বাবা-ছেলের দেড় যুগের ইয়াবা ব্যবসার অবসান ঘটছে
জামাল হোসেন ওরফে জামাল মেম্বার। দেশের দক্ষিণের সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের এক ইয়াবা সম্রাটের নাম। বাবার হাত ধরেই ছেলে শাহ আজমও জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা কারবারে। পিতা-পুত্রের ইয়াবা ব্যবসার সুবাধে লবণ চাষি থেকে রাতারাতি হয়ে যান কোটিপতি।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে প্রায় দেড় যুগের ইয়াবার ব্যবসার অবসান হতে চলেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী এলাকার জামাল হোসেন ওরফে জামাল মেম্বার। ছিলেন সাধারণ লবণ চাষি। ২০০৩-২০০৪ সালের পর থেকে ইয়াবার হাত ধরে বনে গেছেন বড় কোটিপতিদের একজন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে ইয়াবার টাকা ছিটিয়ে সদস্য নির্বাচিত হন লবণ চাষি জামাল হোসেন। নির্বাচনে জয়ের পর আরও বেপরোয়া বাবা-ছেলে। বাবার টাকার দাপটে ছেলে শাহ আজম গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় রয়েছে দুইটি বিলাস বহুল বাড়ি। রঙ্গীখালী এলাকায় রয়েছে ২৬ একরের বেশি জমি। বিশাল এ সম্পত্তি কি আদও বাজেয়াপ্ত হচ্ছে এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষদের।
টেকনাফ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্ধ-ডজনের বেশি মাদক মামলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ইয়াবা তালিকার শীর্ষ ১০-এ রয়েছেন। ছেলে ইয়াবা চালান নিয়ে বেশ কয়েকবার আটক হয়েছেন আইশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এরপরও থেমে যাননি বাবা-ছেলে। সম্প্রতি ৫ লাখের বেশি ইয়াবাসহ আটক হয়ে কারাগারে যান জামাল হোসেন মেম্বার।
এদিকে, শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে। তাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাবা-ছেলের দেড় যুগের ইয়াবা ব্যবসার অবসান ঘটছে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'যারা আত্মসমর্পণ করছে। তাদের যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে। আর তাদের সম্পত্তির বিষয়টি সরকারের কয়েকটি সংস্থা দেখবে। এবিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না।'
প্রসঙ্গত যে, দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসার প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা। এ সুবাদে এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যেও ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছিল না। তাদের এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ইয়াবার আগ্রাসন অনেকটা কমে আসবে মনে করছেন স্থানীয়রা।