একগুচ্ছ গোলাপের সুবাস



ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী
গ্রাফিক: বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবারের মতো এবারের বইমেলা সম্পর্কেও একটি পর্যালোচনা সংযোজিত হলো। এই লিস্টে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ, সীমাবদ্ধতা, রুচি ইত্যাদি প্রতিফলিত হয়েছে। সব বই আমার একার পক্ষে নিরীক্ষা করা কিংবা স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু তবু ঘুরেফিরে যা চোখে পড়ল, অন্যের রিভিউ থেকে চেখে দেখে যা মনে এলো, বিচারবুদ্ধি কী বলল সেই অনুযায়ী একটা লিস্ট তো করাই যায়। এখানে কোনো বিষয়ের ‘উল্লেখযোগ্য’ একাধিক বই থেকে ‘নির্বাচিত’ বই সিলেক্ট করা হয়েছে। ‘উল্লেখযোগ্য’ হলো উল্লেখের যোগ্য, অর্থাৎ নানাকারণে ভালো বই, কিন্তু ‘নির্বাচিত’ বই হলো তাদের মধ্য থেকে বিবিধ কারণে রীতিমত উল্লেখ করার মতো বই।

যেহেতু বইমেলা বিশাল, শত শত স্টল, গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৪৯১৯ (মোট বিক্রি হয়েছে ৮২ কোটি টাকা), এর মধ্য থেকে রিভিউ ছাড়া বই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এবারের বইমেলা আগের যে কোনো মেলার তুলনায় অনেক অনেক সুন্দর হয়েছে। পরিসর বেড়েছে। হাঁটাচলায় স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। একইসাথে, দুঃখের বিষয়, প্রচুর বেনোজলও প্রবেশ করেছে।

অধিকাংশ ভালো বই এসেছে মেলার মাসের অর্ধেকেরও পরে। তাহলে আর ১-বা-২ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরুর অর্থই বা কি; কিংবা সাড়া মাস জুড়ে মেলা জারি রাখার অর্থই বা কী? একইভাবে, মেলা বাড়ানোর অর্থই বা কী, কেননা যতই বাড়ানো হোক, শেষদিনের আগে মেলায় বই প্রকাশের অর্থই বা কী?



গ্রন্থমেলায় পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি, কাগজের আগাছা বেশি। আমি বলেছি, লেখক তুমি পালিয়ে যাও, সময় এখন পক্ষে নয়। একজন লেখক মন্তব্য করেছেন, বন্যার জল বেরিয়ে যাবে, পড়ে রইবে মননশীল পলি। হয়তো তা-ই। মনে রাখা দরকার, একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ একটি পরিশীলিত, সম্পাদিত, মননশীল শিল্পরূপ। এটা ঝাল-মুড়ির ঠোঙ্গা নয়, রাতারাতি ছাপিয়ে ফেললাম। মেলাটির নামই গ্রন্থমেলা, বইমেলা নয়। সব বই-ই গ্রন্থ হয় না। এবারে খাবারের দোকানগুলো ভালো ছিল। বেঙ্গলের দুধ-চা ছিল সবচেয়ে উপাদেয়। দেখা গেছে, বই কিনুক না-কিনুক, মাংস-লুচি-ফুচকার দেদার উদরং চলেছে।

এবারের বইমেলার একটি বিশেষ ব্যাপার হলো প্রচুর অনুবাদগ্রন্থ এসেছে। প্রচুর। ফিকশনের, অনুবাদ, নন-ফিকশনের অনুবাদ। বিজ্ঞানের অনুবাদ। ব্যাপক অনুবাদ। ফলে অনুবাদ ক্যাটিগরিতে ‘নির্বাচিত’ গ্রন্থের নাম আগেই পেশ করি—

নির্বাচিত অনুবাদ
ক) অনুবাদ-ফিকশন—১. গোলাপের নাম, উমবের্তো একো, অনুবাদ: জি এইচ হাবীব, বাতিঘর।
খ) অনুবাদ-নন-ফিকশন—১. নীরদ সি চৌধুরীর মন, ইয়ান অ্যালমন্ড, হাসান আল জায়েদ এবং রায়হান রহমান, ইউপিএল।
২. নাইন-ইলেভেন, নোম চমস্কি, অনুবাদ: মুহম্মদ গোলাম সারোয়ার, চৈতন্য।
গ) অনুবাদ-বিজ্ঞান—১. সিক্স ইজি পিসেস, রিচার্ড ফাইনম্যান, অনুবাদ: উচ্ছ্বাস তৌসিফ, প্রথমা।
২. ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল, মিচিও কাকু, অনুবাদ: আবুল বাসার, প্রথমা।
ঘ) অনুবাদ-সাহিত্য—১. তরজমাগুচ্ছ, আলম খোরশেদ, পাঠক সমাবেশ।
ঙ) ব্যতিক্রমী অনুবাদ—১. বিবর্তনবাদী জ্ঞানতত্ত্ব, কার্ল পপার, অনুবাদ: আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, পাঠক সমাবেশ।

নির্বাচিত ভূমিকা
১. সেলিম রেজা নিউটনের ভূমিকা, তদীয় অনুবাদে নোম চমস্কির ভবিষ্যতের সরকার, পেন্ডুলাম।

নির্বাচিত কবিতাগ্রন্থ
১. এ গল্পের শেষ নেই শুরুও ছিল না, আল মাহমুদ, সরলরেখা।
২. দশ মহাবিদ্যা, সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, বৈভব।
৩. পৃথিবী এলোমেলো সকালবেলায়, মাসরুর আরেফিন, পাঠক সমাবেশ।

উল্লেখযোগ্য কবিতাগ্রন্থ
১. সামান্য দেখার অন্ধকারে, আলতাফ শাহনেওয়াজ, প্রথমা।
২. আমাকে এবার পিছমোড়া করো, কামরুজ্জামান কামু, প্রথমা।

নির্বাচিত কবিতা-সংকলন
১. নির্বাচিত কবিতা, আলফ্রেড খোকন, কবিতাভবন (বাতিঘর)।
২. নির্বাচিত কবিতা, মারুফ রায়হান, ধ্রুবপদ।

নির্বাচিত কবিতা
১. “নুর নুর বলে চমকায় পাখি” কবিতাটি সারাজাত সৌম’র একইনামের (নুর নুর বলে চমকায় পাখি) কবিতা গ্রন্থের নাম-কবিতা, বেহুলা বাংলা।

নির্বাচিত বিজ্ঞান
১. আমাদের মহাজাগতিক পরিচয়, আহমাদ মোস্তফা কামাল, প্রথমা।
২. রোগ জীবাণুর গল্প, সঞ্জয় মুখার্জী, আদর্শ।

পড়ে-রাখা-ভালো বিজ্ঞান
১. শ্রোডিঙ্গারের বিড়াল, আবদুল গাফফার, অণ্বেষা।

নির্বাচিত শিশুপাঠ
১. মধু শিকারি, অনুবাদ: শামিম আজাদ, ইউপিএল।
২. আজব দেশে অ্যালিস, শিশু-নাট্যরূপ অনুবাদ: আবদুস সেলিম, প্রকৃতি-পরিচয়।

ব্যতিক্রমী কিশোর-বিজ্ঞান
১. অ-পদার্থবিজ্ঞান, রাতুল খান, আদর্শ।

নির্বাচিত কিশোর-ইতিহাস
১. বাংলা ও বাঙালিঃ মুক্তি সংগ্রামের কিশোর-ইতিহাস, ড. মোহাম্মদ হাননান, ময়ূরপঙ্খি।
২. শেখ মুজিব: কিশোর জীবনী, আহমাদ মাযহার, সময়।

নির্বাচিত নন-ফিকশন
১. কবিতাকলা ভবন, মৃদুল মাহবুব, বৈভব।
২. দূরের জানালা, মাসুদুজ্জামান, পরান-কথা।
৩. ভাষার প্রতিভা, রাজু আলাউদ্দিন, পেন্ডুলাম।

ব্যতিক্রমী নন-ফিকশন
১. চর্যাপদ: কালে কালান্তরে, রাজু আলাউদ্দিন, জার্নিম্যান।
২. বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে, ফাহাম আবদুস সালাম, একাদেমিয়া।

নির্বাচিত প্রবন্ধ
১. চেতনার উত্তরাধিকার, সম্পাদরা: পুলক দেবনাথ ও সাদিয়া মাহজাবিন ইমাম, অন্যপ্রকাশ।

নির্বাচিত গবেষণাগ্রন্থ
১. দারিদ্র্যের অর্থনীতি, আকবর আলি খান, প্রথমা।
২. দক্ষিণ এশিয়ার ডায়াসপোরা সাহিত্য, মোজাফ্ফর হোসেন, পাঞ্জেরী।

নির্বাচিত গল্পগ্রন্থ
১. এখানে জাদু শেখানো হয়, মুরাদুল ইসলাম, বৈভব।
২. মনোজবাবুদের বাড়ি, হরিশংকর জলদাস, প্রথমা।
৩. বৈদিক পাখির গান, সাদিয়া মাহজাবিন ইমাম, চৈতন্য।
৪. দ্বিতীয় ভ্রান্তিপাশ, সাগুফতা শারমীন তানিয়া, প্রথমা।

ব্যতিক্রমী ফিকশন
১. হলদে ফুলের বিকেল, পাপড়ি রহমান, পরানকথা।
২. রোদ্দুর খুঁজে ফিরি, ফাহমিদা বারী, চৈতন্য।

নির্বাচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস
১. কাসিদ, জয়দীপ দে, দেশ পাবলিকেশন।

নির্বাচিত জর্নাল
১. কবিতালেখকের জার্নাল, নির্ঝর নৈঃশব্দ্য, চন্দ্রবিন্দু।
২. মা-বেলার ডায়েরি, আনন্দময়ী মজুমদার, বিপিএল।

নির্বাচিত জীবনী
১. বিজ্ঞানসাধক দুই বন্ধু, আলী নাঈম, বিপিএল।
২. অগ্রনায়কেরা, স্বকৃত নোমান, রোদেলা।
৩. ক্লাইভ, আদনান আরিফ সালিম, অন্বেষা।
৪. নভেরা, আনা ইসলাম, জার্নিম্যান ও অন্যপ্রকাশ।

নির্বাচিত সায়েন্স ফিকশন
১. তৃতীয় নারী, মাসউদুল হক, নাগরী।

নির্বাচিত সাক্ষাৎকার
১. গবেষণার দশানন, (গোলাম মুরশিদের সাথে আলাপ) রাজু আলাউদ্দিন, বিপিএল।
২. শিল্পী হওয়ার সব গুণাবলি নিজেকে অর্জন করতে হয়, শিল্পী রনবীর সাথে আলাপ, রাজু আলাউদ্দিন, পাঞ্জেরী।

নির্বাচিত প্রকৌশল গ্রন্থ
১. পদ্মা সেতু, এনায়েত চৌধুরী, প্রকৃতি-পরিচয়।

বিশেষ নির্বাচিতগ্রন্থ
১. বিনয় মজুমদার নিয়ে মলয় রায়চৌধুরীর প্রবন্ধসমগ্র-১, বৈভব।

এবারের বইমেলায় গল্পগ্রন্থের বেশ জয়ধ্বনি লক্ষ করেছি। সেই তুলনায় উপন্যাস মনে হলো, কিছুটা দাপট হারিয়েছে। তবু কয়েকটি উপন্যাস নানাভাবে আলোচনায় এসেছে। পাঠ শেষ করতে পারিনি বিধায়, ক্যাটিগরিভুক্ত করতে পারছি না।

বিচারাধীন উপন্যাস
১. আলথুসার, মাসরুর আরেফিন, প্রথমা।
২. দ্যা নর্থ এন্ড, বর্ণালী সাহা, পাঠক সমাবেশ।
৩. জাদুকরী ভ্রম, হামিম কামাল, চন্দ্রবিন্দু।
৪. তিমিরযাত্রা, মোজাফ্‌ফর হোসেন, পাঞ্জেরী।

এবারের মেলার সবচেয়ে ব্যতিক্রমী প্রকাশনা হলো বৈভব এবং পেন্ডুলাম। উভয়েই তাদের পরিবেশনা ব্যতিক্রমী রেখেছেন, আচরণ বন্ধুত্বসুলভ রেখেছেন। প্রথমা প্রকাশন সবসময়েই ভালো বই আনে, এবারও কয়েকটিই এনেছে, তবে এবারে তাদের সংগ্রহ আগের মেলার মতো মনোলোভা নেই, বইয়ের প্রোডাকশনও দুর্বল, বিশেষত কবিতার বইগুলো আলাদা মনোযোগ পাওয়ার দাবি রাখে। এবারে কম হলেও অনেকগুলো নজরকাড়া এবং ব্যতিক্রমী গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন বাতিঘর এবং চৈতন্য। প্রকৃতি-পরিচয় সবসময়েই খুব ভালো বই আনেন, সুলভও, কিন্তু প্রচার পায় নাই। এবারও নাই। তাঁরা প্রচার-বিমুখ শুধু নয়, প্রচার-বিরোধীও।

সৌভাগ্যক্রমে ২০২০ এর মেলায় ঘুরতে ঘুরতে পুরনো তিনটি ভালো বই নজরে এলো। জীবনানন্দ জীবনের ভালো কিছুকেই ‘শালিখ’ বলেছেন, কাজেই এই পুরাতন তিনটি শালিখ হলো—১. গ্রিক উইট, মুরাদুল ইসলাম, স্বরে-অ। ২. আমার গদ্য, ফরিদ কবির, অ্যাডর্ন। ৩. কোয়ান্টাম রাজ্যে ডালিমকুমার, খন্দকার রেজাউল করিম, সূচয়নী পাবলিশার্স। এই দারুণতম গ্রন্থত্রয়ী, পাঠক না পড়লে মিস করবেন।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ পুরোটা অন্ধকার হয়ে যায় যদি দুটি বই না-আসত। প্রথমটি বঙ্গবন্ধুর লেখা আমার দেখা নয়াচীন, প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। আর দ্বিতীয়টি গোলাম হোসেন হাবীবের অনুবাদগ্রন্থ গোলাপের নাম। আমি প্রিয় হাবীব ভাইয়ের হাতে এবং বঙ্গবন্ধুর পরিজনদের হাতে তুলে দিতে চাই মদীয় ‘অদৃশ্য পুরস্কার’। এর কোনো অর্থমূল্য নাই, কোনো মিডিয়া কভারেজ নাই, কোনো আলাদা দাবি নাই। আছে স্বেদস্নিগ্ধ ভালোবাসা। নিজে মেলায় গিয়ে, নিজে খুঁজে, নিজে কিনে, নিজের বিচারবুদ্ধিতে যাচাইকৃত বই বিশ্লেষণ করে এই পুরস্কার আমি প্রদান করছি। লেখক তুমি ধন্য হও।

এবারের মেলায় আমার দুটি বই একটাই পৃথিবী, প্রকৃতি-পরিচয় এবং অনুবাদ ও সম্পাদিত পরমাণু বিদ্যুতের দিগ্বিজয়, চৈতন্য। প্রথমটি কিশোর-পাঠ্য বিজ্ঞান-গ্রন্থ, দ্বিতীয়টি প্রকৌশল শাখার বই।

এই বইমেলার সবচেয়ে আলোচিত মিম প্রকৃত লেখকের কয়টা মুদ্রণ হয়! লেখক কে—মোটিভেশনাল বক্তা নাকি বাংলা গদ্যের সাথে পরিচয় আছে এমন কেউ? আপনি কী বলেন?
অতএব সাইন আউট বইমেলা ২০২০। তামাম শুদ।

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান



কনক জ্যোতি,  কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে ছায়ানট (কলকাতা) এবং লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস যৌথভাবে আয়োজন করে একটি কবিতা সন্ধ্যার। অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতায় অবস্থিত একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট তাপাস্তে - তে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছায়ানট (কলকাতা)-এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক এবং পরিকল্পনা করেন  লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিৎ রায়।

এই বিশেষ দিনে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করা হয় বাংলা এবং স্প্যানিশে। বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতার ভাষায় এক হয়ে যায় বাংলা এবং স্পেন। এক করলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এই আয়োজন।

বাংলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সৌভিক শাসমল, তিস্তা দে, দেবলীনা চৌধুরী এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ ও পাঠ করেন শুভজিৎ রায়। অনুষ্ঠানটি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথভাবে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র বাসভবনে। প্রায় ৫০ জন কবি এবং বাচিক শিল্পী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন কবির কবিতা এই অনুষ্ঠানে শোনা যায়।

;

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;