কুড়িগ্রামে নির্মাণের ৩ মাসেই ভেঙে পড়েছে ব্রিজ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কুড়িগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মাসেই ভেঙে পড়েছে ব্রিজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

তিন মাসেই ভেঙে পড়েছে ব্রিজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম গ্রামের বাঘখাওয়ার চরে ৩ মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষ করা সেতুটি ভেঙে পড়েছে।

জানা যায়, নানা অনিয়ম আর নিম্ন মানের র্নিমাণ সামগ্রী ও পরিমাণে কম রড ব্যবহার করে কাজ করায় এ্যাপার্টমেন্ট ওয়ালসহ ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

পূর্ব ধনীরাম আবাসনগামী রাস্তার খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করে ফুলবাড়ী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৩০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

কুড়িগ্রামের পুরাতন স্টেশন এলাকার এ,টি,এম দেলদার হোসেন টিটু নামের এক ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেন। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্রিজটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566115794326.jpg
বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপারের ব্যবস্থা করেছেন গ্রামবাসী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

বাঘখাওয়ার চর ও পূর্বধনিরাম এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) যোগসাজসে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। রড, সিমেন্ট, পাথর স্টিমেটের চেয়ে পরিমাণে অনেক কম ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও নকশা অনুযায়ী র্নিমাণ ত্রুটি লক্ষনীয়।

এলাকাবাসীরা জানান, ঢালাইয়ের সময় পাথর পরিষ্কার না করে কাঁদামাটিসহ স্থানীয় বালু ব্যবহার করে ঢালাই করা হয়েছে। বালু ও পাথরের তুলনায় সিমেন্ট কম দিয়েছে। নিম্ন মানের কাজের প্রতিবাদে সে সময় এলাকাবাসী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।

পিআইও সবুজ কুমার গুপ্ত এসে কাজ বন্ধ না করার জন্য তাদেরকে হুমকি দেন। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে এ কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা হয়। সেদিনের মতো কাজ বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে আবারও নিম্ন মানের সামগ্রীতে ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। ব্রিজের এ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল, বীম ও ছাদসহ সব ধরনের ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার না করে শুধুমাত্র বাঁশ ব্যবহার করে কাজ শেষ করে ঠিকাদারের লোকজন।

স্থানীয়রা আরও বলেন, ঈদুল আযহার ১০দিন আগে ভার্টিক্যাল ওয়ালে ফাটল ধরে।  আগের দিন (১১ আগস্ট) এটি ভেঙে পড়ে। যেকোনো সময় সম্পূর্ণভাবে ব্রিজটি ভেঙে পড়বে। এতে প্রাণহানিসহ মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পূর্ব ধনীরাম আবাসনের ৯০টি পরিবারসহ বাঘ খাওয়ার চরের এক হাজার পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এই ব্রিজ। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয়রা বাঁশের পাটাতন দিয়ে কোনো রকম চলাচল উপযোগী করে তুলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, সেতুটির নির্মাণ প্রাক্কলন অনুযায়ী করা হয় নাই। ফলে ভেঙে পড়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, সম্প্রতি বন্যায় সেতুর নীচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আরেফিন জানান, ব্রিজটি বন্যা নাকি নিম্নমানের কাজের কারণে ভেঙে পড়েছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত হবার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।