ছাত্রদলের ওপর হামলার ঘটনায় বিচারসহ ৪ দাবি তুলল সাদা দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার বিচারসহ ৪ দাবি ঢাবি সাদা দলের ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
রোববার (২ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা এ প্রতিবাদ জানান। এছাড়াও হামলায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির নেতাকর্মীদের উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালান।
তিনি আরও বলেন, হামলায় ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামসহ অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। আহত নেতাকর্মীরা রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম যে, উপাচার্যের সঙ্গে ছাত্রদলের সাক্ষাৎ কর্মসূচি নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এটি প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে দেখলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সেই দায়িত্ব পালন করেনি।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আজ প্রতিনিয়ত তাদের (ছাত্রলীগের) নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গেস্টরুম নামক এক অপসংস্কৃতির মাধ্যমে আবাসিক হলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে নির্যাতন নিপীড়ন করা হচ্ছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সে সংবাদ আমাদের মর্মাহত করছে। আমাদের পক্ষ থেকে বারবার গেস্টরুম নামক মিনি টর্চার সেল বন্ধের দাবি জানানো হলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা আমরা দেখিনি। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকার সুযোগে ছাত্রলীগ হল ও ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভয়ারণ্যে পরিণত করে ফেলেছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি ৪ দফা দাবি উত্থাপন করে সংগঠনটি।
দাবিগুলো হলো:
(ক) ক্যাম্পাসে সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;
(খ) ২৭ সেপ্টেম্বরের হামলায় আহত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ;
(গ) ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইননানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং
(ঘ) ক্যাম্পাস ও হলে ক্রীয়াশীল ছাত্রসংগঠনসহ সকল দল-মতের সহাবস্থান ও নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালনের নিশ্চিয়তা বিধান করা ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকারসহ অন্তত ২০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।