অপহৃত আঁখি মায়ের কোলে, অপহরণকারী কারাগারে
বাবা নেই তাহমিনা ওরফে আঁখি মনির (৭)। মা গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মা রাবেয়া খাতুন। বাবার স্নেহ বঞ্চিত আঁখি মনি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হয় সোমবার (২১ জানুয়ারি)।
সারাদিন মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদে পরিবেশ যেন ভারি হয়ে আসছিল। মায়ের আকুতি, যেকোনো মূল্যে তার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে ফেরত পেতে চান তিনি। এ অসহায় মায়ের মেয়েকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে পুলিশ। তারা দৃঢ়তা নিয়ে অপহরণকারীদের জিম্মিদশা থেকে মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে আঁখি মনিকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেয় তার মায়ের কোলে। একই সঙ্গে অপহরণকারীকে পাঠায় কারাগারে।
অপহৃত শিশু তাহমিনা ওরফে আঁখি মনি বেড়াইদের চালা আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেনের ছাত্রী ও তার মা রাবেয়া খাতুন শ্রীপুর পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্রামের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা এবং তাকওয়া ফেব্রিক্স নামের একটি কারখানার শ্রমিক।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম (৩০) দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার মগলিশপুরের মৃত আনসার আলীর ছেলে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব কুমার সাহা জানান, অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম ও রাবেয়া খাতুন স্থানীয় সারফুলের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সোমবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় স্কুল ছুটির পর আঁখি মনির বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে শফিকুল ইসলাম। স্কুলের সময় পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেলেও আঁখি মনি বাড়ি ফিরে না আসায় তার মা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে।
পরে সন্ধ্যায় রাবেয়া খাতুনের নিকটাত্মীয়ের ফোনে অভিযুক্ত শফিকুল ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় মুক্তিপণ না দিলে শিশুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে শিশুর মা শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে আঁখি মনিকে উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ।
পরে প্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুরের চন্দ্রায় একটি পরিত্যক্ত ভবনের দুতলা থেকে অপহরণকারীকে গ্রেফতারসহ আঁখি মনিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আঁখি মনিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের সহ অপহরণকারীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।