বইমেলায় তালাত মাহমুদের ‘পথচারী’
অসাধারণ গল্প লিখেন তালাত মাহমুদ। কিন্তু প্রচারবিমুখ এই মানুষটির অসাধারণ সেই সব গল্পের খবর অনেকেই জানেন না। জানবেন কী করে? না প্রকাশক, না তালাত ভাই—কেউই জানানোর ব্যবস্থা করেন না।
প্রায় প্রতি বইমেলাতেই তালাত ভাই একটি করে বই বের করেন। তারপর চুপচাপ বসে থাকেন। ভাবেন, পাঠকরা ঠিকই খুঁজে নেবেন তার ভালো ভালো বই। কিন্তু ফেসবুকের এই যুগে কে কাকে খুঁজে নেয়, বলুন! সবাই তো সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে বলে, এই যে আমি, এই যে আমি!
তালাত ভাই এমন নির্লজ্জ জানান দিতে নারাজ। তিনি নিতান্ত ভদ্র মানুষ। তার সঙ্গে আমার পরিচয় এবিসি রেডিওতে। অল্প কিছুদিন আমি এবিসি রেডিওতে চাকরি করেছিলাম। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তালাত ভাইয়ের সহকর্মী হওয়ার। এমন ভদ্রলোক দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। আরও বিস্মিত হয়েছি যখন জানলাম, তালাত ভাই লেখালেখি করেন। তাঁর গল্প ও উপন্যাস পড়ে আমার বিস্ময় তুঙ্গ স্পর্শ করে। একাউন্টস সেকশনে চাকরি করেও যে এমন অনিন্দ্যসুন্দর গদ্য লেখা যায়, তা তালাত ভাইকে না দেখলে আমার অজানাই থেকে যেত।
তবে তালাত ভাইয়ের লেখক পরিচয়ের বাইরে আমি যে পরিচয় দিতে পছন্দ করি সেটি হচ্ছে, তিনি ভাই একজন অসম্ভব ভালো মানুষ। একালে যে গুণটির সবচেয়ে বড় অভাব, সেই গুণেরই চর্চা করে যাচ্ছেন তালাত ভাই।
এবারের বইমেলাতেও তালাত ভাইয়ের বই আসছে। নাম ‘পথচারী’। বইটির ফ্ল্যাপে লেখা আছে:
আকাশে সূর্য নেই, কিন্তু আলো থেকে গেছে! কোথাও জোছনা নেই কিন্তু চন্দ্র বিদ্যমান! এমন অদ্ভুত ক্ষণে পথচারী থমকে দাঁড়ালো! আর কত পথ পাড়ি দেবে সে? সেই বর্বর উলঙ্গ আদি থেকে সে হাঁটছে। বিংশ শতাব্দীতে পা রেখে দেখে,শালার সভ্যতাও নগ্ন। তাহলে কি হলো! যে পথচারীর গন্তব্যও পথ,তার যাত্রার উদ্দেশ্য কি? পথচারী পথের প্রথা ভেঙ্গে অবশেষে বসলো। আজ পথের সাথে পথচারীর কথোপকথন! পথচারী তার সমস্ত জীবনীশক্তি এক করে প্রশ্ন করলো-হে পথ,আমার গন্তব্য কোথায়?
থর থর করে মাটি কেঁপে উঠলো! বিনা মেঘে বিকট গর্জন হলো আকাশে! বাতাস ভারি করা এক অপার্থিব দীর্ঘশ্বাস অনুভব করলো পৃথিবী,পথচারী আর প্রশ্ন!তারপর…।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এ বইটি পাওয়া যাবে বর্ণ প্রকাশের ২৭৫ নম্বর স্টলে। প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু।
মারুফ ইসলাম, কথা সাহিত্যিক