প্রত্যক্ষদর্শী শহীদজায়ার স্মৃতিতে ঢাবির জগন্নাথ হলে ২৫শে মার্চের গণহত্যা



কানজুল কারাম কৌষিক, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বকুল রাণী দাস ও তাঁর ছেলে শ্যামল চন্দ্র দাস

ছবি: বকুল রাণী দাস ও তাঁর ছেলে শ্যামল চন্দ্র দাস

  • Font increase
  • Font Decrease

বকুল রাণী দাস (৭৩), ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ এর কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ঘটে যাওয়া নৃশংস গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। 'অপারেশন সার্চলাইট' নামক সেই হত্যাযজ্ঞে জগন্নাথ হলে শহীদ হন তাঁর স্বামী  জগন্নাথ হলের তৎকালীন নৈশপ্রহরী শহীদ সুনীল চন্দ্র দাস। সেই রাতে নিজের চোখে দেখা ঘটনা ও দেড় বছর বয়সী ছেলে ও তিন বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে সেই হত্যাপুরী থেকে বেঁচে ফেরার গল্প শোনান বকুল রাণী দাস।

শহীদজায়ার এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বার্তা২৪.কম-এর ঢাবি করেসপন্ডেন্ট কানজুল কারাম কৌষিক।

প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে আপনার বয়স কত ছিল?

বকুল রাণী দাস: আমার বয়স তখন বাইশ। ছোট ছিলাম। এত কিছু বুঝতাম না।

প্রশ্ন: ২৫ শে মার্চে রাতে কি অবস্থা ছিল জগন্নাথ হলের?

বকুল রাণী দাস: ২৫ মার্চের রাত্রে আমাকে স্বামী (শহীদ সুনীল চন্দ্র দাস) বলল বাচ্চাদেরকে নিয়ে তুমি ঘুমিয়ে যাও। তখন আমি খাওয়া দাওয়া করে বাচ্চাদেরকে নিয়ে শুয়ে পরছি। আমাকে বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে সে গেলো ডিউটিতে। যখন রাত ১২ টা বাজল, তখন অনেক শব্দ শুনি। শব্দ আর শব্দ(গোলাগুলি)। নিজে কিছু বুঝি নাই তখন পাশের বাসার এক বৃদ্ধ মহিলা যাকে দিদিমা বলে ডাকতাম তিনি এসে ডেকে বললেন, এই বকুলি,এই বকুলি কি করস? আমি বললাম আমি আর কি করুম বাচ্চাদেরকে নিয়া বইসা আছি। জিগেস করল বাচ্চার বাবা কই। আমি বললাম ওর বাবা ডিওটিতে গেছে। তখন দিদিমা বলল দেখি কাওরে দিয়া ওর বাবারে আনানো যায় কি না। পরে পাশার বাসার এক ছেলেকে দিয়ে খবর পাঠালে ওর বাবা আসে। এসেই বলে চল আমরা বের হয়ে যাই।

প্রশ্ন: তখন কি আপনি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে পেরেছিলেন?

বকুল রাণী দাস: তখন আমরা আর পাশের বাসার ৭/৮ জন মানুষজনসহ এস এম বিল্ডিং থেকে বের হতে যাই। এসএমবির ভিতরে গিয়ে বসছি। আর্মির বুটের টক টক শব্দ শুনতে পাই। তখন আমরা একটা কাঠামোর পেছনে গিয়ে লুকিয়ে পরি। কাঠামোটা ছিলো স্বরস্বতী পূজার কাঠামো। এমন সময় একটা বাচ্চা কান্না করে উঠল। ওরা শব্দ শুনলো, ব্যাটারি লাইট দিয়ে খুঁজে পেল ওর বাবারে (শহীদ সুনীল চন্দ্র দাস)। আর কোন পুরুষ মানুষ ছিলো না আমাদের সাথে। তখন ওর বাবা রে পাঞ্জাবিরা টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো। ওনার কোলে ৩ বছর বয়সী মেয়ে ছিল। মেয়েকে তার কোল থেকে ফেলে দিলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম আমার স্বামী কে কোথায় নেন? এ কথা বলার পর আমারে লাত্থি দিয়া ফেলে দিলো। তারপর আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম। আমার সাথে যারা ছিল তারা আমাকে জল ঢেলে জ্ঞান ফেরায়। কিছুক্ষণ পরে আমাকে গেটের সামনে একটা টুলে বসায় পাঞ্জাবিরাই টুল দেয়। তখন আমি আবার জিগেস করি আমার স্বামী কোথায়। তখন ওরা আমাকে শান্তনা দিয়ে বলল, তোমার স্বামীকে নিয়ে গেছে আবার দিয়ে যাবে। তখন আমি আবার অজ্ঞান হয়ে দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়েই পড়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে আমি দেখি একটা লোক কে পাঞ্জাবিরা এসএমবির ভেতর থেকে ধরে নিয়ে আসছে। সেই লোকটা হলের হাউজ টিউটর। তার পরনের ধুতি দিয়েই তাকে বেঁধে নিয়ে আসছে। তারপর পাঞ্জাবীরা উর্দুতে কি যেন জিজ্ঞাস করল। হাউজ টিউটর এর উত্তর দেয়ায় তাকে থাপ্পড় মারল। তারপর তাকে আর আরেকজন সিকিউরিটি গার্ড প্রিয়নাথকে ধরে নিয়ে যায় জগন্নাথ হলের মাঠে। ওর বাবারেও ওইখানেই নিলো।

প্রশ্ন: উনাদেরকে ধরে কোথায় নিয়ে গেল?

বকুল রাণী দাস: জগন্নাথ হলের মাঠে। বড় একটা গাছের নিচে। কিছুক্ষণ পর ৩ জনকে ৩ টা গুলি করল। আমি বললাম গুলির শব্দ হয় কিসের? আমার সাথের সবাই বলল তোমার স্বামীকে কিছু করে নাই।

প্রশ্ন: আপনারা কি শহীদদের লাশ খুঁজে পেয়েছিলেন?

বকুল রাণী দাস: যখন রাত ৪ টা বাজে তখন সবাই বলল চল মাঠের দিকে যাই। গিয়ে দেখি ওরা ট্রাক দিয়ে গর্ত করে সব লাশ একসাথে গণকবর দিয়ে দিচ্ছে। বাথরুম,বারান্দা যেখানে যত লাশ ছিল কিছু যুবক ছেলেদেরকে দিয়ে লাশগুলো আনায়। এনেই ওই মাঠেই গণকবর দিয়ে দেয়।

প্রশ্ন: আপনারা সেখান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেন কিভাবে?

বকুল রাণী দাস: আমরা ৭/৮ জন কিছুক্ষণ সেখানে থেকে মেডিকেলের দিকে রওনা হলাম যাওয়ার পথে মেইন গেইটেই ২ টা লাশ দেখলাম। মেডিকেলে যাওয়ার পর বাচ্চারা খেতে চাইলে খাবার দেয়ার মত টাকা ছিল না। ক্যান্টিনের একটা ছেলে এক গ্লাস দুধ আর একটা রুটি দিলে ছেলেকে দুধ খাওয়াই আর মেয়েটাকে রুটি খাওয়াই। এভাবেই বেচে ছিলাম।পরে সদরঘাটে গিয়ে নৌকায় উঠি। আমার মনে হচ্ছিল নদীর বুকে যেই ঢেউ আমার বুকেও সেই ঢেউ। এভাবেই ভাসতে ভাসতে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাই।

প্রশ্ন: এখন আপনি কেমন আছেন? সরকার থেকে কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন?

বকুল রাণী দাস: এইযে এত কষ্ট করে বেঁচে ফিরলাম। এখনো অব্দি কোন সরকার ই আমাদেরকে কোন সাহায্য করে নাই। শহীদ পরিবার হিসেবে আমার ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটু দেখা করে আমি কিছু কথা বলতাম।

   

জাবিতে ডিন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অনুষদগুলোর আসন্ন ডিন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের বিরুদ্ধে।

রোববার (৫ মে) রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পক্ষপাতিত্বমূলক কার্যক্রমের প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন নির্বাচনের বৈধপ্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪ জন শিক্ষক।

পক্ষপাতিত্বমূলক কার্যক্রমের বিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষকরা হলেন- বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের বর্তমান ডিন ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা ও সহযোগী অধ্যাপক ইউসুফ হারুন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক কাশেদুল ওহাব তুহিন ও সহযোগী অধ্যাপক রাকিবুল হাসান। এছাড়া উপাচার্য বরাবর দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে অবৈধভাবে বাছাইকৃত প্রার্থী তালিকা বাতিল করে আইনানুগভাবে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই শিক্ষকবৃন্দ।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের আসন্ন ডিন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা। কিন্তু বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পূর্বে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য গত ৩০ এপ্রিল ই-মেইলে এবং ১ মে সশরীরে রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করে আবেদনপত্র জমা দেন তারা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। এরপর তড়িঘড়ি করে গত ২ মে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় কোন ত্রুটি বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা প্রার্থীকে অথবা মনোনীত প্রতিনিধিকে দেখানোর কথা এবং তা প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

আরও জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং সে সময়ে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ কর্তৃক সমর্থিত এক প্রস্তাব গ্রহণ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রস্তাবটি ছিল, মনোনয়নপত্রে কোন ধরনের ভুল ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ডেকে তা প্রতিকার করে দাখিলকৃত সব মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করার। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আইন এবং সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেননি। এছাড়া ঠিক কি কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে অথবা কি কারণে আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব হলো না তা ওই শিক্ষকদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

ডিন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার সময় থেকে এখন পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার ডিন নির্বাচন সংক্রান্ত কোন নীতিমালা, আইন, বা প্রচলিত নিয়মসমূহের সংকলন লিখিত অথবা মৌখিকভাবে অবহিত করেননি। মনোনয়নপত্রেও এধরনের কোন নির্দেশনা বা বিশেষ দ্রষ্টব্য ছিলো না। এছাড়া বৈধতালিকা প্রকাশের আগে প্রচারণা চালানো প্রার্থীদের প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়নি।

অভিযোগপত্রে উপাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, বৈধতালিকা প্রকাশের আগেই একজন যখন নিজেকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দেয় তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবজ্ঞা করা অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই সকল প্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত সংবিধির ১.২৪ ধারা মোতাবেক এ বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করছি।

;

ঢাবিতে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিতে আল্টিমেটাম



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনিত যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটি দুই মাসেও কোনো প্রতিবেদন না দেওয়ায়, দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিতে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এই আল্টিমেটাম ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, এ বছরের ৩ মার্চ অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধ যৌন নিপীড়নের অভিযোগ যাচাইয়ে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সীমা জামান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কর্তৃপক্ষ এ কমিটিকে ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বললেও ২ মাস পার হলেও এ ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায় নি। এতে ন্যায়বিচার ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আরো জানান, আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে, প্রশাসন বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে যথাযথ বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে অথবা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কমে গেলে লঘু দণ্ড দিয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বাঁচিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানান এবং তিন দিনের মধ্যে তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার দাবি করেন। অন্যথায় পুনরায় আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন এই শিক্ষার্থীরা।

;

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে চবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল বাহিনী কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এ সময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধরপাকড়ের তীব্র নিন্দা জানান শিক্ষার্থীরা।

গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাকিব হোসেনের সভাপতিত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। এ সময় তারা ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ- ইহুদিবাদ নিপাত যাক, বয়কট ইসরায়েল, ফিলিস্তিনে হামলা কেন আমেরিকা জবাব দে সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময় অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ফিলিস্তিনের চলমান স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু মুসলিমদের ইস্যু নয়, এটা গোটা মানবজাতির, মানবতার ইস্যু। আজকের এই মানববন্ধনে উপস্থিত হতে পারাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। সবচেয়ে বড় মূল্যবান বিষয় হলো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়ানো।

ফ্যাইন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. ইশতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক বিষয় হলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিশেষত স্বয়ং ইসলরাইলের সবচেয়ে বড় দোসর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে ও ইসলরাইলের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আন্দোলন করছে। অথচ আরবরা জাতি ভাই হয়েও আজ নির্বিকার, আরব শাসকগোষ্ঠীসহ জনগণ পর্যন্ত ভোগবিলাসের মত্ত হয়ে আছে। তাদের এই ভন্ডামী একদিন তাদের পতনের কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ। যে জাতি একজন খ্রিষ্টান নারীর জন্য স্পেন বিজয় করতে পারে, সে জাতি আজ নিজের বোনের আর্তনাদ শুনতে পায় না।

অন্যদিকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন ও পদযাত্রা করেন।

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সোপান বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ করেছি। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সহ সকল শেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

;

ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইবি ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এবং নিরীহ ফিলিস্তিনদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ।

সোমবার (৬ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দলীয় ট্রেন্ট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে প্রদক্ষিণ করে দলীয় ট্রেন্টে এসে সমবেত হয়ে ছাত্র সমাবেশে যুক্ত হয়। পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশে স্বাধীন ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মৃদুল হাসান রাব্বি, রাকিবুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন হল ও অনুষদ ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী।

ছাত্র সমাবেশে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ন্যায্যতা-ন্যায়-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি এবং মানবতার বিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা যে আন্দোলনের সূচনা করেছে তার প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে ইবি শাখা ছাত্রলীগ। ফিলিস্তিনের নারী পুরুষ এবং অবুঝ শিশুদের প্রতি যে জঘন্য নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, আমরা এর প্রতি তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাই।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, নিপিড়ীত মানুষের পক্ষে কাজ করে গেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় নিপিড়ীত, নির্যাতিত ফিলিস্তিনি মানুষের দাবি আদায়ে, দখলদার ইসরায়েলী বাহিনীর দখলদারিত্ব এবং নির্বিচারে গণহত্যা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইবি শাখা ছাত্রলীগ আজ রাজপথে দাঁড়িয়েছে। এই সমাবেশ থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি জুলুম নির্যাতন বন্ধ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই।

 

;