বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত
টাঙ্গাইলে দোকান ঘরে চলছে ক্লাস কার্যক্রম
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন কয়েক মাস আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। এই ঘোষণায় বিকল্প ভবন না থাকায় বেকায়দায় পড়ে যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য পাশের বাজারের দুইটি টিনের দোকান ভাড়া নেয়া হয়। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কৈয়ামধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি।
জানা গেছে, কৈয়ামধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ব্যবহারে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল পড়েছে। উঠে গেছে পলেস্তারাও। এর মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের ছাদ বাঁশ দিয়ে ঠেক দিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। গত এক বছর ধরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রশাসনের কাছে ভবনের করুণ অবস্থা সম্পর্কে জানালেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।
পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার বিষয়টি বিবেচনা করে পাশের বাজারে টিনের দুইটি দোকান ঘর ভাড়া নেন। দুই ঘরের ভাড়া বাবদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিমাসে নিজের বেতন থেকে ১ হাজার টাকা করে দিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। দোকান ঘরে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা। অন্যদিকে বিদ্যালয় বিমুখ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে ওই বিদ্যালয়ে।
প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনের ছাদ, পিলার ও বীম ফেটে গেছে। আশষ্কা এড়াতে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ছাদ ঠেক দিয়ে ক্লাস চলছে। মাঝে মধ্যেই ক্লাস চলাকালীন সময়েও পলেস্তারা ভেঙে পড়তো। বিষয়টি দীর্ঘদিন সংশ্লিষ্টদের জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে এ বছরের জানুয়ারি মাসে ইউএনও স্যার এসে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিত্যক্ত ঘোষণার পর বিকল্প কোনও পথ না পেয়ে বিদ্যালয়ের পাশের বাজারে টিনের ঘর ভাড়া করে কোনও রকমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্রে দাশ জানান, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের চাহিদা চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন পাকা ভবন বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।