বৃষ্টি উপেক্ষা করে বইমেলায় ক্রেতা-পাঠক
বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল ২৪ ও ২৫ তারিখ বৃষ্টি হতে পারে। সেই হিসেবে বইমেলার স্টল মালিকদের আগাম সর্তকতা করেছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি। আবহাওয়ার পূর্বাভাসকে সত্য প্রমাণিত করে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে। বিকেল ৩টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার গেট খুলে দেওয়া হলে প্রথমে পাঠক ও দর্শনার্থী কম হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মেলায় এসেছেন বইপ্রেমীরা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেকটি স্টলে বৃষ্টির জন্য পলিথিন ও প্লাস্টিকের পর্দা দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে রেখেছেন মালিকরা। শুরুর দিকে ক্রেতা ও পাঠক কম হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাতা মাথায় বইমেলার স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে পছন্দের বই কিনছেন বইপ্রেমী পাঠকরা। ছাতা মাথায় সহপাঠীদের সঙ্গে বইমেলায় বই কিনতে এসেছেন ইডেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কুসুম শিকদার। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আর মাত্র কয়েকদিন আছে বইমেলা। শেষের দিকে মেলা ঘুরে ঘুরে নিজের পছন্দের বই কিনতে ভালোবাসি আমি। আজ মেলায় আসবো এটা পূর্বপরিকল্পিত তাই ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক মেলা খোলা থাকলে আমি আসবোই। সকাল থেকেই বৃষ্টি দেখে মেলায় আসার সময় নতুন ছাতা কিনে তারপরে এসেছি। পছন্দের তালিকা পূরণ করতে হলে একদিনও মেলায় এসে বই কেনা মিস দেওয়া যাবে না। তাই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মেলায় আসা।
গতরাত থেকেই বৃষ্টির জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া ছিল স্টল মালিক ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের। বৃষ্টি হলে পাঠক ও ক্রেতা সমাগম কম হবে এবং বিক্রিও কম হবে এমন একটা ভাবনা নিয়েই আজ বইমেলায় স্টল খোলা হয়েছে। শুরুর দিকে বৃষ্টির পানি থেকে বই বাঁচানোর জন্য প্রস্তুতি নিলেও সময় বাড়ার সাথে সাথে পাঠক সমাগম বাড়লে বই বিক্রির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। বৃষ্টি উপেক্ষা করে এভাবে পাঠক ও ক্রেতারা মেলায় আসবেন এতটা প্রত্যাশা ছিল না। আমরা যতটুকু আশা করেছিলাম তার থেকে অনেক বেশি পাঠক ও জনসমাগম হয়েছে। আজ বিক্রিও কম না তুলনামূলকভাবে। এমনটা বলছিলেন শোভা প্রকাশনীর একজন বিক্রয় প্রতিনিধি।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যান্য স্টল মালিক ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের সাথে কথা হলে তারাও এমনটাই জানান।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা একদিন পরে শুরু হলেও হিসেব অনুযায়ী মেলা চলবে আর চারদিন। বাণিজ্যিক ও ঐতিহ্যগতভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার এই চারদিন সবদিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বৃষ্টি একটা বাড়তি চাপ হিসেবেই আছে লেখক, প্রকাশক ও স্টল মালিকদের জন্য। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পাঠক, ক্রেতা ও জনসমাগম কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে লেখক-প্রকাশক ও স্টল মালিকদের।