৮০০ রোগীর বিপরীতে ৪ জন ডাক্তার!
সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতারা।
তারা বলছেন, সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। জনবল সংকটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জেলায় শতভাগ সরকারি ডাক্তারের মধ্যে আছে মাত্র ২৬ শতাংশ। মাত্র ৫৫ জন সরকারি ডাক্তার দিয়ে জেলার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করা কঠিন।
বিএমএ সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান, স্বাচিপ সাধারণ সম্পাদক ডা. মনোয়ার হোসেন এবং বিএমএ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শামসুর রহমান জানান, সাতক্ষীরার ১০০ শয্যার সদর হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ২০০ জন রোগী ভর্তি থাকে। এছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনে আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসে আরও প্রায় ৮০০ জন রোগী। এমন একটি হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ৪ জন। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরঞ্জাম রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে রোগীরা যথার্থ সেবা পাচ্ছে না।
জেলা স্বাচিপ সভাপতি ডা. মোখলেছুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এক্সরে ফিল্ম থাকে না, ওষুধও কম। একই সঙ্গে একজন ডাক্তার যেমন জরুরি বিভাগে সেবা দিচ্ছেন, তেমনি গভীর রাতে জরুরি কলেও সেবা দিচ্ছেন। সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে এনাটমি ও ফিজিওলজিতে কোনো শিক্ষক নেই। সেখানে এনাটমি পড়ান একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। একজন রোগীর জন্য ৩ শিফটে ৩ জন ডাক্তার দরকার হয়, একই সঙ্গে দরকার ৯ জন সেবিকাও। অথচ সেই জনবল এখানে নেই। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কেবলমাত্র এই জেলারই নয়, পাশের খুলনা ও যশোর জেলা থেকেও অনেক রোগী আসে।
চিকিৎসকরা জানান, ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে জনবল বরাদ্দ আছে ৫০ শতাংশ। অথচ বাস্তবে রয়েছে তারও ৫০ শতাংশ জনবল। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজেও একই সমস্যা বিরাজ করছে। জেলায় ৭০ থেকে ৭৫টি বেসরকারি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। সেখানে চলছে চিকিৎসার নামে ব্যবসা।
কলারোয়া, তালা, দেবহাটা, শ্যামনগর, আশাশুনিসহ প্রায় সব উপজেলায় স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে বলে জানান বিএমএ সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান।