“করপোরেট সাহিত্য, বুরোক্র্যাট সাহিত্য, সবকিছুরই চূড়ান্ত হয়েছে”



রোজেন হাসান, অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচার এডিটর
গ্রাফিক: বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এ প্রকাশিত হয়েছে সুব্রত অগাস্টিন গোমেজের নতুন কবিতার বই ‘দশ মহাবিদ্যা’। প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী আহমদা মরিয়ম চৌধুরী। ৭২ পৃষ্ঠার বইটির বিনিময় মূল্য ৪০০ টাকা। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে বৈভবের ৭১৮ নং স্টলে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ ও তাঁর দশ মহাবিদ্যা প্রসঙ্গে সম্প্রতি নব্বইয়ের মেধাবী কবি কামরুজ্জামান কামু মন্তব্য করেন—“মাইকেল মধুসূদন দত্তের সঙ্গে এই কবির জীবন ও কবিতায় অনেক মিল। জীবিত কবিদের মধ্যে তাঁর সমান ছন্দের ওস্তাদ আর কেউ আছেন বলে আমার জানা নাই।”

বাতিঘর থেকে তাঁর আরেকটি কবিতার বই ‘ছুরিতে ঠিকরানো আঁধিয়ার’—এ বইমেলাতেই প্রকাশ হতে যাচ্ছে। প্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য বই দুটি, নিজের লেখালেখি এবং বাংলা সাহিত্যের সাম্প্রতিক হালচাল নিয়ে কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজের সঙ্গে কথা বলেছেন বার্তা২৪.কমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচার এডিটর রোজেন হাসান


বার্তা২৪: প্রকাশিত ‘দশ মহাবিদ্যা’ বইয়ের কবিতাগুলো সম্পর্কে জানতে চাইব।
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: ‘দশ মহাবিদ্যা’ একটা সনেট-সিকোয়েন্স। বইটার থিম নারী—ইতিহাস, সাহিত্য, রূপকথা, উপকথা, অভিজ্ঞতা, নানা সূত্রে যত নারী চরিত্রের মুখোমুখি আমি হয়েছি, তারা হঠাৎ অবচেতন ফুঁড়ে চৈতন্যের মাটিতে দাঁড়িয়ে গেছে যেন, ধারালো-সব অস্ত্র, ক্রূর-যত শাস্তি হাতে করে।

বার্তা২৪: দশ মহাবিদ্যা তো দেবীর দশটি রূপকে নির্দেশ করে। শাক্ত ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই দশ মহাবিদ্যা, উত্তর-পৌরাণিক যুগের দেবী ভাবগত পুরাণে পরম সত্তাকে নারীরূপে কল্পনা করা হয়েছে। আপনার এই বইয়ের কবিতাগুলো কি সেই দিকেই মোড় নিতে চেয়েছে?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: ঠিক কী চেয়েছে আমার কবিতাগুলো, তা আমি কী করে বলব। বেশ-কিছু কবিতা লেখা হয়েছে নিজে-নিজে প্রায়, কোনো-না-কোনো ইতিহাস-নারী লিখিয়ে নিয়েছে যেন। আবার কিছু লেখা হয়েছে খানিকটা খেলার ছলে, খেলা, ভাষাকে নিয়ে, প্রকাশকে নিয়ে। দশ মহাবিদ্যা আমার কাছে, যেন, নারীসত্তার সম্পূর্ণতা, দশ-প্রহরণ-সমেত দুর্গা, যেন। এখানে নারীকে দেখা হয়েছে নানা-রূপে, নানা-ভাবে, উল্টে-পাল্টে। কখনো খোদ নারীরই চোখ দিয়ে, কখনো পুরুষের, কখনো, বা, এমনকি ঈশ্বরের... যে-ঈশ্বরও, পুরুষ, ধর্ষক, প্রতারক, যে-ঈশ্বর আব্রাহামীয়, হন্তারক, একনায়ক, এবং মিথ্যা। যার ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র নানা রূপ আমরা, পুরুষেরা...

বার্তা২৪: পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বিপরীতে মাতৃতান্ত্রিক সমাজের রূপকল্প নিয়ে কি এই বইটিতে কাজ করতে চেয়েছেন?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: তা বলা যেতে পারে... তবে তা-ই সব নয় নিশ্চয়ই। তবে পুরুষতন্ত্র, এই বইয়ের তূণে যতগুলি আছে বাণ, তার প্রায় সবক’টির লক্ষ্য।

বার্তা২৪: বইটিতে কয়টি কবিতা আছে, কবিতাগুলো কী কী ছন্দে লেখা হয়েছে?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: বইটা চারটা প্রধান পর্বে ভাগ করা, তাতে মোট ১০৫টা সনেট আছে, আর আছে প্রতিটা পর্বের একটা করে প্রবেশক সনেট। একুনে ১০৯। ছন্দ সর্বত্রই অক্ষরবৃত্ত। তবে দুই-এক জায়গায় অক্ষরবৃত্তের মোড়কে গোপনে অন্য ছন্দও আছে। তারা গোপন থাকুক। স্নেহভাক্ হিজল জোবায়ের তাদের ধরে ফেলবার আগ-পর্যন্ত।

বার্তা২৪: ‘ছুরিতে ঠিকরানো আঁধিয়ার’ বইটি সম্পর্কেও জানতে চাইব।
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: ‘দশ মহাবিদ্যা’র মতো, এটি কোনো থিম-ভিত্তিক বই নয়। কবিতার সঙ্কলন বরং। গত বেশ-কবছর ধরে লেখা নানা কবিতা, যেগুলিকে কোনো বইয়ে পোরা হয় নাই, তারাই হেথা বিরাজমান।

বার্তা২৪: আপনার পূর্ববর্তী কবিতার বইগুলোর সাথে ‘দশ মহাবিদ্যা’ এবং ‘ছুরিতে ঠিকরানো আঁধিয়ার’-এর পার্থক্য আছে কি, থাকলে কী সেই পার্থক্য?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: ঠিক ওভাবে নিজের কবিতার ব্যাপারে কথা বলা কঠিন, খানিকটা হঠকারীও বটে সে-চেষ্টা। ‘মহামায়া’ (‘দশ মহাবিদ্যা’-র আদি নাম) যেভাবে লেখা হয়েছে, তেমনভাবে আর কোনো লেখাই আমি লিখিনি। তাই, অন্ততঃ লিখন-প্রক্রিয়ার দিক থেকে এটি অভিনব। আবার ‘ছুরি’-তে বেশ-কিছু লেখা আছে যাদেরকে, আমার কাব্যপরিক্রমায় বেশ বড়-ধরনের উল্লম্ফন বলা যায়, তবে সেগুলি কোনগুলি তা আমি বলব না। এসব বলাবলি অন্যের করবার কথা।

বার্তা: আপনার প্রথম বই তো ছিল চর্যাপদের অনুবাদ—‘অন্তউড়ি’, প্রথম বই হিসেবে কেন চর্যাপদ অনুবাদ-কে বেছে নিয়েছিলেন?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: বেছে নিইনি। ইট জাস্ট্ হ্যাপেন্ড দ্যাট ওয়ে। অনুবাদটা হয়ে গেছিল, ভাবলাম বই করি। তখন তো জানিও না বই কিভাবে করে... ওভাবেই।

বার্তা২৪: আপনি একবার বলেছিলেন, বর্তমান সময়ে পুরুষ কবিদের তুলনায় নারী কবিদের কবিতা উৎকৃষ্ট মনে হয় আপনার কাছে, এ বক্তব্যের একটা ব্যাখ্যা দেন। নারী কবিদের কবিতার কী-কী গুণ আপনাকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত করেছে সে বিষয়টি জানতে চাই।
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: বই নিয়ে আলাপে এই প্রসঙ্গ কেন ঠিক বুঝতে পারলাম না। তবে জবাব দিতে দ্বিধা নাই আমার। নারী কবিদের কবিতা পড়লে মনে হয়, তাদের বলবার আছে কিছু। হয়তো বলবার সব কলাকৌশল আয়ত্ত হয়নি এখনো, কারো-কারো, কিন্তু সেরেফ তারিফাশে তারা লেখে না। ফ্রি তারিফ অবশ্য পায় তারা, কিন্তু সেগুলো আসলে কবিতার নয়, চেকনাইয়ের, হয়তো।

বার্তা২৪: বাংলা সাহিত্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আপনার অভিমত কী?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: পরিস্থিতি মারহাবা। উন্নয়নের পথে এত ধাপ এগিয়েছে বাংলা সাহিত্য যে এখন পিক্সি-ডাস্ট দরকার, উড়তে। সিঁড়ি আর অবশিষ্ট নাই। করপোরেট সাহিত্য, এনজিও সাহিত্য, বুরোক্র্যাট সাহিত্য, সবকিছুরই চূড়ান্ত হয়েছে। বড়-বড় হাতির দাপাদাপি আমাদের বাদাবনে। আর পাঁচটা শিল্প-মাধ্যম (যথা গান, নাটক, সিনেমা) কবিতাও স্টার-ইজমের তাঁবেতে ঢুকে যখন গেছে, এবার হবে উচ্চ ফলন এবং বিপণন... সামনের সোনালি দিনের ধাঁধায় আমার নয়ন আঁধার।

বার্তা২৪: আপনি কি এখন পরবর্তী কোনো বই নিয়ে কাজ করছেন বা পরিকল্পনা করছেন?
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ: করছি না। বই লেখা আমার পেশা বা নেশা নয়। হলে হয়, নাইলে নাই। লেখা হয় না, সময় হয় না, তার ক্ষোভ খুবই আছে। আশা করি কোনোদিন লিখব। একটা কবিতা... যার অভিঘাতে একজন অন্তত মরে যাবে।

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীতকিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান

ছবি: সংগৃহীতকিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিষ্ঠ চিকিৎসক, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব ডা. এ. এ. মাজহারুল হক এবং রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ ছয় কীর্তিমানকে সম্মাননা প্রদান করেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান।

এতে সম্মাননা বক্তৃতা করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ।

বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননাপ্রাপ্তদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের আইনপেশার কৃতীজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হক।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ পেয়েছেন ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, প্রবীণ সাংবাদিক মু আ লতিফ ও আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন এবং প্রয়াত শাহ আজিজুল হকের পরিবারের পক্ষে ভাতিজা এডভোকেট শাহ আশরাফ উদ্দিন দুলাল ও মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবীর পক্ষে তার মেয়ে গৌরি রাণী দেবী সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।

 এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমান।


অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সমাজকর্মী আবদুর রহমান রুমী, সাংবাদিক শেখ মাসুদ ইকবাল, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মননা অনুষ্ঠান শেষে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ২০১৫ সাল থেকে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে।

;

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্য রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা রয়েছে: ড. মাহফুজ পারভেজ



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

  • Font increase
  • Font Decrease

বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন'র নির্বাহী পরিচালক ড. মাহফুজ পারভেজ বলেছেন, 'বাংলার গৌরবদীপ্ত জনপদ কিশোরগঞ্জের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিকাশ ও রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা রয়েছে।'

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম স্মরণ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি সম্মাননা বক্তব্য প্রদানকালে আরো বলেন, 'অবক্ষয়, অন্ধকার ও অজ্ঞানতার বিরুদ্ধে আলোকিত সমাজ গঠনে ইতিহাস-ঐতিহ্যের শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।'

বরিষ্ঠ চিকিৎসক, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব ডা. এ. এ. মাজহারুল হক এবং রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক স্থানীয় ছয় কীর্তিমানকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার।

মাজহারুন-নূর সম্মাননা অনুষ্ঠান

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবদুর রহমান রুমী, সাংবাদিক শেখ মাসুদ ইকবাল, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, মহিলা পরিষদ সম্পাদক আতিয়া রহনান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এতে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, মহিলা পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট মায়া ভৌমিক, সাহিত্য সম্পাদক বাবুল রেজা, ছড়াকার সামিউল হক মোল্লা, ঈসাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান বদরুল হুদা সোহেল, কিশোরগঞ্জ নিউজ প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননাপ্রাপ্তদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের আইনপেশার কৃতীজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হক।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ পেয়েছেন ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, প্রবীণ সাংবাদিক মু আ লতিফ ও আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন এবং প্রয়াত শাহ আজিজুল হকের পরিবারের পক্ষে ভাতিজা এডভোকেট শাহ আশরাফ উদ্দিন দুলাল ও মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবীর পক্ষে তার মেয়ে অধাপিকা গৌরি রাণী দেবী সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।

সম্মননা অনুষ্ঠান শেষে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে স্মরণ সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতারের পূর্বে দোয়া পরিচালনা করেন জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অ্যাডভোকেট গাজি এনায়েতুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু। অনুষ্ঠানে স্পন্সর হিসাবে যুক্ত ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড।

প্রসঙ্গত, ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ২০১৫ সাল থেকে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

;

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান



কনক জ্যোতি,  কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে ছায়ানট (কলকাতা) এবং লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস যৌথভাবে আয়োজন করে একটি কবিতা সন্ধ্যার। অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতায় অবস্থিত একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট তাপাস্তে - তে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছায়ানট (কলকাতা)-এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক এবং পরিকল্পনা করেন  লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিৎ রায়।

এই বিশেষ দিনে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করা হয় বাংলা এবং স্প্যানিশে। বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতার ভাষায় এক হয়ে যায় বাংলা এবং স্পেন। এক করলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এই আয়োজন।

বাংলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সৌভিক শাসমল, তিস্তা দে, দেবলীনা চৌধুরী এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ ও পাঠ করেন শুভজিৎ রায়। অনুষ্ঠানটি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথভাবে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র বাসভবনে। প্রায় ৫০ জন কবি এবং বাচিক শিল্পী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন কবির কবিতা এই অনুষ্ঠানে শোনা যায়।

;

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;