বইমেলায় ইসরাত জাহান দ্যুতির ‘সে যে দীপশিখা’
ইসরাত জাহান দ্যুতি নতুন লেখক হয়েও পাঠকপ্রিয়তায় ধন্য। সাধারণত কোনও প্রকাশক বই বিক্রির সঠিক তথ্য দিতে চান না। প্রকাশক 'বর্ষা দুপুর' একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩-এর স্টল নম্বর ৪০৭, ৪০৮, ৪০৯ সাজিয়ে বসেছেন প্রতিবারের মতোই। ভিড়ের মধ্যে জোর গলায় বললেন বইমেলায় আমাদের প্রকাশিত ইসরাত জাহান দ্যুতির ‘সে যে দীপশিখা’ বেস্টসেলার। অদ্ভুতভাবে তার সবগুলো বই বেশ চলছে।
দুত্যির পৈতৃক নিবাস ছোট্ট একটা জেলা মাগুরাতে। লেখালেখির শুরুটা তার খুব স্বল্প দিনেরই। কিন্তু এই স্বল্প সময়েই অমর একুশে বইমেলা ২০২০ - এ তার লেখা প্রথম প্রকাশিত একক বই 'প্রভাতকিরণ' পাঠকদের মন রাজ্যে সাড়া ফেলে বেশ। এরপর ২০২১ এর বইমেলায় তার লেখা 'কয়লা' এবং 'এমনই শ্রাবণ ছিল সেদিন' বই দু'টিও একইভাবে গ্রহণ করে পাঠক। ২০২২ এর নভেম্বরে প্রকাশ পায় তার চতুর্থ বই 'শূন্য কুলায় ফেরারি পাখি'। এবং ২০২৩ এর অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ পেলো পাঠকের বহুল আকাঙ্ক্ষিত তার পঞ্চম বই 'সে যে দীপশিখা'। জীবনের সমৃদ্ধির বাইরেও তিনি সুখ, আনন্দ আর আত্মতৃপ্তি অনুভব করেন তার লেখা প্রতিটি শব্দের মাঝে। পাঠকদের অনুপ্রেরণায় তিনি প্রতিনিয়ত প্রকাশ করছেন একের পর এক বই এবং সেগুলো বিক্রিও হচ্ছে দারুণ।
এবারের বইমেলায় ইসরাত জাহান দ্যুতির 'সে যে দীপশিখা' বইটি একটু ভিন্নমাত্রার। যোগ্য বাদশাহর উপযুক্ত অনুষঙ্গ যদি হয় জ্ঞানী, শক্তিশালী, যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী, তীক্ষ্ণ মেধাবী ও বুদ্ধিমান এবং দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয়; তবে অবশ্যই বইয়ের নায়ক যুবক বাদশাহ ফালাক তাজ সমস্ত যোগ্যতার অধিকারী। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার রাজা তিনি। ইসলামী দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে তার সাম্রাজ্যে পূর্ণ রূপে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করাই তার প্রথম লক্ষ্য। যে লক্ষ্য ছুঁতে গিয়ে সম্মুখীন হতে হয় তাকে নানান বাধা-বিপত্তি ও প্রতিপক্ষের।
দুত্যি কাহিনীর সংঘাতময়তায় দেখিয়েছেন এই যোগ্য রাজার জীবনে যতটা প্রাপ্তি ততটাই অপ্রাপ্তি। মহা ক্ষমতাপন্ন বাদশাহ হয়েও তিনি বড় অসহায়। তথাপি ধর্মপ্রাণ বিবি মেহেরুনের অসিলাতেই পুর্নবার আল্লাহর প্রতি ভরসা স্থাপন করতে পেরেছেন তিনি। এককালে প্রাণাধিকা প্রিয় বিবির রূপ নয় বরং গুণ ও ব্যক্তিত্বের প্রণয়ে উন্মাদ হয়ে, তাকে অসম্ভব বিশ্বাস করার দায়ে পতনও ঘটতে যায় বাদশাহর। এবং বিবির চরম নির্বুদ্ধিতায় পিতৃসুখ থেকেও বঞ্চিত হতে হয় তাকে। এই প্রেমময় বিবির যন্ত্রণাদায়ক বিশ্বাসঘাতকতায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাদশাহ ফালাক তাজ দীর্ঘ ন'মাস নির্বাসনের পর একদিন কল্পনাতীতভাবে ফিরে আসেন অবিশ্বাস্য বিধ্বংসী রূপে, অপরাধী বিবির জন্য আরও কঠিনচিত্তের হয়ে। তারপরই নেমে আসে বিশ্বাসঘাতক রানি মেহেরুনের জীবনে চরম দুর্দশা। যে দুর্দশাকে রানি শুরুতে মাথা পেতে গ্রহণ করলেও পরিশেষে রাজার প্রতিপক্ষ হয়েই রুখে দাঁড়ান।
চরম থ্রিল ও সাসপেন্স ইসরাত জাহান দ্যুতির 'সে যে দীপশিখা' গ্রন্থের পরতে পরতে রয়েছে। আরও আছে ভালোবাসার ভিন্ন রূপ, অভিমানী অভিযোগ, দ্বন্দ-সংঘাত, বিশ্বাসঘাতকতা, চক্রান্ত ও দ্বীন রক্ষা । এই সমগ্র চিত্রের এক জটিল অনুভব "সে যে দীপশিখা" প্রাচীন পটভূমিতে উদীয়মান লেখক দ্যুতির নতুন ধারার রচনাশক্তির পরিচায়ক।