ওরা রক্ত যোদ্ধা!
ওরা রক্ত যোদ্ধা! ওরা রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচায়। মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করাই যেন ওদের নেশা। কারো রক্তের প্রয়োজন এমন সংবাদ পেলেই ছুটে যাচ্ছে সংগঠনের সদস্যরা। হাসি মুখে নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছে।
বলছিলাম নড়াইলের আইডিয়াল ম্যান সেবা কেন্দ্র নামের একটি বে-সরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কথা।
জানা গেছে, রক্তের অভাবে অপারেশন করা যাচ্ছে না, কিংবা জরুরি প্রয়োজনে অপারেশন করা হয়েছে কিন্তু রক্তের অভাবে রোগীর অবস্থা খারাপ, এমন সময় সেলফোন অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রক্তের প্রয়োজন জানতে পারলেই সাহায্য করে সংগঠনটি। রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচায় তারা।
বিগত এক বছরে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে রোগীদের ১০০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করা হয়। রক্তদাতাদের উৎসাহিত করার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদানসহ বিভিন্ন বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের অন্যতম সংগঠক মুরসালিন শেখ, ডা. স্বজল, লাবলু, মনির, সুমন, মেহেদী, নাহিদ, শাফায়েত, সালাউদ্দিনসহ অসংখ্য রক্তযোদ্ধা নিয়মিতভাবে রক্তদান করছেন।
এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর ১০০ জন শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ, ৫০০ জনের ফ্রি রক্তের গ্রুপ নির্ণয় এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।
রক্তদাতা মুরসালিন শেখ বলেন, ‘রক্তের অভাবে যেন কোনো মানুষের মৃত্যু না হয়, সে বিষয়টি লক্ষ্য রেখেই আমরা রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে থাকি।’
সংগঠনের সদস্য সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে রোগীদের রক্ত দেওয়া, শীত মৌসুমে অসহায়দের কম্বল বিতরণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে।’
শহরের ভওয়াখালী এলাকার রোগী মুক্তি খানম বলেন, ‘আমার অপারেশনের সময় অনেক চেষ্টা করেও যখন রক্তের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না তখন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা লাবলু নিজে রক্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন।’
নড়াইলে আইডিয়াল ম্যান সেবা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহবুবুর রশিদ লাবলু জানান, রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে মানবতার সেবা করে চলেছে সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়াও সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সদস্য, সরকারি অনুদানে এ সকল কার্যক্রম চলছে। আগামীতে সংগঠনের কার্যক্রম আরও বৃদ্ধির জন্য সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মশিউর রহমান বাবু জানান, একজন সুস্থ-সবল মানুষ তিন মাস পর পর রক্ত দিতে পারে। এতে শরীরের কোনো অসুবিধা হয় না। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে একজন মানুষকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানো অনেক বড় মহৎ কাজ বলেও মনে করেন তিনি।