অনিয়মের অভিযোগে তথ্য সেবা কেন্দ্রে তালা
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (এটুআই) এর আওতায় ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি) ইউনিয়ন ভিত্তিক তথ্য-সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমানের অনিয়মের অভিযোগে তালা দিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম। ‘ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র' ২০০৭ সালে ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার’ (সিইসি) নামে শুরু হয়। বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) নামে পরিচিত ওই তথ্যসেবা কেন্দ্রে বর্তমানে তালা ঝুলছে।
জানা গেছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিতদের ডিজিটাল সেবা দোরগোড়ায় ও সেবার মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ব্রডব্যান্ড ক্যাবল সংযোগ সম্প্রসারণ করেছে। পক্ষান্তরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের তথ্যসেবা কেন্দ্রের অফিস কক্ষটি গত ২৮ ডিসেম্বর তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম।
লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক নিয়ম তান্ত্রিকভাবে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত হইয়া উদ্যোক্তা হিসেবে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সাবেক চেয়ারম্যান লাবু মিয়া, ইউনিয়ন রাজনীতিতে বর্তমান চেয়ারম্যানের গ্রুপ প্রতিপক্ষ হওয়ায় সাবেক চেয়ারম্যান লাবুর সময়ে নিয়োগ পাওয়া উদ্যোক্তা হওয়ায় বাদ সাধেন চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম।
তিনি উদ্যোক্তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিতাড়িত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। বিষয়টি উদ্যোক্তা গত ২০১৭ সনের ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন একই সনের ৪মে উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমানের চুক্তিপত্রসহ ০৫.৪৪.৬৫৫২.০০১.১১.০৪৪.১৭-৩৫১ (য) নং স্বারকে উদ্যোক্তাকে নির্বিঘ্নে কাজ করার সু-ব্যবস্থা করতে চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলামকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। তিনি সরকারি নিয়মনীতি ও উপজেলা প্রশাসনকে উপেক্ষা করে গত ২৮ ডিসেম্বর উক্ত তথ্যসেবা কেন্দ্রের কক্ষটি তালাবন্ধ করে উদ্যোক্তাকে তাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ।
তথ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা দেলোয়ার হোসেন, জুয়েল মোল্যা, সজিব মোল্যা ও শিমুল মোল্যাসহ বেশ কয়েকজনের সাথে। তারা উদ্যোক্তার প্রশংসা করে শিমুল মোল্যা জানান, তার মেয়ে মারিয়াকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে এসেছে। এর আগেও সে ২ দিন এসে ফিরে গেছেন। উদ্যোক্তা জিয়াউর থাকলে তার এতো ঘোরা লাগতনা। অন্যরা সন্তানের পরীক্ষার রেজাল্ট, কলেজে ভর্তিসহ বিভিন্ন সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিরে যান।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম তথ্যসেবা কেন্দ্রে তালা মারার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, 'উদ্যোক্তা বিভিন্ন অনিয়ম ও সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কারণে তাকে তথ্যসেবা কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।'
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, 'তথ্যসেবা কেন্দ্রে তালাবন্ধের বিষয়ে চেয়ারম্যান উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'