সেতুর দুই পাশে নেই রাস্তা, উপকারে আসছে না স্থানীয়দের!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দক্ষিণ কালীকচ্ছ গ্রামের ঘোষপাড়া এলাকায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি সাধারণ মানুষের কোনো কাজেই আসছে না। ব্রিজটির দুই পাশে নেই কোনো রাস্তা। পশ্চিম পাশে ফসলি মাঠ, উত্তর পাশে সবজি চাষাবাদের জমি, দক্ষিণে জনবসতি ও পূর্বে সরকারি পানি নিষ্কাশনের নালা।
এর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এই সেতু। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়নে 'হাওর অঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (হিলিপ)' বরাদ্দে ৩২ লাখ টাকা ব্যয় পাঁচ বছর আগে এই সেতু নির্মাণ হয়েছিল বলে জানা যায়।
স্থানীয় এলাকাবসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি এই স্থানে নির্মাণে কারণর তারা খুঁজে পাননি। সেতুটি তাদের কোনো উপকারে আসে না। দুইপাশে সড়ক না থাকায় আজ পর্যন্ত সেতুর ওপর কেউ উঠতে পারেনি। সেতুর একপ্রান্তে নালা, অপরপ্রান্তে ব্যক্তি মালিকানাধীন চাষাবাদের জমি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) টাকা লোপাটের কারণেই এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অরবিন্দ দত্ত বলেন, দুইপাশে রাস্তা নেই, অথচ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে খালের উপর সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আনুমানিক ৩০০ গজ দক্ষিণে সেতুটি নির্মাণ করলে, স্থানীয় লোকজন উপকৃত হতেন। সেখানে খালের দুইপাশেই সরকারি রাস্তা ছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের শশ্মানঘাটও ছিল।
কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত আলী জানান, হিলিপ প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকার এই সেতু এখন স্থানীয় লোকজনের দুই পয়সার কোন কাজে আসছে না। এই ব্রিজের টাকা লুটপাট করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই ব্যাপারে সরাইল এলজিইডি কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, হিলিপ প্রকল্পে ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দে সেই সেতু নির্মাণ করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তৎকালীন উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুন্নাহার বেগম এই কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। বিষয়টি তিনিই ভালো জানেন। বর্তমানে তিনি বদলি হয়ে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত।
এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুন্নাহার বেগম জানান, পাঁচ বছর আগে হিলিপ প্রকল্পের সেই সেতু নির্মাণ হয়। আমি সরাইলে কর্মরত থাকা অবস্থায় ঠিকাদারকে সেই সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের বিল প্রদান করিনি। ঠিকাদার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করতে গেলেও মাটির অভাবে তা সম্ভব হয়নি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এএসএম মোসা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, হিলিপ প্রকল্পে সঙ্গে স্থানীয় ইউএনও'র কোনো সম্পর্ক নেই। তারা কীভাবে প্রকল্প গ্রহণ করে তারাই বলতে পারবে। তবে বিষয়টি খুব দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।