নিরাপত্তাশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা বুয়েট শিক্ষার্থীদের একাংশের



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) চলমান ইস্যুতে একদল শিক্ষার্থী উগ্রবাদী ও নিষিদ্ধ সংঠনের বিরুদ্ধে কথা বলায় নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শঙ্কিত ওই শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে বুয়েট শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ শঙ্কার কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এক খোলা চিঠিতে তারা দাবি করেন, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিকে এক ধরনের নিষিদ্ধ কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক চিন্তাধারণায় বিশ্বাসী এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমরা অংশ নিতে চাই দেখে আমাদের ক্যাম্পাসে দীর্ঘ একটি সময় ধরে মানসিক নিপীড়ন চলে আসছে, যা বর্তমানে আমাদের জীবনের হুমকিস্বরূপ।

আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আমরা বলতে চাই, শুধুমাত্র স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য যে পরিমাণ বুলিং করা হয়েছে, আমাদের ওপর তা অকথ্য। এই নিপীড়নের কারণ শুনতে হলে আমাদের ২০১৯ পরবর্তী বেশ কিছু ঘটনা জানতে হবে। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ (ইইই ১৭) ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু এরপরে র‍্যাগিং বা এর সঙ্গে জড়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গের অভিযোগ না থাকলেও সংখ্যালঘু ছাত্রদের ওপর শুরু হয় 'পাবলিক হিউমিলিয়েশন' এবং 'ডিফেমেশন', যা হয় শুধুমাত্র স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার কারণে।

পরবর্তীতে আমরা বুয়েটে ভর্তি হলে আমরাও আমাদের জাতির জনকের আদর্শকে পালন করতে চাইলেই আমাদের সঙ্গে বুলিং ও নানাভাবে আমাদের হ্যারাস (হয়রানি) করা হয়।

ঘটনা প্রসঙ্গে তারা উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই সুনামগঞ্জের তাহেরপুর টাঙ্গুয়ার হাওর সংলগ্ন এলাকায় বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৪ জনকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনার অভিযোগে শিবির সন্দেহে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনায় আমরা মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড়াই এই শিরোনামে- 'Rise Above Extremists, Protest Fundamentalism'। এই মানববন্ধনে আমাদের দাবি ছিল দোষীদের শাস্তি প্রদান এবং নির্দোষদের নিঃশর্ত মুক্তি। কিন্তু এমন একটা সচেতনতামূলক কাজ করার পরেও আমাদের মানববন্ধনে দাঁড়ানো সব সাধারণ শিক্ষার্থী বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে শুরু হয় জবাবদিহিতার পর্ব। সেখানে মানববন্ধনে দাঁড়ানো সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও সামাজিকভাবে বয়কটের ভয় দেখিয়ে মানববন্ধনের প্রথম ছাত্র হওয়ার কারণে আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে রাখা হয়।

তারা উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় মনন চর্চার মুক্তমঞ্চ। বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলবাদবিরোধী অবস্থান রাখাকে কীভাবে অভিযোগ হিসেবে তুলে ধরা হয়, তা আজও জবাবদিহিতা চাওয়া প্রত্যেক ছাত্রের প্রশ্ন। মানববন্ধনের প্রথম ব্যক্তিবর্গ হিসেবে আমাদের নিয়ে শুরু হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় বুলিং এবং জবাবদিহিতার ঘটনা। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের দুইজন সহপাঠীকে আহসান উল্লাহ হলে রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত জবাবদিহিতার নামে যে প্রহসনমূলক র‍্যাগিং বা বুলিং এবং কমনরুম ও মাঠে একটানা অপমান করা হয়। এই ঘটনা আমাদের মানসিক স্থিতির ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে। আমাদের নিচু দেখিয়ে কথা বলাও শুরু হয় এবং হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আমাদের চিহ্নিত করে বারবার বুলিং এবং আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হয়। আমরা কখন কোথায় যাচ্ছি তাও সরাসরি অনুসরণ করে চিহ্নিত করা হয়।

অভিযোগ করে তারা জানান, আমরা শুধুমাত্র মত প্রকাশ করেছিলাম। স্বাধীন এই বাংলায় এই অধিকার কি আমাদের নেই? পরবর্তীকালে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছাত্ররা একরাতে একসঙ্গে বসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা ও খাওয়া-দাওয়া করলে আবারও ছুটে আসে সোশ্যাল ডিফেমেশনের  কালোছায়া। এতে প্রমাণবিহীনভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিত থাকার বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের ক্লাব থেকে বের করে দেওয়া হয়। এমনকী ক্লাস শিডিউল ও পরীক্ষার রুটিন সঠিক সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রদের না জানানোর আদেশ দেওয়া হয়। পরিষ্কারভাবে আমাদের লালিত বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী অন্য শিক্ষার্থীদের সামাজিক বয়কটের পক্ষে ঘটা করে জানান দেওয়া হয়। দেশমাতার বুকে মাকে ভালোবাসার জন্য এ যেন এক ঘটা করে ডেকে অপমান করা। আমরা এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও কোনো মীমাংসা আজও পাইনি।

সমসময়িক ইস্যুতে তারা জানান, চলতি বছরের ২৭ মার্চ দিনগত রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি হুসাইন সাদ্দাম বুয়েট প্রাঙ্গণে রাতে উপস্থিত হলে তার সঙ্গে বুয়েটে অধ্যয়নরত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বি সৌজন্য বিনিময়ের কারণকে অভিযোগ হিসেবে তুলে ধরে একটি প্রদর্শনীর ছাত্র আন্দোলন সৃষ্টি হয়। পরে তারা ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বির হল বহিষ্কার দাবি করে এবং উপাচার্য মহোদয় কর্তৃক কোনোরকম তদন্ত ছাড়া তাই গৃহীত হয়। পরবর্তীতে তাকে স্থায়ীভাবে বুয়েট থেকে বহিষ্কারের দাবিও জানানো হয়, যা আসলে একজন শিক্ষার্থীর জন্য তার একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের শামিল। এই আন্দোলন ক্যাম্পাসে শান্তির পরিবেশ নষ্ট করে যা পরীক্ষা বয়কটের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এরই সঙ্গে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোশ্যাল হ্যারাসমেন্ট এবং ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

তারা আরো জানান, আমাদের উক্তিতে উঠে আসা ঘটনাগুলোতে সবসময়ই হোতা কিছু নির্দিষ্ট মানুষ যাদের সঙ্গে শিবির সন্দেহে আটককৃতদের সম্পৃক্ততা এবং মৌলবাদী চিন্তা পালনের দৃষ্টান্ত মেলে। অনেক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক মতামত প্রতিষ্ঠার জোরও চালানো হয় তাদের দ্বারা। কিন্তু এই অন্ধকার রাজনীতি আড়ালে নেয় আবরার ফাহাদ ভাইকে হারানোর বেদনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে। সম্প্রতি, ক্যাম্পাসে ইসিই ভবনের লিস্টেও হিজবুত তাহরীর পোস্টারে কিউআর কোডের মাধ্যমে "পাশ্চাত্য সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে খিলাফত প্রতিষ্ঠা" করার আহ্বান করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত এডুকেশনাল মেইলেও পাঠানো হয়। হে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের রক্ষক, আপনি সহযোগিতা করুন, আমাদের আবেদন শুনুন।

তারা আরো অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্টাফদের মধ্যে ইফতার বিতরণের জন্য তাদের সহযোগী জুনিয়র ও ব্যাচমেটদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় এবং জবাবদিহিতা চাওয়া হয়। এমনকী সবাইকে সামাজিক বয়কটের হুমকি দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে তারা জানান, হলের রুমে বঙ্গবন্ধু ও আপনার ছবি রাখতে চাইলেও আমাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে "বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা" বিষয়ক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও তার বিরোধিতা করে সমালোচনা করা হয়, যার কারণে এই ক্লাব প্রতিষ্ঠায় আমাদের পিছপা হতে হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়ে তারা জানান, বর্তমানে এই সবধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় আমাদের জীবন হুমকিসহ নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। শিবির দ্বারা পরিচালিত বাঁশেরকেল্লার পক্ষ থেকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নাম, মোবাইল ফোন নম্বর, শিক্ষার্থী নম্বর থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ম্যাসেজিং অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে। এর প্রমাণ, এরই মধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। আমরা ২১ জন এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।

হে দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধু তনয়া, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বিশ্বাস করি, ভিন্ন-অভিন্ন সব মতের সাধারণ বুয়েট শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে স্বাভাবিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই। আমরা চাই না, আমাদের ক্যাম্পাস জঙ্গি তৈরির কারখানা হোক। আমরা চাই না, দেশে দ্বীপভাই, সনিআপু ও আবরার ফাহাদ ভাইয়ের মতো নির্মম ঘটনা ঘটুক। আমরা দ্বিতীয় কোনো হলি আর্টিজান ঘটনাও চাই না। আমরা চাই না তন্ময়ভাইয়ের মতো কেউ শিবিরের নৃশংস হামলার ক্ষতচিহ্ন নিয়ে জীবনযাপন করুক। আমরা সবাই-ই জানি, বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত মুক্তবুদ্ধি চর্চার মুক্ত মাঠের মতো। আমাদেরও সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার কাছে এই আকুল আবেদন।

তারা জানান, হিজবুত তাহারীর বা শিবিরের সন্ত্রাসী আক্রমণ থেকে কতটা নিরাপদ বুয়েটের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি! রাষ্ট্রযন্ত্র মেধাবীদের এই ক্যাম্পাসকে কতটা নজরদারিতে রেখেছে বা এর প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করছে, আমরা জানি না। যেকোনো বড় ধরনের নাশকতার ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলে হলি আর্টিজানের মতো কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি, আমরা ক্যাম্পাসের প্রগতিশীল ছাত্র সমাজ। এ বিষয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা কতটুকু, তাও আমরা জানি না। অতিসত্বর বুয়েট নিয়ে তাদের কার্যক্রম জোরদার করার দাবি জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তারা বলেন, আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা আমাদের আকুল আর্জি রাখলাম যে, নিরাপদ ও স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্যাম্পাস উপহার দিন। দেশ ও দশের প্রতি ভালোবাসা রেখে সবার কল্যাণকে মাথায় রেখে আমরা ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি চাই এবং জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপদে এবং সৎ সাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে চাই।

   

নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা

জাবিতে ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টায় দুই বহিরাগতকে পুলিশে সোপর্দ



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হল ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে মনপুরা এলাকার প্রবেশপথে দুই শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে দুই বহিরাগতকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আটক নাজমুল হাসান (৩২) সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (বিপিএটিসি) চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা, তার স্থায়ী ঠিকানা পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার খলিলপুর গ্রাম। আরেক অভিযুক্ত আলামিন (২৮) একই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায়৷ এছাড়া অভিযুক্তদের মধ্য থেকে একজন পালিয়ে যাওয়ায় তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি৷

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন ও তার নারী বন্ধু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন৷ এসময় তিনজন ছিনতাইকারী তাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও তাদের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়৷

পরবর্তীতে প্রায় তিনঘণ্টা আটকে রাখার পর রুহুল আমিন টাকা আনার কথা বলে সুকৌশলে বন্ধুদের ফোন করেন। এসময় সালাম বরকত হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এসময় ছিনতাইকারীদের বেধড়ক মারধর করেন৷ অভিযুক্তদের একজন পালিয়ে গেলেও অবশিষ্ট দু'জনকে হাতেনাতে ধরে নিরাপত্তা শাখায় হাজির করে শিক্ষার্থীরা৷ এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী৷

এদিকে ঘটনা ঘটার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর রাত দশটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে অভিযুক্তদের নিয়ে আসে৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবিরের সঙ্গেমুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনাটি যেহেতু বহিরাগতদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেহেতু নিরাপত্তা অফিস বিষয়টি দেখভাল করবে। আমি নিরাপত্তা অফিসকে সঙ্গেসঙ্গেবিষয়টি জানিয়েছি।

পরে রাত পৌনে একটায় আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নুর আলম মিয়া অভিযুক্ত, ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়া থানায় যান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন ।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল জানান, আমি এ ঘটনা জানার পরপরই প্রক্টর মহোদয়কে অবহিত করেছি। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশের সোপর্দ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা দেয়ার জন্য কিন্তু ধর্ষণচেষ্টা অভিযোগের মামলা ভিকটিমকেই দিতে হয় বিধায় আমরা এখন ভিক্টিমকে নিয়ে থানায় যাচ্ছি৷

;

শিক্ষাছুটির শর্ত বাতিল চায় চবি শিক্ষক সমিতি



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শিক্ষাছুটির শর্ত বাতিল চায় চবি শিক্ষক সমিতি

শিক্ষাছুটির শর্ত বাতিল চায় চবি শিক্ষক সমিতি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদেশে গবেষণা বা পিএইচডি করার জন্য শিক্ষকদের ২০% শিক্ষাছুটির শর্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়(চবি) শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দুইটি দাবি সম্বলিত একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

উপাচার্য বরাবর পাঠানো চিঠিতে অস্থায়ী শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ ও শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যাপারেও দাবি করা হয়। এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের জোর দাবিও জানায় সংগঠনটি।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়- দীর্ঘদিন যাবৎ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত না হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে। এমনকি কিছু সংখ্যক শিক্ষকের স্থায়ী নিয়োগও আটকে আছে। এসব শিক্ষকের স্থায়ী নিয়োগ জুনের পরে হলে তাদেরকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম (প্রত্যয় স্কিম) এ অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এমতাবস্থায়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের জোর দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটির বিষয়ে ২০% বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে অনেক শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে যাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। অথচ অনেক শিক্ষক নিজ উদ্যোগে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত করেছেন এবং তাদের অনেকের এমএস/পিএইচডি প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই বাধ্যবাধকতা থাকা অবস্থায়ও এমন কোনো রেকর্ড নেই যে, ইতোমধ্যে কোনো শিক্ষককে শিক্ষা ছুটি প্রদান করা হয়নি।

এমতাবস্থায়, ২০% বাধ্যবাধকতার বিধান রহিত করার দাবি জানাচ্ছি। এটি রহিত না করা পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির আবেদনকরী শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান এ ব্যাপারে বার্তা২৪.কমকে জানান, দীর্ঘদিন সিন্ডিকেট সভা না হওয়ায় কিছু শিক্ষকের স্থায়িত্ব ও পদোন্নতি আটকে আছে, এগুলো যাতে ৩০ জুনের মধ্যেই সমাধান হয় এ ব্যাপারে আমরা উপাচার্য মহোদয়কে জানিয়েছি।

এছাড়াও ২০% শিক্ষাছুটি যাতে করে বাতিল করা হয়। কারণ একজন শিক্ষকের বাইরের দেশে যাওয়ার ব্যাপারটা এই কোটার উপর সীমাবদ্ধ নয়, এখানে অনেক পরিশ্রম ও ফান্ডের ব্যাপার আছে। ইতঃপূর্বেও অন্যান্য উপাচার্যগণ ২০% এর ওপরে শিক্ষা ছুটি দিয়েছেন। আমাদের দাবি যাতে করে ২০% শিক্ষা ছুটির শর্তটি রহিত করা হয়।

;

যবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ১৩ কর্মীকে আজীবন বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চাকরি প্রার্থীদের অপহরণ এবং একজন আবাসিক শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাসহ চারজনকে এর আগেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। আজীবন বহিষ্কৃত ১৩ জনের বিরুদ্ধেই দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেলে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০০তম (বিশেষ) সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটরের চাকরি প্রার্থীদের অপহরণের ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং তাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে জারিকৃত বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করায় যবিপ্রবি’র ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বেলাল হোসেন, ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী জি এম রাইসুল হক রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী নৃপেন্দ্র নাথ রায়, মুশফিকুর রহমান, ফাহিম ফয়সাল লাবিব ও মো. আবু বক্কারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যবিপ্রবির রুলস অব ডিসিপ্লিন ফর স্টুডেন্টস অনুযায়ী, আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে ফাহিম ফয়সাল লাবিবের বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই।

এছাড়া চলতি বছরের ৪ জুন দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন রহমানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সোহেল রানা, রেদওয়ান আহমেদ জিসান, মো. বিপুল সেখ, ইছাদ হোসেন, মো. আশিকুজ্জামান (লিমন) ও মো. আমিনুল ইসলাম; ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. বেলাল হোসেন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বীকে যবিপ্রবির রুলস অব ডিসিপ্লিন ফর স্টুডেন্টস অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তবে সোহেল রানা, ইছাদ হোসেন এবং আশিকুজ্জামান (লিমন) ও ফাহিম ফয়সাল লাবিবের বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই।

উল্লিখিতদের মধ্যে যাদের ছাত্রত্ব নেই, তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও আবাসিক হলে প্রবেশে বিধি-নিষেধ আরোপের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

;

কুবি প্রশাসনকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অফিসার্স এসোসিয়েশন দাবি আদায়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) অফিসার্স এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর দেওয়া এক চিঠি থেকে বিষয়টি জানা যায়।

চিঠিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো- অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের ওএসডি নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহারকরণ, সহকারী রেজিস্ট্রার/সমমান পদের কর্মকর্তাদের গ্রেড ৭ম থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডের স্কেলে উন্নীতকরণ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার/সমমান পদের কর্মকর্তাগণ ১ম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে সর্বমোট ১২ (বারো) বছর পূর্ণ হলে সরকারি গেজেট মোতাবেক গ্রেড ৫ম থেকে ৪র্থ গ্রেডের স্কেলে উন্নীতকরণ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে যোগদানকৃত ১২ জন কর্মকর্তাকে যোগদানের তারিখ থেকে সেকশন অফিসার পদে পদায়নের ব্যবস্থাকরণ, অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদেরকে শূন্য পদে স্থায়ীকরণের ব্যবস্থাকরণ, আপগ্রেডেশন নীতিমালা সংশোধন কমিটি পুনঃগঠন ও তা দ্রুততার সাথে বাস্তবায়নকরণ, ডিউ ডেইট থেকে কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ, অর্গানোগ্রাম সংশোধনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশবিশেষ দ্রুততার সাথে কার্যকর করণের ব্যবস্থা গ্রহণ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় বিভাগে (একাডেমিক ভবন) কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরীক্ষা পারিতোষিক প্রদান করা।

এ দাবিগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সময় বেধে দিয়েছে অফিসার্স এসোসিয়েশন।

এ ব্যাপারে অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, 'আমাদের দাবিগুলা সাত কর্মদিবসের মধ্যে মেনে নিতে হবে। যদি না মানা হয় তাহলে আমরা ৭ কর্মদিবসের পর কঠোর কর্মসূচি পালন করবো।'

;