আমেরিকান চলচ্চিত্রে বর্ণ-বিদ্বেষ



গ্রেগ গ্যারেট ।। অনুবাদ: মামুনুর রশিদ তানিম
অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

  • Font increase
  • Font Decrease

ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের শার্লটসভিলে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের মিছিলের ঠিক বছর এক পরে, ২০১৮ সালের আগস্টের ১০ তারিখে, স্পাইক লি’র সিনেমা ‘ব্ল্যাকক্ল্যান্সম্যান’ প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছিল আমেরিকায়। সিনেমাটির অন্তিম পরিণতিমূলক কিছু দৃশ্যে অনুনাদ পাওয়া যায় ডি. ডব্লিউ. গ্রিফিথের সম্পাদনা স্টাইলের, যিনি কোনো দৃশ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে গল্পের উপাদানসমূহের মধ্যে ক্রস-কাটিং কৌশলের প্রবর্তক ছিলেন। একই স্টাইলে লি-ও আগে-পিছে করে দুটি দৃশ্যের মাঝে সমন্বয় ঘটান যেখানে স্বয়ং গ্রিফিথেরই ১৯১৫ সালের সিনেমা ‘দ্য বার্থ অফ আ নেশন’ একটি মুখ্য ভূমিকা রাখে।

একটি দৃশ্যে দেখা যায়; গ্র্যান্ড উইজার্ড ডেভিড ডিউক (টোফার গ্রেইস) কর্তৃক আয়োজিত কু ক্লাক্স ক্লানের ব্রত অনুষ্ঠান সম্পূর্ণতা পাচ্ছে, আধুনিক ক্লান সৃষ্টিতে মদদ দান করা গ্রিফিথের ওই সিনেমার, হৈ-হুল্লোড়ে পূর্ণ একটি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে। আরেকটি দৃশ্যে দেখা যায়, জেরোমি টার্নার (হ্যারি বেলাফন্তে) ১৯১৬ সালে সংঘটিত, তার বন্ধু জেসি ওয়াশিংটনের আইনবহির্ভূত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা করছেন ঘরভর্তি আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষার্থীদের কাছে। টেক্সাসের ওয়াকো শহরে, যেখানে আমি তিন দশক ধরে শিক্ষাদান করেছি, সেই শহরে ১৬ হাজার মানুষের সামনে জেসি ওয়াশিংটনকে নপুংসক করে, পুড়িয়ে, যন্ত্রণাদায়ক এক মৃত্যু দেওয়া হয়েছিল। জেরোমি ‘দ্য বার্থ অফ আ নেশন’ চলচ্চিত্রটিকেই এমন ভয়ঙ্কর, প্রকাশ্য সহিংসতার কারণ হিসেবে উদ্ধৃত করেন। এবং প্রকৃতপক্ষে তেমনটিই ছিল।

এই দুটি দৃশ্যই প্রমাণ করে বর্ণ, সহিংসতা এবং পরিচিতির ধারণা রূপায়ণে বা নববলে বলীয়ান করতে একটি চলচ্চিত্র কতখানি শক্তিধর হয়ে উঠতে পারে। জেমস বল্ডউইন যেমনটি বলেন, “ক্যামেরার ওই ভাষা, আমাদের স্বপ্নের ভাষা।” এবং অবশ্যই, দুঃস্বপ্নেরও ভাষা।

দ্য বার্থ অফ আ নেশন-এর পোস্টার

কিন্তু লি-র সিনেমায় আমরা এও দেখি; কিভাবে বাঁধাধরা নিয়মের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র আমাদের ধাক্কা দিতে পারে, শক্তির মুখে সত্য বলতে পারে, এবং ঘৃণার দিকে নয় বরং বোধশক্তির সম্মুখে দর্শককে ধাবিত করতে পারে। যদিও এর গল্প বিন্যস্ত হয়েছে ১৯৭০-এ, কিন্তু শেষ দৃশ্যে ব্ল্যাকক্লান্সম্যান তার সহিংসতা এবং বর্ণবাদের সাথে আমেরিকার দূরবর্তী অতীতের সংযুক্ততা এবং তার (চলচ্চিত্রের) বর্তমানের সাথে আমাদের বর্তমানের সংযুক্ততা স্থাপন করে (যেমনটি সমালোচক অলিভার জোনস লিখেছেন, “হ্যাঁ, এটি একটি পিরিয়ড সিনেমা; কিন্তু বিষয়টি হলো সেই সময় এখন, তখন, সামনে এবং সবসময়ই থাকবে।”)। লি আমাদের এও স্মরণ করিয়ে দেন, সিনেমা ভয়ঙ্কর বার্তা যেমন বহন করতে পারে, তেমনি আশার আলোও দেখাতে পারে।

চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য মিডিয়া যে, ধর্মান্ধতা এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর একটি শক্তিতে পরিণত হয়েছে, তা আমাদের পরিষ্কার চোখেই দৃষ্টিগোচর হয়। আত্মা বিনাশকারী পুরাকথাগুলো চাইলেই আমরা চিহ্নিত এবং প্রত্যাখ্যান করতে পারি। খুঁজে নিতে পারি আত্মার শুদ্ধি ঘটানো পুরাকথাগুলোকে। বর্ণবিদ্বেষী, বাঁধাধরা বা অতি মামুলি উপাদানগুলো চিনেই আমরা একটি সিনেমা দেখতে পারি; এবং ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েই আমরা এমন সকল গল্প খুঁজতে পারি, যেগুলো প্রতিটি চরিত্রের বৈচিত্রতা এবং মানবিকতাকে আলিঙ্গন করে।

ব্ল্যাকক্লান্সম্যান সিনেমায় যেমন, তেমন আমাদের ইতিহাসেও, বর্ণ এবং মিডিয়া ওতপ্রোতভাবে সংযুক্ত। গত শতক ধরেই বর্ণবিদ্বেষীরা এই সিনেমা মাধ্যমটিকে ব্যবহার করেছে গৎবাঁধা বিষয়গুলোকে স্থায়ীভাবে জিঁইয়ে রাখতে এবং পক্ষপাতদুষ্ট ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে। তারা শ্বেতাঙ্গ বাস্তবতাকেই একমাত্র বাস্তবতা বলে চিত্রিত করেছে। তবে দ্বিতীয় একটি পর্যায় শুরু হয়, যখন চেতনাসম্পন্ন কিছু শ্বেতাঙ্গ চলচ্চিত্রকারেরা বর্ণবিদ্বেষের প্রবৃত্তিকে চিহ্নিত করে এবং তাদের বলা গল্পগুলোতে পরিবর্তনের উপায় অন্বেষণ করে। বাদবাকি শ্বেতাঙ্গ চলচ্চিত্রকারেরা, কালোদের জীবনকে আরো অর্থবহ এবং প্রতিনিধিত্বমূলক উপায়ে চিত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে তৃতীয় একটি পর্যায়ের সূচনা করে।

ব্ল্যাকক্লান্সম্যান-এর পোস্টার

পরবর্তীকালে, চতুর্থ পর্যায়ে কালোরা নিজেরাই বলতে শুরু করে নিজেদের গল্প এবং রূপায়ণ করতে থাকে নিজেদের জীবনধারা। পঞ্চম ধাপে, হলিউডের চলচ্চিত্রগুলো হালকাভাবে বহুসংস্কৃতির একটি ধারণা প্রদর্শন করে যেখানে বর্ণ সম্বন্ধীয় ভিন্নতাকে অনিবার্য বলে ধরে নেওয়া হয়। অবশেষে আমরা পৌঁছাই ষষ্ঠ ধাপে, যেখানে, ব্ল্যাকক্লান্সম্যানের মতোই, মূলধারার দর্শকদের জন্য কালোরঙের লোকদের দ্বারা নির্মিত সিনেমাগুলো অতীতের ক্ষতিকর সব পুরাকথাকে উল্টিয়ে দিচ্ছে, আমেরিকান সংস্কৃতির বিপদজনক গল্পগুলোকে অস্বীকার করছে। এমনকি হলিউডের গল্পবয়ানের ধরন এবং কৌশলগুলোকে, সেগুলোর ওপরই বাঁকিয়ে দিচ্ছে যাতে করে ওগুলো সচেতনতা এবং সমন্বয়সাধনের অস্ত্র হিসেবে প্রবর্তিত হয়।

একজন মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গ হিসেবে “পুনরুজ্জীবিত” শব্দটির বিশ্বাসযোগ্য ব্যবহার করতে পারাটা বেশ কষ্টসাধ্যই হবে আমার পক্ষে, তথাপি আমাদের বর্তমান সময় এবং জিজ্ঞাসাবাদের যে দায়িত্বভার অচিরেই আমরা নিতে যাচ্ছি তার সংযুক্ততা বোঝার জন্য এটি একটি চূড়ান্ত ধারণা। স্পাইক লি এটি জানতেন। এরিকা বাদু, ট্রেভন মার্টিন এবং কালো জীবন মূল্যবান বাণীর পূর্বেই তাঁর সিনেমাগুলো আমাদের ডাকছিল ঘুম ভেঙে উঠতে। এই ডাকই ‘স্কুল ডেইজ’ (১৯৮৮)-এর শেষ লাইন এবং ‘ডু দ্য রাইট থিং’ (১৯৮৯)-এর প্রথম লাইন। গোটা ব্ল্যাকক্লান্সম্যান জুড়েই এই ডাক প্রতিধ্বনিত হয়।

শুধু আফ্রিকান আমেরিকানগণ নন, সকল আমেরিকানকেই সজাগ হতে বলা হয়েছিল, অভিনিবেশ করতে বলা হয়েছিল, নতুন আতসকাচের মাঝ দিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল। আমরা কী দেখতে পছন্দ করি অথবা কী দেখতে আমাদের প্রণোদিত করা হয় তার বিরুদ্ধে সত্যিকার অর্থেই কী চলছে তা দেখতে বলা হয়েছিল। আরেকজন মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গ, ডেভিড ব্রুকস এটিকে নিরূপণ করেন এভাবে: “জেগে ওঠা মানে, আমূলগতভাবে সচেতন হওয়া এবং স্বাভাবিকভাবেই ভীতু হওয়া। জেগে ওঠা মানে, ক্ষমতার গঠনপ্রণালীতে যে পচন পরিব্যাপ্ত হচ্ছে তা নিয়ে অবগত থাকা।” তবে সৌভাগ্যক্রমে, একশ বছরের হলিউড ফিল্মমেকিংয়ের গল্প এবং ছবিগুলোতে বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতা কতখানি, সে-তদন্ত চালালে আমরা যা খুঁজে পাব, তা শুধুমাত্র পচন নয় বরং এরচেয়ে বেশি কিছু—অগ্রবর্তী হওয়ার একটি পথ।

ফেব্রুয়ারি ২০১৮-তে, ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালে ‘গেট আউট’ সিনেমার একটি প্রদর্শনীর পর মঞ্চে বর্ণ, সিনেমা এবং আরোগ্যলাভ বিষয়ক আলাপচারিতার অংশ ছিলাম আমি এবং ‘দ্য আটলান্টিক’ ম্যাগাজিনের লেখক ভান নিউকার্ক। সিনেমাটি নিয়ে তার ভূমিকায় ভান কথা বলেন, ক্যাথেড্রালের পালপিটে দাঁড়িয়ে ‘মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রে’র জীবনের শেষ রবিবারের হিতোপদেশ নিয়ে:

“একদিক থেকে এটি ছিল একটি মানসম্পন্ন পারমার্থিক পরীক্ষা। তিনি বাইবেলের একটি শাস্ত্র দিয়েই আরম্ভ করেছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি বলতে শুরু করেছিলেন রিপ ভ্যান উইংকলের গল্প, যেই লোক টানা ২০ বছর ঘুমানোর পর জেগে ওঠে। সে লোক ঘুমিয়ে পড়েছিল যখন আমেরিকা শাসিত হতো একজন ভাঁড় কর্তৃক এবং জেগে উঠেছিল বিপ্লবের পরবর্তীকালে।

কিং জুনিয়র, মহৎ আন্দোলনের সময়ে কী করে সজাগ থাকতে হয় সে-সম্বন্ধে মানুষকে নির্দেশনা দিতে গিয়ে একটি দৃষ্টান্তস্বরূপ এই উদাহারণটি ব্যবহার করেছিলেন। কিভাবে জাগ্রত থাকতে হবে, তা নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন বলে অনেকেই অভিমত প্রদান করেন। কিন্তু তুমি যদি সজাগ হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকো, তবে কিভাবে তুমি বর্ণ সম্পর্কে সচেতনতার জন্ম দেবে নিজের মাঝে এবং কিভাবে সেই ধাপে পৌঁছাবে যেখানে তুমি তোমার জীবন, বর্ণ এবং অ-বিদ্বেষী হয়ে ওঠার সাথে সংকটপূর্ণভাবেই নিযুক্ত হবে তা নিয়েও কথা বলেছিলেন তিনি।”

১৯১৫ হতে বর্তমানের আমেরিকান সিনেমার বর্ণবিদ্বেষের প্রকৃতিতে অনুসন্ধান চালানো দ্বারা, মঙ্গলকরকে আলিঙ্গন এবং ক্ষতিকর অতিকথাকে অনাবৃত এবং প্রত্যাখ্যান দ্বারা, এই চলচ্চিত্রগুলো কিভাবে বর্ণ এবং কুসংস্কারের প্রয়োজনীয় আলাপের দিকে ধাবিত করতে পারে (এবং করেছে) তা উপলব্ধি দ্বারা, এবং এই গোটা প্রক্রিয়ায় অ-বর্ণবিদ্বেষী হয়ে ওঠার চেষ্টা দ্বারা আমরা আমাদের অতীতের ‘বার্থ অফ আ নেশন’দের এবং বর্তমানের শার্লটসভিলের নিও-নাৎসিদের আত্মশুদ্ধির প্রস্তাব জানাতে পারি।

ডক্টর. কিংয়ের লক্ষ্য ছিল এমন একটি আমেরিকা, এমন একটি পৃথিবী, যেথায় মানুষকে গায়ের রঙ দ্বারা নয় বরং চরিত্রের বিষয়বস্তু দ্বারা পরিমাপ করা হবে—সে-লক্ষ্য অধরাই রয়ে গেল। তথাপি এটি এমন একটি লক্ষ্য যা সর্বোচ্চ অনুসন্ধানের দাবি রাখে, এবং অদ্ভুতভাবেই সত্য, আমাদের প্রায়শই বর্ণবাদী এই সাহিত্য এবং সংস্কৃতি হয়তোবা উন্নতির অভিমুখে এই যাত্রার একটি অংশ হতে পারে।

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান



কনক জ্যোতি,  কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে ছায়ানট (কলকাতা) এবং লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস যৌথভাবে আয়োজন করে একটি কবিতা সন্ধ্যার। অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতায় অবস্থিত একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট তাপাস্তে - তে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছায়ানট (কলকাতা)-এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক এবং পরিকল্পনা করেন  লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিৎ রায়।

এই বিশেষ দিনে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করা হয় বাংলা এবং স্প্যানিশে। বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতার ভাষায় এক হয়ে যায় বাংলা এবং স্পেন। এক করলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এই আয়োজন।

বাংলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সৌভিক শাসমল, তিস্তা দে, দেবলীনা চৌধুরী এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ ও পাঠ করেন শুভজিৎ রায়। অনুষ্ঠানটি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথভাবে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র বাসভবনে। প্রায় ৫০ জন কবি এবং বাচিক শিল্পী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন কবির কবিতা এই অনুষ্ঠানে শোনা যায়।

;

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;