ছায়ানটে অনুষ্ঠিত হলো সমধারা কবিতা উৎসব

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে পোট্রেট তুলে দিচ্ছেন প্রধান অতিথি শ্যামল দত্তসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে পোট্রেট তুলে দিচ্ছেন প্রধান অতিথি শ্যামল দত্তসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ

ছায়ানটে অনুষ্ঠিত হলো ইসলামী ব্যাংক সমধারা কবিতা উৎসব-২০২০। ষষ্ঠবারের মতো এই আয়োজনে ২০১ জন অগ্রজ ও অনুজ কবি-লেখক অংশগ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি কলকাতা থেকেও কবিরা অংশগ্রহণ করছেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, কবিতা মানুষকে সুন্দরের পথে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, কবিতার ভিতর দিয়ে মানব জাতির বিবর্তনের ইতিহাস জানা যায়। কবিরা কবিতা লিখে আনন্দ পান, জীবন উপভোগ করেন আর আমি কবিতা পড়ে আনন্দ পাই, জীবন উপভোগ করতে চাই। কবিতার ভেতর আমরা এক মানবিক সমাজ পাই। কবিরা দুর্নীতিবাজ হতে পারে না। তারা মানুষের মনে কষ্ট দিতে পারে না। নতুন ও তরুণ লেখকদের উৎসাহ দিতে সমধারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। আমরা একটি ইতিবাচক বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ কাজটি করতে তরুণদের প্রাণশক্তিকে একুশের চেতনায় দীক্ষিত করতে হবে। কারণ, একুশ আমাদের প্রতিনিয়ত সাহসী হবার, দেশপ্রেমিক হবার অনুপ্রেরণা যোগায়। ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের প্রধান মিলনায়তনে

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও কালের কন্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন ও লিটলম্যাগ আন্দোলনের পুরোধা শব্দ সম্পাদক কবি সরোজ দেব।

বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার প্রয়াসে একুশ শতকের কবিদের মূল্যায়ন করার লক্ষ্যে ৬ষ্ঠবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করে সাহিত্য ও মাসিক কাগজ সমধারা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি হেলাল হাফিজ, পশ্চিমবঙ্গের শক্তিমান কবি মৃণালবসু চৌধুরী, বাচিক শিল্পী কবি হাসান কল্লোল।

বিজ্ঞাপন

এবারের উৎসবে ‘সমধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করা হয় কথাসাহিত্যে সেলিনা হোসেন ও শিশুসাহিত্যে রহীম শাহকে। তাদের হাতে ‘সমধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২০’ সম্মাননা মূল্যমান ২০ হাজার টাকার চেক এবং পোট্রেট তুলে দেন প্রধান অতিথি শ্যামল দত্ত। এরপর পদাবলীর যাত্রা-২০২০ শিরোনামে একটি কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এটি আগত কবিদের কবিতা নিয়ে সংকলন।

এছাড়া সমধারার ৭৫তম সংখ্যাও মোড়ক উন্মোচিত হয়। ভাষা আন্দোলনে অগ্রভাগে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন ৩০ জন ভাষাসৈনিকের সংগ্রামী জীবন নিয়ে সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমধারা সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি কবি কাইয়ূম নিজামী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন।

উৎসবের প্রথম পর্বে বাংলা কবিতার রাজকুমারখ্যাত হেলাল হাফিজের ১২টি কবিতা নিয়ে ‘‘যে জলে আগুন জ্বলে’’ নামে একটি প্রযোজনা উপস্থাপন করা হয়। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতাগুলো নির্বাচন করা হয়েছে। এতে প্রেম পর্যায়ের ৬টি রবীন্দ্র সঙ্গীতও ছিল। প্রযোজনার মূল আকর্ষণ থাকবে কবি হেলাল হাফিজ। সমধারা শিল্পীদের সাথে তিনিও পারফর্ম করেছেন। কথা বলেছেন কবিতাগুলোর প্রেক্ষাপট নিয়ে। আবৃত্তি প্রযোজনাটি গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন সালেক নাছির উদ্দিন। শেষ পর্বে ছিলো উৎসবের মুল আকর্ষণ পালা। সমধারার বাৎসরিক এই আয়োজনে সবসময় ভিন্নতা থাকে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনা চলছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগী জীবনের উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ে সায়িক সিদ্দিকীর গ্রন্থনা ও উপস্থাপনায় পরিবেশিত হয় “ময়ূখমালীর পালা’।

উল্লেখ্য, সাহিতত্যের কাগজ সমধারা নিয়মিত প্রকাশনার সাথে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস গবেষণা, অবহেলিত শিশুদের স্বাক্ষরজ্ঞানসহ সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবং একুশ শতকের কবিদের মূল্যায়ণ করার লক্ষ্যে সমধারা কবিতা উৎসবের আয়োজন করছে। পাশাপাশি খ্যতিমানদেরও সম্মান জানিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে সমধারা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয় কবি মৃণাল বসুচৌধুরী, ২০১৮ সালে কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, ২০১৭ সালে কবি নির্মলেন্দু গুণ, ২০১৬ সালে কবি হেলাল হাফিজকে। এবারের উৎসব উদ্বোধন করেছেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ও কবি সরোজ দেব। সমধারার সম্পাদকীয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বছর ২০২১ সালে কথাসাহিত্যে ‘‘সমধারা সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করবেন ইমদাদুল হক মিলন ও কবিতায় সরোজ দেব।