ইবি শিক্ষকের উদ্ভাবন

ওলকচু ও তাল নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস



রাশেদ রহমান, ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ওলকচু দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন গবেষক সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ শাহীনুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

ওলকচু দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন গবেষক সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ শাহীনুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুস্থ থাকতে কে না চায়। প্রত্যেক মানুষই চান যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিনই যেন সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে পারেন। অসুস্থতা শুধু মানুষের দেহকেই দুর্বল করে না মানসিকভাবেও বিকারগ্রস্ত করে তোলে। আর এই অসুস্থতা এড়িয়ে সুস্থ থাকতে আমাদেরকে কতকিছুই না করতে হয়।

আজ চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতি সাধন হওয়ার ফলে আমাদের এসব ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমেছে। মানুষের দেহে খুব কম রোগ আছে যার চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। দিন দিন নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবন আমাদের জীবন যাপনকে করে তুলছে আরও বেশি সহজময়।

আমাদের প্রায় সবার কাছে ডায়াবেটিস একটি পরিচিত রোগের নাম। এটি একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যখন যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে কিংবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তখন আমাদের শরীরে যে রোগ দেখা দেয় তা হলো ডায়াবেটিস বা বহুমুত্র রোগ। এর ফলে রক্তে চিনি বা শর্করার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়।

আমরা নিয়মিত অভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর কাজের মাধ্যমে এই রোগ থেকে আমাদের নিজেদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারি। যেমন, আমাদের প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসে কিছু খাবার যুক্ত করার মাধ্যমে এই রোগটিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তেমনই খাবারের উপাদান হলো তাল ও ওলকচু। যেগুলো আমাদের হাতের নাগালেই পাওয়া যায়।

এ দুটি খাবারের প্রতি আমাদের প্রচলিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা থাকলেও, এগুলো মূলত ডায়াবেটিস বাড়ায় না বরং কমায়। পাকা তালের রস, কচি তালের শাঁস, অংকুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা অংশ এবং ওল কচুতে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি গুণ (ফাইটোকেমিকেল) থাকায় উপাদান দুটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এগুলো খেলে ডায়াবেটিসের মাত্রা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/05/1562338043158.jpg

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগে বিগত কয়েক বছর ধরে এক গবেষণায় এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণাটি করেছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ শাহীনুর রহমান। তিনি তার পিএইচডি গবেষণায় এ বিষয়টি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

বার্তা২৪.কমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান- কচি তালের শাঁস, পাকা তালের রস এবং অংকুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা অংশ বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে একটি জনপ্রিয় খাবার। তাল সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ হলেও খাদ্য কুসংস্কারের কারণে অনেক ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি পাকা তালের রস অথবা এর শাঁস খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।

এছাড়া মাটির নিচের সবজি হিসেবে ওলকচুর প্রতিও রয়েছে যথেষ্ট খাদ্যভীতি। কিন্তু এই ধরনের প্রচলিত ধারণার পক্ষে বৈজ্ঞানিক কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।

গবেষণায় দেখা গেছে, পাকা তালের রস, কচি তালের শাঁস, অংকুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা অংশ এবং ওলকচুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ ও ফাইটোকেমিকেলে ভরপুর। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি এ দুটি উপাদান পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

এই গবেষণায় নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি উদ্ভিতজাত উপাদানের সংমিশ্রণে একটি কার্যকর ডায়াবেটিস নিরাময়ে সক্ষম খাদ্য উপাদান তৈরির নিমিত্তে গবেষণা প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। এ গবেষণার জন্য ইতোমধ্যে বিভাগে অ্যানিমেল হাউস স্থাপন করা হয়েছে। উপযুক্ত ফান্ড পেলে গবেষণার মান এবং পরিধি বাড়ানো সম্ভব।’

উল্লেখ্য, এই অনবদ্য গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সিন্ডিকেট সভা শেখ শাহীনুর রহমানের পিএইচডি ডিগ্রি আনুমোদন দিয়েছে। তার এই গবেষণা প্রকল্পটির সুপারভাইজার (তত্ত্বাবধায়ক) হিসেবে ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুর রউফ এবং কো-সুপারভাইজার ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।

   

বেরোবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সারোয়ার আহমাদ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়ে চলমান সংকটের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান করা হয়েছে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সারোয়ার আহমাদ ।

রবিবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদের নির্দেশে উপ-রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান মণ্ডলের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।

জানা যায়, বেরোবির সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ দুই মাস ধরে শূন্য রয়েছে। গত ১০ মার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হলে বিভাগের ৩ শিক্ষক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী নজরুল ইসলামের পর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানের পাওয়ার কথা। কিন্তু মামলা জটিলতার কারণে তাকে দায়িত্ব দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে বিভাগীয় প্রধানের পদ নিয়ে নানা জটিলতা তৈরী হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৩ শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহার, সারোয়ার আহমাদ ও মো. রহমতুল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা তা গ্রহণ করেননি। ফলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাসহ জটিলতায় পড়ে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেনকে। কিন্তু তিনিও এক সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করেন।

সারোয়ার আহমাদকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে বিভাগের কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে আইনগত জটিলতা থাকায় এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিভগের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার নিমিত্তে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর স্থাপনকল্পে প্রণীত ২০০৯ সনের ২৯ নং আইনের ধারা ১১ (১১) অনুসারে মো. সারোয়ার আহমাদকে একই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) এর দায়িত্ব প্রধান করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়,এই নিয়োগ আদেশ ২৬ মে ২০২৪ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

দায়িত্ব নিয়ে অধ্যাপক সারোয়ার আহমাদ বলেন, বিভাগে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীরা সেশনজটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল। আশা রাখি এই সংকট কাটিয়ে বিভাগের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারব।

;

বেরোবিতে সৌন্দর্য ও সৌরভ ছড়াচ্ছে দুর্লভ প্রজাতির বনআসরা ফুল



বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য ও সৌরভ ছড়াচ্ছে দুর্লভ প্রজাতির বনআসরা ফুল। পাঁচ পাপড়ির সাদা ফুলে অসাধারণ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দুর্লভ এ ফুল।

মাঝারি আকারের গাছে শতাধিক ফুলের সৌন্দর্য উপভোগে মাতোয়ারা প্রকৃতিপ্রেমীরা। প্রতিরাতে বনআসরার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, এবং ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী করে রাখছেন। অতি বিরল এই ফুলটি দেখতে আগ্রহ বাড়ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। কেউ কেউ এই ফুলকে ‘আছর’ নামেও ডেকে থাকেন।

জানা গেছে, এই ফুল গাছের পাতা স্বল্প বোঁটাযুক্ত বড়শির ফলার মতো। অগ্রভাগ চোখা, ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বনআসরা পাতার উপরের দিক সবুজ এবং নিচ দিক পাঁচ পাপড়ির সাদা ফুল। হালকা সবুজ বৃদ্ধি এবং নকশা করা উপবৃত্তিসহ অসাধারণ রূপ ধারণ করে। ফুলে রয়েছে মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ। এই দুর্লভ ফুল রাতে দেখা গেলেও দুপুরের আগেই চুপসে যায়। এরপর ঝরে পরে। সাধারণত বীজ থেকেই বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে কলম করেও চারা তৈরি করা যায়।


দুর্লভ ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, সত্যিই এই ফুলের গন্ধ মুগ্ধ করার মতো। অতি বিরল এই ফুল দেখতে পেয়ে ভাল লাগছে। এটি দুর্লভ গাছ বীজ সংরক্ষণ করে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে আমরা খুব সহজেই এই ফুলের সৌন্দর্য এবং গাছ দেখতে পারব। প্রজন্মকে জানান দেওয়ার জন্য দুর্লভ গাছগুলো সংরক্ষণ করা অতি গুরুত্বপূর্ণ।

বনআসরা গাছটি লাগানের মূল কারিগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, চারবছর আগে ঢাকা থেকে এই গাছটির চারা এনে রোপণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এর উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ২০ ফুটের ওপরে। এর উচ্চতা আরও বাড়বে। এই ফুল রাতে ফোটে। দুপুর হতে হতেই নেতিয়ে পড়ে। এর গন্ধ মানুষকে মুগ্ধ করে। এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

;

রাবিতে ডাইনিংয়ের খাবারে সিগারেট, গেটে তালা ঝুলিয়ে ভাঙচুর



রাবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ডাইনিংয়ে খাবারের মধ্যে সিগারেট পাওয়ার অভিযোগে গেটে তালা দিয়ে হলের অতিথি কক্ষে এবং অফিস রুমের সামনে ভাঙচুর চালিয়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সোমবার দুপুরে খাওয়ার সময় খাবারে সিগারেটের একটি অংশ পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী মুনির। সে শাখা ছাত্রলীগের কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী। পরে এ ঘটনার জেরে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতিথি কক্ষ, প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের কক্ষের নামফলক ভাঙচুরসহ হল গেটে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।

আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির পক্ষে হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তৌহিদুল ইসলাম এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাসুদুর রহমান ও তাদের অনুসারীরাও অংশ নেন।

একপর্যায়ে হল প্রাধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে হলে ঢুকতে না পেরে তিনি ফিরে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও সহকারী প্রক্টর ড. জাকির হোসেন ও আল মামুন ঘটনাস্থলে যান এবং শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শোনেন। কিন্তু বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে ছাত্র উপদেষ্টাও ফিরে যান। এরপর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব হলে আসেন। পরে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এসে শিক্ষার্থীদের প্রায় ১৮টি অভিযোগ শোনেন এবং দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে যান।

এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঝামেলার কথা জেনে গেলে আমাকে হলে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ছাত্রলীগসহ শিক্ষার্থীরা গেটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছিল। তখন ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ, ইমরান, মাসুদসহ তাদের অনুসারীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। ফলে বাধ্য হয়ে হল থেকে চলে এসেছি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিহিত করেছি। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া হলে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, সিগারেট ভাসমান বস্তু। রান্নার সময় এটা পানিতে ভেসে থাকার কথা। পাথর বা ইটের টুকরো হলে আলাদা হিসেব ছিল। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক দাবি। এটাকে পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। তারপরও আমি ডাইনিং কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রান্না করার নির্দেশ দিয়েছি।

অভিযোগটি পরিকল্পিত মনে হওয়ার প্রসঙ্গে প্রাধ্যক্ষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতার জন্য বিভিন্ন হল থেকে খেলোয়াড় সিলেক্ট করা হয়েছে৷ যারা সিলেক্ট হয় তারা ট্রাউজার, জার্সি, ট্র্যাকস্যুট পেয়ে থাকে। এর জন্য আমাকে হল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তালিকা দেয়া হয়েছিল। আমার হলের সাতজনের মধ্যে তারা কেউ সিলেক্ট হয়নি। পরে ছাত্রলীগের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আমার কাছে দুই গ্রুপের জন্য ১০টা করে জার্সি চায়। এটা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না বলে জানিয়ে দিই। এসময় সে অনেক অবান্তর কথাবার্তা বলে, আমি সেগুলো পাত্তা না দিয়ে চলে আসি। পরে আজ দুপুরে জানতে পারি, হলে খাবারের মধ্যে সিগারেট পাওয়া গেছে। এই আন্দোলনে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী ছিল না।

এ ব্যাপারে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জার্সির জন্য প্রাধ্যক্ষকে কোনো তালিকা দেয়নি। আজকের ঘটনায় আমি সম্পৃক্ত নই। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া ভিন্নখাতে নিতে এমন অভিযোগ তুলছেন তিনি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে আরেক নেতা মাসুদুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

হলের সমস্যার বিষয়ে আবাসিক শিক্ষার্থী আবিদুল্লাহ বলেন, আমাদের হলের ক্যান্টিন চালু নেই। তাছাড়া ডাইনিংয়েও মানসম্মত খাবার পরিবেশন হয় না। আমরা এটার কার্যকর সমাধান চাই।

নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মো. মারুফ হাসান বলেন, অনেক আগে থেকেই হলের মধ্যে বিভিন্ন অনিয়ম চলে আসতেছে। আমরা হল প্রাধ্যক্ষের কাছে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই, আজ আন্দোলনে নেমেছি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, আমি সেখানে শেষ মুহূর্তে গিয়েছিলাম। সাধারণ শিক্ষার্থীরা খাওয়ার সময় ডালের মধ্যে সিগারেটের কিছু অংশ পাওয়ায়, সেটা নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। পরে প্রাধ্যক্ষ এসে কোনো সমাধান না দিয়েই চলে যায়। পরে আমরা গিয়ে প্রক্টর স্যারকে ডাকি। পরে প্রক্টর স্যার শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে আসে।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, এখানে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এটা হলের সকলের আন্দোলন ছিল৷ আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই ছিলেন।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের বড় কোনো অভিযোগ নেই। কার খাবারে সিগারেটের অংশ পাওয়া গেছে সেটাও কেউ জানায়নি। হলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ খাবারের মান বৃদ্ধির বিষয়গুলো জানিয়েছে। সেগুলো সমাধানে প্রাধ্যক্ষকের সঙ্গে আমরা কথা বলব।

;

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও লোডশেডিং, বিপাকে ঢাবি শিক্ষার্থীরা



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল' এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দী হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কয়েকটি হলসহ আশেপাশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এছাড়াও ঝড়ে লোডশেডিং এর ফলে বিপাকে পড়েছেন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৭ মে) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাইরে জলাবদ্ধতা ও ভেতরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু হল। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে হলগুলোর আবসিক শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার রাজধানীতে রাত থেকে এখন অব্দি টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে এ বৃষ্টিতে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিসি চত্বর থেকে নীলক্ষেত রোড, শাহনেওয়াজ হোস্টেল, নিউমার্কেট এলাকায় পানি দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলও এ জলাবদ্ধতায় আটকে আছে।

এছাড়াও সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শামসুন্নাহার হল, কবি সুফিয়া কামাল হল, কুয়েত মৈত্রী হল এর শিক্ষার্থীরা জানান, আবহাওয়ার এমন অবস্থায় বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে পুরো হল। যেখানে হলগুলোতে সাধারণত ১০ মিনিটের জন্যেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় না সেখানে এক ঘন্টার অধিক সময় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান বলেন , আগামী পরশু আমার পরীক্ষা। দীর্ঘক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ নেই। ল্যাপটপে চার্জ না থাকায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছি না। সকাল থেকেই বারবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

কবি সুফিয়া কামাল হলের হলের শিক্ষার্থী মাইশা মালিহা জানান, ঝড় হওয়ার পর থেকে পানির সাথে অনেক ময়লা আসছিলো। রান্না করতে অনেক সমস্যা হয়েছে। এছাড়াও বারবার লোডশেডিং তো আছেই। সবমিলিয়ে খুব অসুবিধা হচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের।

স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন কিফাত বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করি। ঝড়ে পানি জমে থাকায় অফিসের জন্য বের হতে পারলাম না। কাল সারাদিন মোবাইলে চার্জ দেওয়া হয়নি,তাই চার্জও নাই। সব কাজই থমকে আছে এমন অবস্থায়।

;