বড় সিটি থেকে পাঁচ বছরে বিদ্যুতের তার সরিয়ে ফেলা হবে: প্রতিমন্ত্রী



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পাঁচ বছরের মধ্যে বড় সিটিগুলোর বিদ্যুতের তার সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হবে। প্রথম ধাপেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা সিটি থাকছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপনের প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।

ধানমন্ডি এলাকায় ৩৪টি রোডে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ৮টি রোডের কাজ শেষ হয়েছে ১১টি রোডের কাজ শেষের পথে।আগামী বছরের কাজ শেষ নাগাদ ১০ হাজার ৪০০ গ্রাহকের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত হবে। প্রত্যেকটি বাসায় একাধিক উৎসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। একটি উৎসের বিদ্যুতে বিভ্রাট হলে স্বয়ংক্রিভাবে বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল থাকবে বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বৈদ্যুতিক লাইনগুলো সরিয়ে ফেলেছি। এখন আর রাস্তার ওপর কোন তার থাকবে না। এই কাজটি আমরা ধানমন্ডি থেকে শুরু করলাম। এটাকে পাইলট আকারেও দেখতে চাচ্ছি এর ফলাফল কেমন হয়। পর্যায়ক্রমে পুরো ঢাকার ওভারহেড লাইন মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া হবে। এর জন্য প্রাক-সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, ঝড় ও বৃষ্টিতে অনেক সময় বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারের কারণে কিছুদিন পর পর গাছের ডাল কাটতে হয়। এই জটিলতা আর থাকছে না। নগরীতে সবুজায়ন আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরা এখন উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলে গ্রাহক যেমন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে। তেমনি বিতরণ কোম্পানিও অনেক সুবিধা পাবে। তাদের রক্ষণাবেক্ষণ ঝামেলা কমে যাবে, সিস্টেম লস কমে আসবে। এমনকি বাসাবাড়িতে ইচ্ছামতো লোড ব্যবহারও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কেউ হঠাৎ করে বেশি (অনুমোদিত লোডের বেশি) বিদ্যুৎ ব্যবহার শুরু করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

ধানমন্ডি ৩ নম্বরে দাঁড়িয়ে যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সে এলাকায় কিছু ঝুলন্ত তারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এগুলো ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট লাইনের। আমরা অনুরোধ করবো তারা যেনো এগুলো সরিয়ে নেয়। তাদের ক্যাবল মাটির নিচে নেওয়ার জন্য নেটওয়ার্ক প্রস্তুত আছে। তারা যেনো সেখানে চলে যায়। যেগুলো দেখছেন সেগুলো রাস্তার বাতির খুঁটি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধানমন্ডি এলাকার এই প্রকল্পের সঙ্গে হাতিরঝিলের পানিতে থাকা টাওয়ারগুলো সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো শিগগিরই সরিয়ে নেওয়া হবে। এছাড়া ঢাকার আশপাশের নদীতে থাকা বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের হাইভোল্টেজ টাওয়ারগুলো সরিয়ে ফেলার হবে।

সম্প্রতি মিরপুরের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। এ জন্য বিতরণ কোম্পানির পাশাপাশি গ্রাহকদের সচেতন হতে হবে। ঝড়বৃষ্টির পর কোথাও তার ছিঁড়ে গেলে একটু সাবধান থাকতে হবে। আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন শেষ হলে এমন দুর্ঘটনার শঙ্কা আর থাকবে না।

প্রতিমন্ত্রী ধানমন্ডির ৩ নম্বর থেকে শুরু করে, প্রকল্প এলাকার বেশকিছু রোড ঘুরে দেখেন। এমনকি একটি দু’টি বাসায় গ্রাহকের সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের প্রতিক্রিয়া মনযোগ দিয়ে শুনেন। অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির লোকজনকে এই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করার জন্য পরামর্শ দেন।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ধানমন্ডি এলাকায় যেসব বিদ্যুতের লাইন রয়েছে অনেক পুরনো (২০০০ সালের আগের)। ওভারহেড লাইনের (খুঁটিতে ঝুলন্ত) নানা রকম সমস্যা থাকে। দেখা যাচ্ছে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এমনও দেখা গেছে বাসাবাড়ির ময়লা তারে আটকে গিয়ে বিভ্রাট হচ্ছে। ওভারহেড লাইনে নানা কারণেই বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সেদিক থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল অনেক নিরাপদ ও সুরক্ষিত। এতে করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সহজ হবে।

ডিপিডিসি এমডি আরও বলেন, আমরা স্মার্টগ্রিড সিস্টেমের বিষয়েও কাজ করে যাচ্ছি। তাতে গ্রাহকসেবা আরও উন্নত হবে। আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি।

‘ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পটির জন্য বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে চুক্তি হয় ২০১৬ সালে। আর ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। ধানমন্ডির পূর্বে মিরপুর রোড, পশ্চিমে সাতমসজিদ রোড, উত্তরে ধানমন্ডি ২৭ এবং দক্ষিণে ধানমন্ডি -১ পর্যন্ত বিস্তৃত। এসব এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩০ মেগাওয়াটের মতো। আগামী ২৫ বছরে চাহিদা বৃদ্ধি বিবেচনায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আরএমইউ (উচ্চচাপ সংযোগ ও ইন্টার-কানেকশন) এবং বক্সটাইপ ট্রান্সফরমার ও এলভি বক্স (নিম্নচাপ) স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য ২৭০টি আরএমইউ ও ৩৬টি বক্সটাইপ ট্রান্সফরমার, ১৩০টি এলভি বক্স ও ১০০ কিলোমিটার ক্যাবল স্থাপন করা হবে। জায়গা সংকট এবং সিটি করপোরেশনের সঙ্গে রশি টানাটানির কারণে নির্ধারিত সময়ে থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।

বৈঠকে ফলাফল নেই, বহাল থাকছে পবিসের কর্মবিরতি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বৈঠকে ফলাফল নেই, বহাল থাকছে পবিসের কর্মবিরতি

বৈঠকে ফলাফল নেই, বহাল থাকছে পবিসের কর্মবিরতি

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে কোন সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নেতারা।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমানের সাথে বৈঠকে বসে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতিনিধিরা। এসময় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আরইবি চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্ত্তীসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিত করার দাবীতে গত ১ জুলাই থেকে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে পূর্বের ন্যায় জরুরী বিদ্যুৎ সেবা সচল রেখে কর্মবিরতি চলছে।

এর আগে গত ৫ মে থেকে একই আন্দোলনে গেলে বিদ্যুৎ সচিব তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে দুই শর্তে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। শর্ত ছিল এই ইস্যুতে বরখাস্ত, সংযুক্ত, স্ট্যান্ড রিলিজকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অব্যাহতি দিয়ে স্ব স্ব কর্মস্থলে পুনর্বহাল করতে হবে। দুই, প্রত্যেক স্তরের প্রতিনিধিসহ ১৫ দিনের মধ্যে দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ আলোচনা সভায় আরইবির প্রতি কোনো আস্থা নাই বলে জানানো হয়।

কিন্তু প্রায় ২ মাস অতিবাহিত হলেও প্রস্তাবনার আলোকে আলোচনা বা কোন ধরণের উদ্যোগ ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সাময়িক বরখাস্তকৃত ২ (দুই) জন এবং স্ট্যান্ড রিলিজ থাকা ২ (দুই) জন কর্মকর্তাকে অদ্যাবধি অব্যাহতি দিয়ে নিজ কর্মস্থলে পুনর্বহাল করা হয় নি বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।

;

যেসব কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন ইএফডিএমএস প্রকল্পের সাফল্য



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএফডিএমএস) প্রকল্পের সাফল্য। রাজস্ব ভ্যাট আহরণে স্বচ্ছতা এবং গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত বছরের অগাস্টে প্রকল্পটি চালু করে (এনবিআর)।

কিন্তু এনবিআর’র মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পদক্ষেপটিকে স্বাগত জানননি। তারা খুচরা পর্যায়ে সনাতন পদ্ধতিতে ভ্যাট সংগ্রহ করতে বেশি আগ্রহী। এজন্য শুরুর দিকে এই ডিভাইসের জন্য তারা কম রাজস্ব আহরণ হয় এমন বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নাম্বারগুলো (বিআইএন) প্রদান করেছিলেন এবং সেগুলোও বিক্ষিপ্ত উপায়ে। এর ফলে ইএফডি মেশিনের জন্য সঠিক ব্যবসায়িক আবহ তৈরি হয়নি এবং প্রত্যাশিত সাফল্যও আসেনি। অন্যদিকে ইএফডিএমএস সিস্টেমের কারিগরি কোন ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরাতম করতে চারটি পক্ষের উপর নির্ভর করতে হয়।

বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। এই প্রকল্পে এনবিআর’র কোন খরচ হয়নি, পুরোটা বেসরকারি বিনিয়োগ। সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু তারা যখন কাজটি পায় তখন ডলার রেট ছিল ৮৮ টাকা, যা বর্তমানে প্রায় ১২০ টাকা। এতে ডিভাইস কেনার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

;

কলড্রপ ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

কক্সবাজারে প্রতিমন্ত্রীর ড্রাইভ টেস্ট



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত,  কল ড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

ছবি: সংগৃহীত, কল ড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

  • Font increase
  • Font Decrease

মোবাইল ফোনে কলড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এরই মধ্যে কল ড্রপ ইস্যুতে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শাও নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। শুধু গ্রামীণফোনই নয়, অন্য অপারেটরদের কলড্রপও মনিটরিং করা হচ্ছে।

সোমবার (১ জুলাই) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিটিআরসিতে এক বৈঠকে মোবাইল অপারেটরদের মান্নোয়ন সংক্রান্ত এক বৈঠকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে কলড্রপের হার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কমিয়ে আনতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী কলড্রপের বিষয়ে গ্রাহক অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন এবং এ বিষয়ে কোনো মোবাইল অপারেটরকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান। এজন্য ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি জরিমানা আদায়ের ঘোষণা দেন পলক।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কক্সবাজারে ড্রাইভ টেস্ট মনিটরিং করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ছবি-বার্তা২৪.কম


 

এরই মধ্যে প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কক্সবাজার বিমানবন্দরে নিজে উপস্থিত থেকে ড্রাইভ টেস্ট মনিটরিং করেন।

জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে দেশব্যাপী টেস্ট ড্রাইভ শুরু হয়ে গেছে। ড্রাইভ টেস্টের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অপারেটরদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিনিউকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) স্বীকৃত কলড্রপের হার ৩ শতাংশ বা এর নিচে। সম্প্রতি, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তথ্যমতে, গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক সবারই কলড্রপ ওই সীমার নিচে রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী কলড্রপের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে উল্লেখ করে বলেন, মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করা হবে। বেঞ্চমার্ক যাই থাকুক, কলড্রপ রেট কাগজে-কলমে যাই থাকুক, আমরা গ্রাহক সন্তষ্টির ওপর জোর দেবো।

সাধারণত, মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কের কারণে কলড্রপ হয়ে থাকে। মূলত, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা, স্প্রেকট্রাম স্বল্পতা, এন্টেনা ও রেডিওতে ক্যাবলের কানেকশন দুর্বলতার কারণে কলড্রপ হয়ে থাকে।

তবে শুধুমাত্র এসব কারণেই অনেক সময় কলড্রপের জন্য এককভাবে দায়ী থাকে না। হ্যান্ডসেট সমস্যা, ভূগর্ভস্থ ক্যাবল কাটা পড়া বা এর মানের অবনতি এবং টাওয়ার কোম্পানির সেবার মানের কমতি থাকলেও এই সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে ঢাকা শহরে উঁচু ভবন, টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপনে বাধা, অবৈধ জ্যামার, রিপিটার, বুস্টারের কারণেই নেটওয়ার্ক বাধাগ্রস্ত হয়।

২০২২ সালে জাতীয় সংসদে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কলড্রপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জাতীয় সংসদে কলড্রপ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

;

লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ

লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের চিনিশিল্পের রুগ্নদশা কাটাতে আখ উৎপাদন ও চিনিকলের আধুনিকায়নে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগ্রুপ এস.আলম অ্যান্ড কো.। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন- বিএসএফআইসি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। যার মধ্যে রয়েছে- প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত আখ উৎপাদন ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ, আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তোলা, ৬ মেগাওয়াট পাওয়ার কো-জেনারেশন, অ্যাগ্রো-ভোলটিক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ, বাই-প্রোডাক্ট ভিত্তিক প্ল্যান্ট তৈরি, কোল্ড স্টোরেজ ও অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে তোলা, প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ ইত্যাদি। দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ ও ফরিদপুর এর চিনি কল অঞ্চলে উক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে।

উচ্চ মানসম্পন্ন আখ উৎপাদনে উদ্যোগ নেবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি যৌথভাবে কাজ করবে বিএসএফআইসি, বিএসআরআই এবং আন্তর্জাতিক গবেষকদের সঙ্গে। বিভিন্ন হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনে ব্যবহার করা হবে ক্লোনিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংসহ আধুনিক প্রযুক্তি। একইসঙ্গে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

এছাড়া, এস.আলম অ্যান্ড কো. দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনি কল এ ১২৫০টিসিডি সক্ষমতার একটি আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তুলবে, যেটির সক্ষমতা সর্বোচ্চ ২৫০০টিসিডি পর্যন্ত বর্ধিতযোগ্য। এবং ফরিদপুরে চিনি কল এ ১০০০টিসিডি সক্ষমতার একটি আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তুলবে, যেটির সক্ষমতাও সর্বোচ্চ ২৫০০টিসিডি পর্যন্ত বর্ধিতযোগ্য।

এখান থেকে প্রতি বছর ১২ হাজার টন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ব্রাউন সুগার উৎপাদিত হবে। যা পরে বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি বছর ১৫ থেকে ১৮ হাজার টন হবে। যেহেতু সারা বছর ধরে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু না রাখলে সেখান থেকে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব নয়, তাই একটি চিনি শোধনাগার  প্রতিষ্ঠা করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। এর মাধ্যমে চাহিদা থাকলে (সিজনে) বছরে প্রায় ৯০০ টিপিডি আমদানিকৃত কাঁচা চিনি এবং কম চাহিদার সময় (অফ সিজনে) ১ হাজার টিপিডি কাঁচা চিনি পরিশোধন করা সম্ভব হবে।

অধিকন্তু, চিনি কারখানার, চিনি রিফাইনারি এবং অন্যান্য প্ল্যান্ট, ফ্যাক্টরির চাহিদা মেটাতে তৈরি করা হবে ৬ মেগাওয়াট বা এর বেশি সক্ষমতার পাওয়ার প্ল্যান্ট। এক্ষেত্রে বয়লার জ্বালানি হিসেবে আখের অবশিষ্ট অংশ বা ছোবড়া ব্যবহার করা হবে। এছাড়া- ডুয়েল ফুয়েল বয়লার ব্যবহার করা হতে পারে, যেখানে জ্বালানি হিসেবে কয়লারও ব্যবহার থাকবে।    

পাশাপাশি সেতাবগঞ্জ এ ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এবং ফরিদপুর এ চিনি কল অঞ্চলে ১০ মেগাওয়াট সক্ষমতার অ্যাগ্রো-ভোলটিক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। তাতে যথাক্রমে ৪০০ একর ও ৪০ একর ভূমির প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন শস্য এই সোলার প্ল্যান্ট প্রকল্পের আওতায় উৎপাদন করা হবে। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের পর সোলার প্ল্যান্টের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যুক্ত করা হবে জাতীয় গ্রিডে।

চিনি কলে বিভিন্ন বাই-প্রোডাক্ট থাকে যেমন- মোলাসেস, ফিল্টার প্রেস মাড ও ছাই। মোলাসেস বিক্রি করা হবে কেরু অ্যান্ড কো. এর কাছে। অন্যান্য বাই-প্রোডাক্ট এর জন্য সে অনুযায়ী প্ল্যান্ট নির্মিত হবে। এছাড়া- সোলার প্ল্যান্ট ও দিনাজপুর ও ফরিদপুর এলাকার মৌসুমী শস্যের সংরক্ষণ প্রয়োজন হবে। তাই ২০০০০ মেট্রিক টন সক্ষমতার কোল্ড স্টোরেজ নির্মিত হবে সেতাবগঞ্জ  ও ফরিদপুর এর চিনি কল অঞ্চলে।

সেতাবগঞ্জ চিনিকল ও ফরিদপুর চিনিকলকে লাভজনক উদ্যোগে রূপান্তর করতে পণ্য বহুমুখীকরণ অপরিহার্য। দিনাজপুর ও ফরিদপুর অঞ্চলে শাকসবজি ও ফলমূলের প্রাচুর্য রয়েছে, যা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করে।  এস.আলম অ্যান্ড কো. এর পরিকল্পনায় হিমায়িত, টিনজাত, ডিহাইড্রেটেড এবং আচারযুক্ত শাকসবজি প্রক্রিয়াকরণ-উত্পাদনে একটি উদ্ভিজ্জ প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া- টিনজাত ফলের শাঁস, ফলের রস, মিশ্র ফলের রস এবং বিভিন্ন ধরণের ফল থেকে শুকনো ফল উত্পাদন, হিমায়িত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলুর চিপস, স্টার্চ, পাস্তা, নুডলস, স্যুপ, হিমায়িত খাবার, টিনজাত খাবার, আচার, সিরিয়াল এবং অন্যান্য খাদ্য পণ্য উত্পাদন ও প্রক্রিয়াজাতের পরিকল্পনাও রয়েছে এস.আলম অ্যান্ড কো. এর।

প্রস্তাবিত কারখানাগুলোতে পণ্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের পিপি ব্যাগ, এলডিপিই প্যাকেট ও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজিং প্রয়োজন হবে। তাই সেতাবগঞ্জ ও ফরিদপুর দুই জায়গাতেই একটি করে প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি স্থাপন করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এসব কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা নির্ধারণ করা হবে।

টেকসই কৃষি-ভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি, স্থানীয় অর্থনীতির পালে হাওয়া দিতে ও দেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী করতে এস.আলম অ্যান্ড কো. এর এসব বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এই উদ্যোগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিল্প মন্ত্রণালয় এর মাননীয় মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হূমায়ুন, এমপি; শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা; শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশন) এস এম আলম; শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. শামীমুল হক; বিএসএফআইসি এর সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার এবং বিএসএফআইসি এর চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি। এছাড়া এস.আলম অ্যান্ড কো. এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর বেলাল আহমেদ, ডিরেক্টর আশরাফুল আলম, নির্বাহী পরিচালক (অর্থ), সুব্রত কুমার ভৌমিক, এফসিএ; উপদেষ্টা মো. আরিফুর রহমান অপু; অ্যাকাউন্টস, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, মো. মনিরুজ্জামান, এফসিএ; অ্যাকাউন্টস, এজিএম মো. নজরুল ইসলাম, এসিএ; এসএস পাওয়ার ১ লিমিটেড এর ম্যানেজার, টেকনিক্যাল সার্ভিস নাগিব মাহফুজ সহ অন্যান্যরা।

;