লেখক জানান, বাংলাকে জানবো, বাঙালিকে জানবো, বাঙালিয়ানাকে মানবো। তারপর বিশ্ব ও বিশ্ববাসীকে জানবো-এটাই আধুনিকমনস্ক বাঙালির ধর্ম ও সংস্কৃতির শর্ত। এই জানা অবশ্যই হতে হবে ইতিহাস-ভূগোল, নৃ-তত্ত্ব ও ভাষাতাত্ত্বিক জ্ঞানমাহাত্ম্যে। জানবো কল্পনা ও কবির দৃষ্টিতে না জেনে যুক্তির আলোকে, তত্ত্ব-তথ্য-উপাত্তযোগে। ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে।
বাঙালিয়ানাই বাঙালি জাতিসত্তার পরিচায়ক। আমরা যে বাঙালি, বাংলা যে আমাদের দেশ, বাংলা যে আমাদের ভাষা, বাঙালিয়ানা যে আমাদের সংস্কৃতি এই বিশ্বাস ছাড়া বাঙালি শুদ্ধ বাঙালি নয়। শুদ্ধ বাঙালি হলেই বাংলা-বাঙালি-বাঙালিয়ানা বাংলা ভাষা হয়ে উঠবে আমাদের চিন্ময় ও মৃন্ময় সত্তা।
শাশ্বত বাঙালি, আধুনিক বাঙালি, অহিংস-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক বাঙালি হতে হলে বাঙালি জাতি ও সংস্কৃতির অনুশীলনেই হতে হবে। ‘বাংলা ও বাঙালিয়ানা’ বইতে সেই বাঙালির রূপ-রস-সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সন্ধান মিলবে।
গাজী আজিজুর রহমানের লেখার একটি ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যু, আত্মহত্যা এবং কবিতাবিষয়ক লেখাগুলো পাঠককে বারবার ভাবিত করে, প্রশ্নমুখী করে তোলে। বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, আধুনিকতা তার প্রিয় লেখালেখির বিষয়। ‘বাংলা ও বাঙালিয়ানা’ লেখকের ১২তম প্রবন্ধ গবেষণা গ্রন্থ।
সে ছিল আমার প্রথম সত্যিকারের ভালবাসা। আমরা একসঙ্গে সবকিছু করতাম, একসঙ্গে ঘুরতাম। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমার সম্পর্ক টিকে ছিল। আমার জন্মদিনে একবার সে অন্য কোন উপহারের বদলে একটি ছোটো তলোয়ার উপহার দিল। এটা সে জাপান থেকে নিয়ে এসেছিল। সেখানে ও শিক্ষক হিসেবে কাজ করতো।
থাইল্যান্ডে গত নভেম্বর থেকে যাত্রা করেছে মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশীপ
তবে সেই তলোয়ারটা ‘কাটানা’ ছিল না। সেটা ছিল ‘হারা কিরি’। যেটা কিনা আত্মহত্যার জন্য ব্যবহার করা হয়। আমার ওই জন্মদিনের কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয় তার স্মৃতি ভুলতে। পারছিলাম না, তাই ওকে ভোলার জন্য এই তলোয়ারটি দিয়ে দিলাম।’
এমনই সব হৃদয় ভাঙার গল্পের উপাদান নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপ’ বা ‘ভাঙা সম্পর্কের জাদুঘর’।
হৃদয় ভাঙার গল্পের উপাদান নিয়ে গড়ে উঠেছে এই মিউজিয়াম
সম্পর্ক ভাঙা কি শুধুই দুঃখের হয়। বরং বেঁচে যাওয়াও হয়। যেমন কোরিয়ার সিউলের রমনী তার এক জোড়া গ্লোবসের সঙ্গে মিশে থাকা আর গল্প বলেছেন। ”আমার বিয়ের পরপরই আমি বিদেশে চলে যাই। এরপর যখন অপ্রত্যাশিতভাবে আবার কোরিয়ায় ফিরে আসি, শ্বশুর বাড়িতে থাকা শুরু করি। কারণ তখন আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল ছিল না।
প্রথম দিন থেকেই শ্বশুর বাড়িতে আমি ঘরের কাজের জন্য নিয়োজিত হই। আমার শ্বশুর শ্বাশুরির জন্য সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবার তৈরী করতে আমাকে পুরো দিনটাই ব্যয় করতে হতো রান্না ঘরে। আমি যদি আমার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে বের হতাম, তখন আমার নিজের কাছে অপরাধী মনে হতো। আমাকে দ্রুত বাসায় ফিরে আসতে হতো।
দেয়ালে দেয়ালে যেন হৃদয় ভাঙার গল্প
আমার নিজের জীবন বলে আর কিছু থাকল না। একসময় অনুভব করলাম, আমি শুধু একটা কাজ করার যন্ত্রে রুপান্তরিত হয়েছি। শেষ পর্যন্ত আমরা শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে এসেছি। আমি আমার শেষ রাভারের গ্লোবসটি দিলাম জাদুঘরে যেটা আমার ঘরের কাজ করা শ্রমিক হিসেবে শেষ প্রতীক। আমার মনে হচ্ছে আমি অবশেষে নিজেব জীবনকে খুঁজে পেয়েছি।
এই ধরনের প্রায় অর্ধশত গল্প ও গল্পের অনুষঙ্গের দেখা মিলবে থাইল্যান্ডের উত্তরের প্রদেশ চিয়াং মাইয়ের শহরে।
চিয়াং মাই পাহাড়ি জনপদ। শিল্পকলা এবং শিল্পীদের শহর হিসেবে পরিচিত। তাইতো মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপের একটি আউটলেট হয়েছে এখানে। শহরের কেন্দ্রে ২ তলা একটি ভবনে গড়ে উঠেছে এই জাদুঘর। যার দেয়ালে দেয়ালে যেন হৃদয় ভাঙার গল্প। যা অনেক দর্শনার্থীদের চোখের পানি ঝড়ায়।
মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপের শুরু ক্রোয়েশিয়াতে।
মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপের শুরু ক্রোয়েশিয়াতে। জাগরেব শহরের দুজন শিল্পী চলচ্চিত্র প্রযোজক ওলিঙ্কা ভিস্টিকা, এবং ভাস্কর ড্রেজেন গ্রুবিসিচ জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৩ সালে তাদের চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর, দুজনে তাদের ভালবাসার স্মৃতিযুক্ত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার জন্য একটি জাদুঘর স্থাপনের বিষয়ে রসিকতা করেছিলেন। তিন বছর পর, গ্রুবিসিচ এই ধারণা নিয়ে ভিস্টিকার সাথে যোগাযোগ করেন। তারা তাদের বন্ধুদের তাদের বন্ধুদেরকেও বলেন, তাদের প্রাক্তনের রেখে যাওয়া জিনিস দান করতে। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো জাগরেবে জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এই মিউজিয়াম।
ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাদের এই মিউজিয়াম এবং বিশ্ব ভ্রমণও করে। জাগরেবের পর দ্বিতীয় শাখা হিসেবে থাইল্যান্ডে গত নভেম্বর থেকে যাত্রা করেছে মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশীপ। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ তাদের হৃদয় ভাঙার গল্প এবং বস্তু দান করে এই জাদুঘরে। সেখান থেকে প্রতি বছর বাছাই করে জাদুঘরে গল্প আর বস্তু প্রদর্শণ করা হয়।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে সাংবাদিক জহিরুল ইসলামের প্রথম উপন্যাস 'অধরা স্বপ্ন'। বইটি প্রকাশ করছে টাঙ্গন প্রকাশনী। মেলার প্রথম সপ্তাহে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে টাঙ্গনের স্টলসহ মোট তিনটি স্টলে উপন্যাসটি পাওয়া যাবে। এছাড়াও রংপুর, খুলনা ও মানিকগঞ্জ বই মেলায় টাঙ্গনের স্টলে মিলবে বইটি।
উপন্যাসের মূল চরিত্র এক সময়ের দুরন্ত কিশোর আরেক সময়ের পরিবারের স্বপ্নখুঁটি নিজাম। তার কিশোর বয়সের প্রেম-ভালোবাসা এবং সংগ্রামের আবেগ ছাড়িয়ে বাবার মৃত্যুতে নতুন পথের যাত্রা! বাবার মৃত্যুর আঘাতেও থেমে না থাকা। বাবা’র পাকাঘরের স্বপ্নপূরণের চিন্তা শত বাধা আর দারিদ্রতার মধ্যেও কখনো ভুলে না যাওয়া। বাবা’র রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করে ভালোবাসার বন্ধনে বেঁধে রাখেন মা, বোন ও বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানকে। এভাবেই এগোতে থাকে গল্প.........'
অধরা স্বপ্ন নিয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, 'জীবনের অনেক অপরিহার্য কিছু হারিয়ে গেলেও জীবন থেমে থাকে না। সময়ের সাথে সাথে অপরিহার্য বিষয়টি অপ্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। জন্মের পর থেকেই এই পাওয়া না পাওয়ার খেলা চলতে থাকে। গল্পের নায়ক নিজাম জীবনের স্বপ্নের মণিকে ছুঁয়ে দেখার জন্য একসময় বিদেশ যাত্রা করেন। প্রবাসে থেকে অর্থ উপার্যন করে দেশের ফেরেন। এরমধ্যে বিচ্ছেদ, সন্তানের অসুস্থ্যতা, নিজের অসুস্থ্যতা, সামাজিক চাপ ও কুসংস্কার কত কিছুই না দেখতে হয় তাকে। এসব কিছু উৎরাতে সব সময় পাশে পান স্ত্রী সাথিকে।'
‘অধরা স্বপ্ন’ প্রকাশ করছে টাঙ্গন প্রকাশনী। মেলার প্রথম সপ্তাহে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে টাঙ্গনের ৯ নম্বর স্টল, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি'র ৯৬২ নম্বর স্টল (নজরুল মঞ্চের সামনে) এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯২ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। এছাড়াও রকমারি ডটকমসহ বইটি মিলবে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফরমেও। বইটির দাম ২৫০ টাকা।
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে আসছে জনপ্রিয় তরুণ লেখক এম এম মুজাহিদ উদ্দীনের দুটি বই। রকমারিতে বই দুটির প্রি-অর্ডার শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বইমেলায় প্রকাশনীর স্টলেও বই দুটি পাওয়া যাবে।
বই দুটির একটি ছাত্রজীবন থেকে ক্যারিয়ার প্রস্তুতির যাবতীয় গাইডলাইন নিয়ে লেখা ‘ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’। বইটি প্রকাশ করছে অন্বেষা প্রকাশন। অন্যটি বিশ্বের সাড়া জাগানো বইগুলোর লাইফ লেসন নিয়ে লেখা ‘লেসন ফ্রম বুকস’। বইটি প্রকাশ করছে বাংলার প্রকাশন।
‘ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’ বইটির মুদ্রিত মূল্য ৪০০ টাকা এবং ‘লেসন ফ্রম বুকস’ বইটির মুদ্রিত মূল্য ২৭০ টাকা রাখা হয়েছে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার বই সম্পর্কে লেখক বলেন, ‘জীবনে বড় হওয়ার জন্য একজন মেন্টরের দরকার হয়। যার পরামর্শ দেওয়ার মতো কেউ নেই; বইটি তার জন্য মেন্টরের ভূমিকা পালন করবে। তিনি আকাশ ছোঁয়ার দুরন্ত স্বপ্ন দেখবেন।’
লেসন ফ্রম বুকস বই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সাড়া জাগানো বইগুলোর লাইফ লেসন নিয়ে মূলত বইটি লেখা হয়েছে। যে জীবনের পাঠ সুন্দর অভ্যাস, টাকা অর্জন-বিনিয়োগ, খ্যাতি, সম্মান ও সফল জীবন গঠনের সহায়ক হবে। ব্যস্ত জীবনে অনেকেরই এতো বইপড়ার সুযোগ হয় না। তারা সহজেই বইটি থেকে লাইফ লেসন শিখে জীবনে সফল হতে পারবেন।’