গোপসাগরেই/ ভয়াল ঘূর্ণি সে আমার ক্রোধ/ উপমা যে তার নাই!/ এই ক্রোধ জ্বলে আমার স্বজন/ গণমানবের বুকে/ যখন বোঝাই প্রাণের জাহাজ/ নরদানবের মুখে!/ পদ্মা সুরমা মেঘনা…/ অশেষ নদী ও ঢেউ/ রক্তে আমার অনাদি অস্থি,/ বিদেশে জানে না কেউ!’

কবির সত্যিকারের সহযাত্রী আনিসা দিলওয়ার আছেন তার সৃষ্টিশীলতার বড় একটা অংশ জুড়ে। ‘গোটা বিশ্ব আজ প্রিয়তমা’ কবিতায় তিনি বলেন- ‘প্রিয়তমা এসো তুমি যৌথকণ্ঠে শেষ বার বলি/ আমরা বহন করি অলৌকিক মানবতা বোধ/ তাকে রোজ স্নাত করে অতলের জলীয় আমোদ/ তার স্বাদ পেতে চায় আদিম প্রাণের কথাকলি/ উঠোনে দাঁড়িয়ে দেখি রোদ হাতে নাজিম হিকমত/ ম্যাক্সিম গোর্কির রাত আজো কিনা হয়নি নিঃশেষ/ জননীর কণ্ঠে শুনি বাঁধভাঙ্গা কঠোর আদেশ/ ধ্বংসকে দেখিয়ে দাও সৃজনের ধ্র“পদী হিম্মত/ প্রিয়তমা, মনে রেখো পৃথিবীর সূর্যপ্রদক্ষিণ/ অগত্যা বিশ্রাম নেই আকাঙ্খিত আলোর সফরে/ অনাগত সন্তানেরা রক্তস্রোতে বিচরণ করে/ পশু মানুষের হাতে নয় তারা কখনো অধীন/ প্রিয়তমা তুমি নও, গোটা বিশ্ব আজ প্রিয়তমা/ তার জন্য অনিবার্য বৈপ্লবিক প্রেম-পরিক্রমা।’

ষাটের দশকে দক্ষিণ স্বাধীনতাকামী নেলসন ম্যান্ডেলা যখন জেলে বন্দি, তখন দিলওয়ার তাকে নিয়ে লিখেন- ‘নেলসন ম্যান্ডেলা: একটি আগ্নেয় স্মরণ।’ কবি বিশ্বমানবতার পক্ষে কলম ধরেন ‘আনিসা শুনতে পাও, ‘উহুরু’ ‘উহুরু’ সেই ডাক?/ অগ্নিগোলকের মতো কৃতঘ্ন আঁধার ভেদ করে/ সে-ডাক ছুটন্ত দ্যাখো। রৌদ্র নৃত্য কালের অধরে!/ কৃষ্ণ সাগরের স্রোতে শ্বেতদৈত্য আতংকে নির্বাক/ এবং শুনতে পাও খাচাভাঙ্গা সিংহের গর্জন?/ শানিত থাবায় তার জন্মগত মুক্তির সনদ/ সে হাঁকে অকুতোভয়ে: করবে কে আয় গতিরোধ/ দেখি কার শক্তি কতো। আমি আজ অরাতি দমন/ সেই বজ্রনাদ শুনে, চেয়ে দ্যাখো, ধবল প্যান্থার/ শ্বেতাঙ্গ অসুরবৃন্দ জ্বরার্ত শিশুর মতো কাঁপে/ বিপুলিপ্ত নিকটবর্তী। শাখায় ঝুলন্ত স্বৈরাচার/ অতল তিমির গর্ভে সূর্যকান্ত মণির মতোন/ আফ্রিকা ক্রমশঃ দীপ্ত কন্ঠে কোটি পল রোবসন’।

কেবলমাত্র নেলসন ম্যান্ডেলা নিয়েই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক বিষয় নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। যেখানে কবিতায় সর্বাগ্রে স্থান পেয়েছে সাম্য, মৈত্রী ও মানবতার অমীয় বাণী।

কবি দিলওয়ারের প্রথম কবিতা ‘সাইফুল্লাহ হে নজরুল’ প্রকাশিত হয় ১৯৪৯ সালে সাপ্তাহিক যুগভেরীতে। ১৯৫৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জিজ্ঞাসা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৬৪ সালে বের হয় দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ঐকতান’। এরপর কবি একে একে লিখেন পুবাল হাওয়া (গানের বই, ১৯৬৫), উদ্ভিন্ন উল্লাস (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৬৯), বাংলা তোমার আমার (গানের বই, ১৯৭২), ফেসিং দি মিউজিক (ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ, ১৯৭৫), স্বনিষ্ঠ সনেট (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৭৭), রক্তে আমর অনাদি অস্থি (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮১), বাংলাদেশ জন্ম না নিলে (গ্রবন্ধগ্রন্থ, ১৯৮৫), নির্বাচিত কবিতা (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮৭), দিলওয়ারের শত ছড়া (ছড়ার বই, ১৯৮৯), দিলওয়ারের একুশের কবিতা (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৯৩), দিলওয়ারের স্বাধীনতার কবিতা (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৯৩), ছাড়ায় অ আ ক খ (ছড়ার বই, ১৯৯৪), দিলওয়ারের রচনাসমগ্র ১ম খণ্ড (১৯৯৯), দিলওয়ার-এর রচনা সমগ্র ২য় খণ্ড (২০০০), ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ডাকে (ভ্রমণ, ২০০১), দুই মেরু, দুই ডানা (কাব্যগ্রন্থ ২০০৯)৷

সাহসী শব্দ সৈনিক কবি দিলওয়ারের ‘চলমান শব্দাবলী’র মতো কলামগুলো দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। তার গল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘সাদা কালো বিড়াল’ এবং ‘ইলিশ মাছের কাঁটা’। মঞ্চ নাটক হচ্ছে ‘আসল মুক্তিযুদ্ধ এবং রুধিরাক্ত কাল’।

ইংরেজি রচনা ও অনুবাদেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন কবি দিলওয়ার। অনুবাদ করেছেন মার্কিন কবি নরমান, কোরীয় লেখক মোগউ, জার্মান কবি কাল ক্রালাউ, রুশ কবি আইওন, ইতালিয়ান কথা সাহিত্যিক মোরাকিয়ান সহ বিখ্যাত লেখকদের বই।

কবি ক্লান্তিহীন উদ্যম, দুর্বার উদ্দীপনায় ছিলেন গতিশীল ও প্রত্যাশাময়ী। আমার 'ছায়াপ্রিয়া' উপন্যাস সম্পর্কে গণমানুষের কবি দিলওয়ার লিখেন- ‘বোধশক্তি অর্জনের পর থেকেই মানুষ যে তিনটি অমূল্য উপকরণকে পাথেয় করে নানাভাবে নিজের প্রকাশ ঘটাতে থাকে সেই ত্রয়ী হচ্ছে মন, স্মৃতি ও চিন্তাশক্তি। মানুষের আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জগতে যে সব বিস্ময় স্তরে স্তরে বিন্যস্ত রয়েছে, তাদের একটি হচ্ছে সাহিত্য। বাংলা ভাষার হাজার বছরের ইতিহাসে কবিতার স্থান সর্বোচ্চ হলেও উপন্যাসের শুরু প্রায় দেড়শ বছর থেকে। সমালোচকেরা এক্ষেত্রে প্রথম উপন্যাস হিসেবে গণ্য করেন যে গ্রন্থটিকে তার নাম "আলালের ঘরের দুলাল"। অতি অল্প সময়কালের মধ্যে বাংলা সাহিত্যে উপন্যাসের ধারাটি বিস্ময়কর উন্নতি সাধন করে। আমার এই অতীত স্মৃতি চারণের মূলে একজন তরুণের লেখা একটি উপন্যাস 'ছায়াপ্রিয়া'।

একান্ত স্নেহাস্পদ উপন্যাসিক সাঈদ চৌধুরী তার প্রথম গ্রন্থটি নিয়ে পাঠক সমাজে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছেন। এই উৎসাহ ব্যঞ্জক প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, সাঈদ চৌধুরী তার লেখায় পরিবর্তনশীল সমাজ ব্যবস্থার মানসিক সুখ-দুঃখকে অনেকটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। নিঃসন্দেহে এটি এক প্রাচুর্যময় সম্ভাবনার ঝলকানি। পরিমিত কলেবরের উপন্যাসটিতে লেখক ভাবনা একাত্ব হয়ে আছে। কেন জানি মনে পড়ে যায় আমার প্রথম যৌবনে পঠিত একটি বিদেশী উপন্যাসের কথা। সেই উপন্যাস রচয়িতার বাড়ি ছিল নরওয়ের এক গ্রামাঞ্চলে। তিনি হলেন বিশ্ব বিখ্যাত ন্যুট হামসুন। উপন্যাসের নাম হাংগার। যদিও বিষয় বস্তুর তুলনায় সাঈদ চৌধুরী ও হামসুনের মধ্যে ব্যবধান বিপুল। তা সত্ত্বেও আত্মপ্রকাশের প্রশ্নে দু'জনের মধ্যে কোথাও যেন একটি মিল রয়েছে।

আমি খুবই আনন্দিত যে, 'ছায়াপ্রিয়া' উপন্যাসটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আমি আশা করবো সাঈদ চৌধুরী পাঠকদের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্যতার যে সম্মান অর্জন করেছেন, আগামীতে আরো সতর্কতা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে নতুন নতুন সাহিত্যকর্ম উপহার দিয়ে তার অভীষ্ট লক্ষ্য পথে এগিয়ে যাবেন। প্রসঙ্গতঃ আমরা অবশ্যই স্মরণ করবো যে, প্রতিটি উন্নত দেশ তার অস্তিত্বে ধারণ করে আছে নিজ নিজ সাহিত্য-সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ। আমি লেখকের ফলপ্রসূ দীর্ঘায়ু কামনা করি। -দিলওয়ার, ভার্থখলা, সিলেট।’

কবি দিলওয়ার ১ জানুয়ারি ১৯৩৭ সালে সিলেট শহরের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলাস্থ পৈতৃক নিবাস খান মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী হাসান খান এবং মাতা মোছাম্মৎ রহিমুন্নেসা। পুরো নাম দিলওয়ার খান। যদিও তিনি পারিবারিক ‘খান’ পদবি কখনো ব্যবহার করেননি। রক্ষণশীল পারিবারিক ঐতিহ্য ভেঙে কবি দিলওয়ার সাধারণ মানুষের সাথে মিশে গিয়েছিলেন। সকল চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে কবি দিলওয়ারের চেতনায় ছিল শুধুই দেশপ্রেম। মানুষকে ভালোবেসে তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।

‘আমার মৃত্যুর পর’ শীর্ষক লেখা কবিতায় কবি দিলওয়ার বলেছেন, ‘আমার মৃত্যুর পরে যদি তুমি/ কখনো খুঁজতে যাও এই মর্মভূমি/ মনে রেখো তবে/ বাংলার হৃদয় নিয়ে কেটেছে/ আমার দিন/ প্রতীচ্যের মুক্তির গৌরবে।’

২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত কারণে ইহকাল ত্যাগ করেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান এই কবি। যার ভালোবাসা ছিল কর্মচঞ্চল মানুষের সাথে। জনতার বহমান কর্মধারার সঙ্গেও। তিনি একজন প্রথিতযশা সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা-ব্যক্তিত্ব। ঐশ্বর্যময় কবি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মানবতার মুক্তিকন্ঠ, গণমানুষের কবি দিলওয়ারকে।

লেখক: লন্ডন প্রবাসী। সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক।

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;