তিতাস-১৪ কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহের উদ্বোধন
তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ উদ্বোধন করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে দৈনিক কমবেশি ১২ মিলিয়ন ঘনফুট জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) গ্যাস সরবরাহের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর ও ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বাপেক্স, এসজিএফএল ও বিজিএফসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ।
বাপেক্স তাদের বিজয়-১১ রিগ ব্যবহার করে তিতাস ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শুরু করে গত ১৯ মার্চ। শুরুতে কূপটি হতে এক সময় ২৪৮৮ পিএসআই চাপে দৈনিক ২৯.৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হতো। অতিরিক্ত পানি উৎপাদনের কারণে ২০০৯ সালে কূপটি ওয়ার্কওভার করে ১৮৭৯ পিএসআইজি চাপে দৈনিক ১৯.৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হয়। আবার পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে গ্যাসের উৎপাদন দৈনিক ৬ মিলিয়নে নেমে আসে, পানি উৎপাদনের হার ৩৯ মিলিয়ন ঘনফুটে পৌঁছায়। অতিরিক্ত পানির কারণে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর কূপটির গ্যাস উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। নভেম্বর পর্যন্ত তিতাস-১৪ কূপ হতে ক্রমপুঞ্জিভূত উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ ছিল ১৬৩ বিলিয়ন ঘনফুট।
তিতাস ফিল্ডে তিনটি প্রধান গ্যাস স্তর রয়েছে। তিনটির মধ্যে বিস্তরের উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৫৬৪ বিলিয়ন ঘনফুট। তিতাস কূপ নং-১৪ বি স্তরে অবস্থিত। কূপটি থেকে মোট ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হবে আশা করা হচ্ছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য (প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গ্রাহক প্রান্তে ওয়েটেড গড় মূল্য ২২.৮৭ টাকা হিসাবে) ২ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা।
তিতাস কূপ-১৪ ওয়ার্কওভার শেষ করতে সর্বমোট ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। দেশে বিরাজমান গ্যাস সংকট মোকাবিলায় সরকারকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। সংকটময় মুহূর্তে ওয়ার্কওভারকৃত কূপ হতে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ১০-১২ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ করা হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
পেট্রোবাংলার অধীনে বিজিএফসিএল প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন ও গ্যাসের উপজাত কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাতকারী একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির আওতায় তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, নরসিংদী, মেঘনা ও কামতা রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, নরসিংদী ও মেঘনা। ৫টি গ্যাস ফিল্ডের ৩৯টি কূপের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ৫৬০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। পেট্রোবাংলার সর্ববৃহৎ দেশীয় গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি হিসেবে বিজিএফসিএল দেশীয় কোম্পানির মোট উৎপাদনের শতকরা প্রায় ৭১ ভাগ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে গতিতে ফিরেছে পেট্রোবাংলা। যার ফল ইতোমধ্যেই পাওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। একদিন আগে ২৪ মে, কৈলাশটিলা থেকে ৮ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। নতুন খননকৃত ওই কূপটি থেকে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ আসছে। মাস দুয়েক আগে রশিদপুর-৯ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। আরও অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে পেট্রোবাংলা জানিয়েছেন।
এ দফায় সোনার দাম কমল ১২৮৩ টাকা
টানা দ্বিতীয় দফা কমল সোনার দাম। এ দফায় ভরিতে ১ হাজার ২৮৩ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৭ হাজার ১৭৭ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
শনিবার (২৫ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাজুস।
আগামীকাল রোববার (২৬ মে) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ১৭ হাজার ১৭৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১১ হাজার ৮৪৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ৯৫ হাজার ৮৬৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৭৯ হাজার ২৫৭ টাকায় বিক্রি করা হবে।
সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
মালিক-শ্রমিক উভয়ের স্বার্থরক্ষায় কাজ করার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষের যাতে স্বার্থ রক্ষা হয় সেভাবে পরিকল্পনা করে কাজ করতে সরকারসহ মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
শনিবার (২৫ মে) বিকেলে এফবিসিসিআইর শ্রমনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় ভার্চুয়্যালি অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
মাহবুবুল আলম বলেন, “শ্রমিকরা আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। একইভাবে দেশের অর্থনীতিক সমৃদ্ধি অর্জনে মালিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। আমাদের দেশের ব্যবসায়ী বা কারখানা মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে অসাধারণ আন্তরিকতা বিদ্যমান। তবে শ্রমিকদের নিয়ে যাতে কমপ্লায়েন্স এর সাথে কাজ করা যায় এবং মালিকপক্ষেরও যেন স্বার্থ রক্ষা হয় সেভাবে পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে”।
এসময় শ্রম আইনের আধুনিকায়নের করার ব্যাপারে কমিটির সদস্যদের মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে প্রস্তাবনা তৈরি করার আহ্বান করেন তিনি।
কমিটির সদস্যদের সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরিকৃত প্রস্তাবনা নিয়ে এফবিসিসিআই কাজ করবে বলে জানান সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান কে এম এইচ শহীদুল হক। বিশ্বের অনেক দেশের থেকে বাংলাদেশের শ্রম ব্যবস্থা উন্নত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমব্যবস্থায় বাংলাদেশ অনেক দেশের থেকে তুলনামূলক উন্নত। তবে শ্রমিকদের দক্ষতায় পিছিয়ে থাকার কারণে কারখানায় লোকবল বেশি দরকার হয়। মেশিন অপারেটরদের সাথে অনেক সময় একজন সহায়ক রাখার প্রয়োজন হয়। যা সাধারনত অন্যান্য দেশে দেখা যায় না।
এফবিসিসিআইর পরিচালক নিয়াজ আলী চিশতী বলেন, শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে খাবার, পরিবহন ইত্যাদির সাথে তাদের স্বাস্থ্যের দিকটাও খেয়াল রাখা উচিৎ। শ্রমিকরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকলে শিল্পের জন্যই ক্ষতি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক আবুল হোসেন, এ এম মাহবুব চৌধুরী, কাওসার আহমেদ, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।
উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায় থেকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
নেট মিটারিংয়ের সম্ভাবনা অনেক, তবে অর্জন সামান্যই
নেট এনার্জি মিটারিংয়ের সম্ভাবনা অনেক তবে অর্জন সামান্যই। বিনিয়োগ ছাড়াই এর সুবিধা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এতে ৫ থেকে ৭ বছরেই বিনিয়োগ উঠে আসছে। তবে অব্যবহৃত সোলার প্যানেল পড়ে থেকে ময়লা পড়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে।
এ কারণে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন। এজন্য প্যানেলগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কোনো কৌশল বের করতে হবে।
শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সোলার নেট মিটারিংয়ের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এমন মতামত উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, নেট মিটারিং কার্বন নিঃসরণ কমানোর পাশাপাশি ভোক্তার আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। তবে এখানে আমদানি শুল্কসহ কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে। এগুলো দূর করা গেলে অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখতে সক্ষম।
বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সৌর বিদ্যুতের ইনভার্টার ও স্টোরেজের ওপর থেকে ডিউটি কমানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। এফবিসিসিআই প্রস্তাবনা দেবে। সেই প্রস্তাবনা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ হোসাইন আরো বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে খুবই আন্তরিক হয়ে কাজ করছে। একটা সময় যখন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বাসার ছাদে সোলার প্যানেল থাকা বাধ্যতামূলক করা হলো, তখন অনেকেই ভাড়ায় আনতো বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে। সংযোগ পাওয়ার পর সেগুলো ফেরত দিতো। এখানে আমাদেরও দায় রয়েছে। তবে এখন প্রেক্ষাপট বদলে যাচ্ছে। এখন গ্রাহকদের নিজেদের স্বার্থে সোলার প্যানেল থাকা উচিত। কারণ, এতে তারা অনেক লাভবান হবেন।
অব্যবহৃত সোনার প্যানেল পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোলার প্যানেলে ময়লা পড়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে অন্যরা আগ্রহ হারাচ্ছে। প্যানেলগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কোনো কৌশল বের করতে হবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-এর (বিইআরসি) সদস্য (পাওয়ার) আবুল খায়ের মোহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, ভর্তুকি দিয়ে কোনোখাতকে স্থায়ী ভিতের ওপর দাঁড় করানো যায় না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠলে সেটাই হয় শক্তিশালী ও স্থায়ী। তবে হ্যাঁ, একটা সময় পর্যন্ত প্রণোদনার প্রয়োজন থাকতে পারে।
ইপিজেডগুলোতে বিপুল পরিমাণ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ইপিজেড কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না- এমন আলোচনার প্রেক্ষিতে বিইআরসির সদস্য বলেন, ইপিজেড নিয়ে আমরাও সমস্যায় আছি। তারা আমাদের কাছে আসছেন লাইসেন্স থেকে অব্যাহতি চাইতে।
পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের নেট মিটারিং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সেরা। এ জন্য রক্ষণাবেক্ষণের প্রোটোকল থাকা দরকার।
আমার মনে হয়, বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলো হুমকি মনে করছে। তাই, তারা এতে কম আগ্রহ দেখাচ্ছে। এখানে তাদের ঝুঁকি হ্রাসের ব্যবস্থা থাকা উচিত। তাদের হুইলিং চার্জ থাকলে তবেই নেট মিটারিং সফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
স্রেডার সাবেক সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, আমি যখন স্রেডা’তে ছিলাম, তখনও ইপিজেডের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছিলাম। একাধিক দফায় প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলাম কিন্তু সফল হতে পারিনি। ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ কেনে নির্দিষ্ট দামে। তারপর সেখানে ১৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আদায় করে। হতে পারে, সেই সার্ভিস চার্জ হারানোর ভয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ভিজিটিং গবেষণা ফেলো ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ইশতিয়াক বারী।
তিনি বলেন, ইপিজেডগুলোতে নেট এনার্জি মিটারিং করা গেলে বছরে ৩ লাখ ২৩ হাজার ৯শ ৪৮ মেগাওয়াট থেকে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯শ ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে।
চীন ২০১৩ সালে, ডেনমার্ক ২০১০ সালে নেট এনার্জি মিটারিং পদ্ধতি চালু করেছে। এর মাধ্যমে তাদের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে ২০১৮ সালে নেট মিটারিং নীতিমালা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ১৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ৩শ ২৪টি শিল্প কারখানা এবং ৫শ ৭৪টি আবাসিকে নেট মিটারিং স্থাপন করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৮ বছরের বিনিয়োগ উঠে আসছে। এরপর আরো ১২ বছর ফ্রি সার্ভিস পাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী নুরুল আখতার বলেন, নেট মিটারিং ঝুঁকিমুক্ত এবং বিনিয়োগ ছাড়াও সম্ভব। এখানে নিজে বিনিয়োগ করা যায় আবার তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিনিয়োগ ছাড়াও সম্ভব। এখানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসা উচিত। নেট মিটারিং কার্বন নিঃসরণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ঢাকা চেম্বারের পরিচালক সাইফুদ্দৌলা বলেন, নেট মিটারিংয়ের নীতিমালায় অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। ধরুন, আমি একটি কারখানায় বিনিয়োগ করলাম। ৫ বছর পর সেই কারখানা বন্ধ হয়ে গেল, তাহলে কী হবে! সরকারের কাছে বিক্রির বিকল্প সুবিধা থাকা উচিত। এছাড়া অর্থায়নের দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে হবে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অজিৎ কুমার ভৌমিক বলেন, নেট মিটারিং অনেক হচ্ছে। ৩ থেকে ৪ মেগাওয়াট পর্যন্ত হচ্ছে। আমরা প্রস্তুত আছি গ্রাহক এলেই দেওয়া হবে।
ইউনাইটেড ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ২ থেকে ৩ বছর পরে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে গ্রাহকেরা ধরে নিচ্ছেন, সোলার নষ্ট হয়ে গেছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সোলার নিয়ে। এখন ৫ বছরের আগেই বিনিয়োগ উঠে আসছে। গ্রিড বিদ্যুতের চেয়ে সৌর বিদ্যুতের দাম অনেক কম। এখানে সচেতনতা বাড়াতে পারলেই হয়। কিছু বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া উচিত, তবে বরাদ্দ লোডের বেশি হবে না, এমন বিধিনিষেধ থাকা উচিত।
ডেসকো’র নাসির উদ্দিন বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক সমস্যা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উত্তরাতে একটি লাইটিং প্রজেক্ট করে। সেখানে দেখলাম রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছুদিন পরেই অকেজো হয়ে পড়ে। অপর একটি প্রকল্পে দেখলাম, প্যানেলের ওপর দুই ইঞ্চি ধুলার আস্তরণ পড়েছে আবার ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটির মতো সফল প্রকল্পও রয়েছে।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন খানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি)-এর চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীর, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার-এর এডিটর মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, টোটাল এনার্জির হেড অব বিজনেস ইমরানুল হক চৌধুরী, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এসই জহিরুল করিম প্রমুখ।