ভৈরবে মৎস্য মেলায় ক্রেতা কম, লোকসানে বিক্রেতারা

  • আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভৈরব উপজেলা প্রাঙ্গণের মৎস মেলা।  ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

ভৈরব উপজেলা প্রাঙ্গণের মৎস মেলা। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

ভৈরব থেকে ফিরে: জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা প্রাঙ্গণে প্রথমবারের মতো দিনব্যাপী মৎস মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ভৈরব উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ মেলার আয়োজন করে।

রোববার (২১ জুলাই) সকাল ৯টায় এ মেলা শুরু হয়। তবে মেলায় ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল কম। আর এ কারণে প্রতিটি দোকানেই লোকসান হয়েছে বলে দাবি মাছ ব্যবসায়ীদের।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে, মেলার বিষয়ে প্রচারণা সঠিকভাবে না হওয়ায় ক্রেতাদের সমাগম কম রয়েছে। এতে করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মেলা চলার কথা থাকলেও দুপুরের মধ্যেই ক্রেতা ও বিক্রেতাশূন্য হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ‘সুনীল অর্থনীতি মৎস্য সেক্টরের সমৃদ্ধি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশে ১৭ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ঘোষণা করেন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা মৎস্য বিভাগ। এর অংশ হিসেবে রোববার সকাল থেকে দিনব্যাপী মৎস্য মেলার আয়োজন করে তারা।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/21/1563703236559.jpg

সেই অনুযায়ী রোববার সকালে ২৬টি স্টলের অংশগ্রহণে সকাল ৯টায় উপজেলা প্রাঙ্গণে মাছ মেলার উদ্বোধন করা হয়। এর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে থেকেই মাছ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে ব্যবসায়ীরা। যার কারণে মেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রখর রোদের মধ্যে মাছ রাখতে পারছিলেন না বিক্রেতারা।

অন্যদিকে ক্রেতাদের তেমন সমাগম চোখে না পড়ার কারণে হতাশ হয়েছে ব্যবসায়ীরা। অনেক বিক্রেতা ক্রেতা না থাকার কারণে বাক্স থেকে মাছ খোলেনি।

এদিকে মেলার ২৫ নং স্টল থেকে ৪ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ মাছ প্রায় ২১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মেলায় বিভিন্ন সাইজের কাতল ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। চিংড়ির কেজি ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার, রুই ২৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, রিটা মাছ ১ হাজার ৬০০ টাকা, সুরমা ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, হল্লা ৫০০ টাকা, লইট্টা ২০০ টাকা, বাইন (ছোট) ৬০০ টাকা, আর বড় বাইন ৯০০ টাকা, ইলিশ ছোট সাইজ ৭০০ টাকা, বাচা ৭০০ টাকা, বাঘা আইড় ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, চিতল ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

তবে ২৫ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ সকলের নজর কেড়েছে। বিক্রেতারা এর দাম চেয়েছে প্রতি কেজি ২ হাজার ৫০০ টাকা করে। সেই হিসেবে মাছটির দাম হয় প্রায় ৬২ হাজার টাকা।

মেলায় অংশ নেয়া জেলার কুলিয়ারচরের মাছ ব্যবসায়ী মো. কাদির মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মাছের মেলার কথা শুনে খুব আগ্রহ নিয়ে এসেছিলাম। তবে প্রখর রোদ আর ক্রেতাদের আগমন কম থাকায় মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছগুলো বিক্রি করতে না পারার কারণে প্রতি বিক্রেতাকে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/21/1563703252775.jpg

ভৈরব ফেরিঘাট এলাকার আরেক মাছ ব্যবসায়ী নুরু মিয়া বলেন, ‘অনেক মাছ নিয়ে এসেছিলাম। তবে ক্রেতা কম থাকার কারণে মাছ কম বিক্রি হয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হবে।’

মেলায় মাছ কিনতে আসা ভৈরব পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকার বাসিন্দা মিনহাজ মিয়া বলেন, ‘মেলার কথা আজ সকালে জানতে পেরে মাছ কিনতে এসেছি। প্রচারণায় আরও বেশি জোর দেয়া দরকার ছিল। সঠিকভাবে প্রচারণা করা গেলে ক্রেতারা আরও বেশি উপস্থিত হতো।’

এ বিষয়ে ভৈরবের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. লতিফুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, মেলা শুরু হওয়ার চারদিন আগে থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হয়েছে। অনেক মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করে তাদের মেলায় আনতে হয়েছে। প্রথমবারের মতো হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পারেনি। পরবর্তীতে বিষয়গুলো নিয়ে আরও বেশি চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করা হবে।