ঊর্দু বিভাগ আছে জানেন না কেউ, খবর রাখেন শুধু শিক্ষকেরা!



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘ঊর্দু বিভাগটা কোনদিকে জানেন নাকি’, এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম যেন আকাশ থেকে পড়লেন। অনেকটা নিশ্চিত হয়েই বললেন, ‘আমাদের কলেজে তো ঊর্দু বিভাগই নেই।’

পরে কলেজের প্রশাসনিক দপ্তরে গিয়ে ভুল ভাঙার পর মাহমুদুলের চোখে-মুখে অপার বিস্ময়! বললেন, ‘এত বছর ধরে কলেজে পড়ছি। পুরো ক্যাম্পাস আমার নখদর্পণে। কিন্তু কোনোদিন তো শুনিনি ঊর্দু বিভাগের কথা’!

এই বিস্ময় শুধু মাহমুদুল করিমের একার নয়, বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়, এই প্রতিবেদকের। তাদের কেউ জানেন না, কলেজে ঊর্দু বিভাগ নামে কোনো বিভাগ আছে। বললেন, এই প্রথম ঊর্দু বিভাগের বিষয়ে জানলেন।

চট্টগ্রাম তো বটেই, দেশের সবচেয়ে পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম- চট্টগ্রাম কলেজ। ১৮৩৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা স্কুল হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম। প্রতিষ্ঠালগ্নের ৩৩ বছর পর ১৮৬৯ সালে একে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। তখন থেকেই এটি- চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ বা চট্টগ্রাম কলেজ নামে পরিচিত হয়। কলেজে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাশাপাশি এখন মানবিক ও বিজ্ঞান বিষয়ে ২০টি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে।

তবে কবে এই কলেজে ঊর্দু বিভাগ সংযুক্ত করা হয়েছে, সেটি কেউ বলতে পারেননি। আর সর্বশেষ কবে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন, সে সম্পর্কেও কারো কোনো ধারণা নেই। কেউ বলেছেন ৪০ বছর আগে সর্বশেষ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। কেউবা আবার বলেছেন, স্বাধীনতার পর এই বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হননি।

কলেজের ওয়েবসাইটেও সে বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ নেই। কোনো নথিপত্রেও এই বিভাগের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু লেখা নেই। প্রখ্যাত ঊর্দু কবি ও পণ্ডিত সৈয়দ ইকবাল আযম এই বিভাগের একসময় প্রধান ছিলেন। বর্তমানে কোনো শিক্ষক-ছাত্র না থাকলেও কাগজে-কলমে থাকা ঊর্দু বিভাগের নামে দুটি পদ (সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক) বরাদ্দ আছে।

খবর রাখেন শিক্ষকেরা
কলেজে ঊর্দু বিভাগ আছে, সেটি শিক্ষার্থীদের অজানা হলেও ঠিকই খবর রাখেন শিক্ষকেরা। কেননা, এই বিভাগের অধীনে থাকা দুটি পদকে কাজে লাগান তারা। বিভাগের নামে কোনো কক্ষ, সাইনবোর্ড না থাকলেও নিয়মিতই দুই পদের অধীনে শিক্ষক পদায়ন হচ্ছে। যদিও ওই শিক্ষকেরা কেউ ঊর্দু বিভাগের শিক্ষক নন।

মূলত বিভাগটিতে শিক্ষকদের শূন্যপদের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন কলেজের অন্য বিভাগের শিক্ষকেরা বদলি হয়ে আসেন চট্টগ্রামের এই শীর্ষ কলেজে। পরবর্তীতে নিজস্ব বিভাগে শিক্ষক পদ শূন্য হলে সেখানে চলে যান। সর্বশেষ, সহকারী অধ্যাপক পদে ঊর্দু বিভাগে যোগ দেন ড. মোহাম্মদ আরিফুল হক। পরবর্তীতে তিনি নিজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে চলে যান। অবশ্য তিনি এখন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বদলি হয়েছেন। একইভাবে প্রভাষক পদে যোগ দেন মিজানুর রহমান। কিছুদিন পর নিজের পরিসংখ্যান বিভাগে পদ শূন্য হলে তিনিও সেখানে চলে যান। এখন ঊর্দু বিভাগের দুটি পদই শূন্য আছে।

কলেজের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজ বৃহত্তর চট্টগ্রামের একটি শীর্ষ কলেজ। স্বাভাবিকভাবেই এই কলেজে যোগদান করতে শিক্ষকদের একটা বাড়তি আগ্রহ থাকে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী, পদ তো কম। সেজন্য ঊর্দু বিভাগের শূন্যপদ দুটিতে অনেকেই পদায়নের চেষ্টা করেন। আর এক্ষেত্রে যেহেতু বাধা নেই, অনেকে এই বিভাগের শূন্যপদে যোগদান করেন। তবে ক্লাস নেন নিজের বিভাগে। আর পদ শূন্য হলেই নিজের বিভাগের অধীনে চলে যান তারা।’



কলেজের প্রধান অফিস সহকারী গোলাম কিবরিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বিভাগের অধীনে দুটি পদ আছে। এই পদের বিপরীতে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকেরা যোগদান করেন। তবে বর্তমানে পদ দুটি শূন্য রয়েছে। কয়েকদিন আগেও মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করে পদ শূন্য থাকার কারণ জানতে চেয়েছে।’

শিক্ষার্থী না-থাকলেও শিক্ষকদের জন্য কেন পদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে, এমন প্রশ্নে গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এই বিভাগে সর্বশেষ কখন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন, তা কেউই জানেন না। এই বিষয়ে কোনো নথিও নেই। আমরাও শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। শিক্ষকদের পদ রাখার বিষয়টি তাই মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আমরাও ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের ঊর্দুর বিষয়ে কোনো কিছু বলি না। কাউকে এই বিভাগে ভর্তির বিষয়েও উৎসাহিত করি না। কারণ, এই বিষয়ের শিক্ষকই নেই। শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে কী করবেন এখানে’।

শিক্ষার্থীদের আগ্রহ না থাকলে ঊর্দু বিভাগ রাখার বিষয়ে পক্ষপাতী নন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য বুকের রক্ত দিয়েছিলাম। তবে সব ভাষাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু যে ভাষা শেখার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ নেই বহু বছর, সেই বিষয়ে কেন একটা বিভাগ থাকবে’!

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাবির রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষদ্বয় উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিকট হতে আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে হলসমূহ সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

;

আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্টিমেটাম দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সকল প্রকার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শিক্ষার্থী মোকাররম হোসেন বলেন, আমরা সারাদেশের ন্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আন্দোলন করে বর্তমানে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমাদের একদফা দাবিটির সন্তোষজনক সমাধান হয়েছে। এতে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ সন্তুষ্ট। তবে আন্দোলনের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮দ ফা দাবি ছিলো। ৮ দফা দাবির মধ্যে কোটা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কারফিউও শিথিল করা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সেবাও চালু হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাবি থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, এসবের বাইরে আমাদের দাবি হল- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশাসন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে অবস্থান করতে হবে। আবাসিক হলগুলোতে শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের পরিবারে ক্ষতিপূরণ ও তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নিয়ে অতি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা দেখতেছি সরকার ধীরে ধীরে আমাদের সকল দাবি মেনে নিচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আজ থেকে সকল ধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ এসে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করবে, এই সুযোগ আমরা আর দেব না। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ৮দফা দাবি পরিপূর্ণ করে সারা বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা আবারও মাঠে নামব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষাথী তোফায়েল আহমেদ ও মনিমুল হক এবং আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান গাজী মহারাজ উপস্থিত ছিলেন।

;

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি সকল চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম।

বুধবার (২৫ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে উপচার্য্য বরারর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তিনি এই স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন।

জাবির এই সহযোগী অধ্যাপক পদত্যাগ লিখেন, জনাব, আমি বিগত প্রায় ১৪ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছি। দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতা এবং শিক্ষকদের দলীয় মনোভাব আমাকে অনেক ব্যথিত করেছে। আমি সব সময় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থেকেছি।

তিনি আরও লিখেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবন দিতে হয়েছে। সরকার চাইলে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে পারতো, তাহলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না।

যে সকল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, তাদেরকে নিয়ে তাদের পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল। সন্তান হারানোর বেদনায় তারা আজ দিশেহারা। তাদের সাথে সাথে সমগ্র জাতি আজ শোকাহত। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা এই জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা এবং কিছু সংখ্যক প্রতিবাদী শিক্ষকদের রক্তাক্ত করার মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড দেখেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকদের আমি নির্লিপ্ত থাকতে দেখেছি। শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনৈতিক দলীয় করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ভুলুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদ সকল শিক্ষার্থী এবং আহত সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশ করছি এবং তাদের জন্য দোয়া করছি। সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাবোধ কে জাগ্রত করতে আমি সহযোগী অধ্যাপক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চাকুরী হতে স্বেচ্ছায় অব্যহতি ঘোষণা করছি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য্য অধ্যাপক ড. নরুল আমীন বার্তা২৪. কমকে বলেন, শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম সেচ্চায় পদত্যাগ করার জন্য একটি আবেদন জানিয়েছে। সেটি আমাদের রেজিস্ট্রার গ্রহণ করেছে। আমি এখনো পদত্যাগপত্র দেখি নাই। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পরে বলবো।

;

মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতন এবং হত্যার প্রতিবাদে নিজেদের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) বিবেকবান সাধারণ শিক্ষক উল্লেখ করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন। বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কিছু শিক্ষক। বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষকগণ ওই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের করিডোর থেকে মৌন মিছিল শুরু হয়ে বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের চত্তরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান করে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা দোআ করা হয়।

এসময় শিক্ষকরা বলেন ছাত্ররা আমাদের আন্দোলনে সহযোগিতা করছিলো কিন্তু আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারিনি। এজন্য আমরা দুঃখিত। আমরা সাধারণ শিক্ষকরা ক্লাস শুরু হওয়ার পরে যাতে আবার শিরদাঁড়া শক্ত করে দাঁড়াতে পারি তার জন্য আজকে আমরা এই রোদের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছি।সবাই শিরদাঁড়া সোজা করেন বুলেট চলবেই তার মধ্যে লড়াই থাকবেই। মনে রাখবেন ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা আজ বেঁচে আছি।

;