জাবির 'বি' ইউনিটের ফলাফলে শিফট বৈষম্য চরমে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটভুক্ত সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদ, ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিক অনুষদ ও বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট এবং ‘ই’ ইউনিটভুক্ত বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত (ju-admission.org) এই ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশিত হয়।
প্রত্যেক ইউনিটে পুরুষ এবং নারী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পৃথক মোট আসনের বিপরীতে আসন সংখ্যার প্রায় দশগুণ শিক্ষার্থীর পৃথক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ‘সি’ ইউনিটে পৃথকভাবে প্রত্নতত্ত্ব ও ইংরেজি বিভাগ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের জন্য আলাদা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। একই ইউনিটে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্যও আলাদা মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির থেকে জানা যায়, ‘বি’ ইউনিটে ৩৮৬টি আসনের বিপরীতে ৪১ হাজার ৪৭৮ টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৭২৮ জন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পাশের হার ৩০.৭৭ শতাংশ।
অপরদিকে ‘সি’ ইউনিটে ৩৮৮টি আসনের বিপরীতে ৪১ হাজার ৪৫৫ টি আবেদন জমা পড়েছিল। যার মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ৩২ হাজার ৫১০ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। যেখানে পাশের হার ৫৭ শতাংশ।
এছাড়া ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ) ২০০টি আসনের বিপরীতে ১৮ হাজার ৯৭ টি আবেদন জমা পড়েছে। পাশের হার ৪০ শতাংশ।
এদিকে প্রতিবছরই ভর্তি পরীক্ষায় শিফট পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়ে আসছে। এবার বৈষম্য কমাতে ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা শিফটে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ‘বি’ ইউনিটের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায় এবারও শিফট পদ্ধতি চরমে।
এবার ‘বি’ ইউনিটে ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক দুইটি করে শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রদের প্রথম শিফট থেকে ৫৭ জন ও দ্বিতীয় শিফট থেকে ১৩৬ জন ভর্তিচ্ছু মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। যেখানে শতকরা হিসেবে প্রথম শিফট থেকে চান্সপ্রাপ্তির হার মাত্র ২৯.৫৩ শতাংশ।
অপরদিকে ছাত্রীদের প্রথম শিফট থেকে মাত্র ২২ জন (মোট তালিকার ১১.৩৯ শতাংশ) ও দ্বিতীয় শিফট থেকে ১৭১ জন (মোট তালিকার ৮৮.৬১ শতাংশ) ভর্তিচ্ছু মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, শিফট পদ্ধতিতে একটি বৈষম্য তৈরি হয়। তবে সব শিফটে প্রশ্ন একই ক্যাটাগরিতে অনেকগুলো সেটে হয়। আমরা শিফট পদ্ধতি থেকে বের হতে চেয়েছি। কিন্তু একাডেমিক কাউন্সিলে অনেক শিক্ষক এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারিনি।
'বি' ইউনিটের ফলাফলে শিফট ভিত্তিক চরম বৈষম্যের বিষয়ে অভিমত জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।