পিএইচপি - কেএসআরএম জমি যুদ্ধ, কে জিতল?



বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই শিল্প গ্রুপই বছরে প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা লেনদেনের ব্যবসা করেন। দুই শিল্প গ্রুপের চেয়ারম্যানের ধর্মপরায়ণতা, মানবিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও ব্যবসার নৈতিকতার কথা কমবেশি ব্যবসায়ীরা জানেন।

দুই জনের দান-খয়রাতের কাহিনী মানুষের মুখে মুখে। অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে দিয়েছেন দুইজনই।

কিন্তু গত মাসে শিল্পকারখানার পাশে বাংলাদেশ রেলওয়ের সরকারি মালিকানাধীন লিজ নেয়া মাত্র কয়েক হাজার টাকার জমি নিয়ে যে লঙ্কা-কাণ্ড ঘটে গেল, সেটা নিয়ে শুধু চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা নন, সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলে চিন্তিত হয়ে পড়ে। ভাবনায় ও দ্বন্দ্বে পড়ে যায় সকলে।

দুই শিল্প মালিকের মধ্যে সামান্য জায়গা নিয়ে কেন এই বিরোধ? এর প্রকৃত মালিক আসলে কে? কোন মালিক সঠিক পথে এগুচ্ছেন? সামান্য এ জায়গা নিয়েই বা কেন এত হাকডাক?

এদের একজন হলেন- দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির সুফি মিজানুর রহমান, আরেকজন হলেন নামকরা রড উৎপাদন ও বিদেশগামী জাহাজ ব্যবসার মালিক কেএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান।

বয়সে বড় সুফি মিজানুর রহমান। ব্যবসার পরিধিও তার অনেক, বছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ছাড়াও বোনাস দেন ১৪টি। কেএসআরএমও কম যায় না। মোহাম্মদ শাহজাহানও আর্থিকভাবে বেশ স্বচ্ছল। মোহাম্মদ শাহজাহান অর্ন্তমুখি স্বভাবের, সাধারণের সঙ্গে খুবই কম চলাফেরা করেন। বিপরীতে সুফি মিজানুর রহমান ধর্ম-কর্ম আর সামাজিকতা নিয়ে সাধারণের সঙ্গে চলতে-থাকতে ভালোবাসেন।

এরকম শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক হয়েও কয়েক হাজার টাকার লিজের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের নেপথ্যের কাহিনী খুবই করুণ ও পীড়াদায়ক। তাদের দুজনের ঘনিষ্ঠদের পক্ষ থেকে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল নানাভাবে, নানা উপায়ে।

কিন্তু দু'পক্ষই অনড় ছিল কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে। শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। প্রশাসনিকভাবেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮ দিন পর। এই ৪৮ দিনে মিডিয়াজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

মিডিয়ার এই উত্তাপের রেশ সাধারণের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। বলাবলি হচ্ছিলো নানা কথা ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানতো বলেই বসলেন- এতো ছোটোখাটো ইস্যূ নিয়ে কেন রশি টানাটানি, এতে তো চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদেরই সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আরেকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী জানতে চাইলেন, প্রকৃত ঘটনা কি। কোন পক্ষ বেদখল করেছে। মাঝারি মানের এক ব্যবসায়ী বলে বসলেন- ১০ কোটি টাকা খরচ করতে পারবেন, কিন্তু আপোস করবেন না শাহজাহান সাহেব। আর ব্যবসার কথা চিন্তা করে সুফি মিজান সহজে আপোস রফা করে ফেলবেন। এতো গেল শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের মনোভাব।

সরকারের নীতিনির্ধারকদের ঘনিষ্ঠ এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সরাসরি জানতে চাইলেন, প্রকৃত ঘটনা আসলে কি? অর্থাৎ সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের পাশে রেলওয়ের লিজ নেয়া জমিতে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে কাটা তারের বেড়া দিয়ে পিএইচপির জমি দখলে নেয়ার বিষয়টি এতো বিস্তৃত রূপ নেয়।

৬০ শতক ও এক দশমিক ৬ একর জায়গা ২০০৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ে থেকে লিজ নেয় পিএইচপি- এমন দাবি তাদের। ২০১৭ সালে ওই জায়গা লিজ নেয় রেল থেকে কেএসআরএম- এমন পাল্টা দাবিও তাদের।

দুই পক্ষের এমন অনড় দাবিতে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ পর্যন্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যান- একই সঙ্গে চাপ অনুভব করতে থাকেন। এরকম নাটকীয় ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি, দেখেওনি কেউ।

যে এলাকায় রেলের জমি নিয়ে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে এতো টানাপোড়েন, সেখানে উভয় প্রতিষ্ঠানের ভারী শিল্পের কারখানা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের একপাশে পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ, অপর প্রান্তে বিরল প্রজাতির হাজার হাজার গাছের বন রয়েছে। অর্থাৎ দুই পাশেই পিএইচপির স্থাপনা।

এর কিছু দূরেই কেএসআরএমের শিল্প প্রতিষ্ঠান। রেল লাইন অতিক্রম করে পিএইচপির ১৬০ একর বনে ঢোকার প্রবেশপথসহ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে কেএসআরএম। যেদিন অর্থাৎ গত ২৯ মার্চ কেএসআরএম এই কাঁটা তারের বেড়া দেয়, তখন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান-পরিচালকদের সবাই ছিলেন ঢাকায় তাদের প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএস এর কনভোকেশনে। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে কোনো অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার সুযোগটি গ্রহণ করে কেএসআরএম।

বিভিন্ন ফলজ ও বিলুপ্ত প্রজাতির গাছের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পিএইচপির কর্মচারীরা বাগানে যেতে পারছে না। বাগান আর গাছ রক্ষা করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে উভয় পক্ষের সামাজিক মর্যাদার ইস্যুটি। মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধও তো আছেই। পণ্য বেচাকেনার বাজার বা শেয়ার দখল করার চাইতেও জমি দখলের এই যুদ্ধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের কাছে। দেন-দরবারও চলতে থাকে উভয় পক্ষের। থানা, পুলিশ, সংবাদকর্মী, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বিভ্রান্ত হতে থাকে- আসলেই ঘটনা কি?

নানা তৎপরতা ও উদ্যোগ শেষে ৪৮ দিন পর রেলওয়ের কর্মকর্তা ও পুলিশের উপস্থিতিতে ৬০ শতক লিজের জমি থেকে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ অবৈধ কাঁটাতারের বেড়া তুলে নিতে বাধ্য হয়। কারণ রেল কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয় যে, এই জায়গার মালিক ছিল পিএইচপি ফ্যামিলি। ওই জায়গার পাশে ১ দশমিক ৬ একর লিজের জায়গা নিয়ে এখনো বিরোধ। দুই পক্ষের দাবি এটা তাদের জায়গা। জায়গা-জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়টি প্রমাণ করতে হয় বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমে। আগামীতে বোঝা যাবে ১ দশমিক ৬ একর লিজ নেয়া জায়গাটি আসলেই কার ।

মাত্র ৬০ শতক লিজের জায়গা, যার লিজমূল্য মাত্র ২৫ হাজার টাকার মতো। এই সামান্য টাকার জমি দখলে নিয়ে যে উত্তেজনা তৈরি করেছে চট্টগ্রামের দুটি নামকরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সেটি খুবই হাস্যকর সাধারণের কাছে। কেউ কেউ ভাবতে পারে ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত বিরোধের মতোই বিশাল এক উত্তেজনাপূর্ণ ব্যাপার বুঝি। কিন্তু যখন কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে দখল করা জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, তখন কি একটু লজ্জা হয় না কিংবা অনুশোচনা!

বছরে কেএসআরএমের ব্যবসায়িক লেনদেন কয়েক হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে সরকারকে রাজস্ব দেয় প্রতি বছর কয়েকশ কোটি টাকা। লাভের বিশাল অঙ্ক দান খয়রাত করেন কেএসআরএমের মালিক মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি ধর্মপ্রাণ ও দানবীর। ইসলাম এমন এক ধর্ম, যেখানে শান্তি ও মানবিকতার কথা বলে।

অন্যের জমিতে জোর করে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার ঘটনার পর মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, ধর্মের শিক্ষা আর শান্তির কথা তখন কি মনে ছিল না?

এরপর গত ১২ মে কয়েক হাজার মানুষকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করতে চেয়েছিলেন নিজের এলাকা সাতকানিয়ায়। সেখানে হুড়োহুড়ি আর ঠেলাঠেলিতে প্রাণ গেছে নয় জন নিরীহ মহিলার। সে মামলায় আসামি করা হয়েছে কেএসআরএমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে। তিনি এখন পলাতক বলে জানিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

মজার ব্যাপার হলো- যেদিন এই অপ্রীতিকর ঘটনা সাতকানিয়ায় তার পরের দিন বাড়বকুণ্ডের অবৈধ দখল থেকে কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে নেয় মোহাম্মদ শাহজাহানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।

বিপদ যখন আসে তখন চারদিক থেকেই আসতে শুরু করে। এখানে ধর্মের শিক্ষা হলো ধৈর্য্য ধরা। জোর করে বেড়া না দিয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলে কিংবা নিজেরা বসে সমঝোতা করলে কি ভালো হতো না? সময়, টাকা, আত্মমর্যাদা সবই তখন রক্ষা পেত।

   

ফের বাড়ল সোনার দাম, প্রতি ভরি ১১৯৫৪৪ টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে ফের বেড়েছে সোনার দাম। এবার এক হাজার ৮৪ টাকা বাড়িয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম বাড়ায়, সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দর সোমবার (২০ মে) থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, হল-মার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১০৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮০৩ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৮০ হাজার ৮৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত শনিবার (১৮ মে) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৮০ হাজার ১৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এনিয়ে এ বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ২৪ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ১৩ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১১ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।

;

বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, ১৭ দিনে এলো ১৩৬ কোটি ডলার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে আবার রেমিট্যান্স প্রবাহে ‍সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। আর গত এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ১১৪ কোটি ৫৮ লাখ, ১০৯ কোটি ৩১ লাখ , ১২১ কোটি ৭২ লাখ ও ১২২ কোটি ৬ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসেবে চলতি মাসে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মাসে ২০০ কোটি ডলার ছুঁতে পারে দেশের প্রবাসী আয়। মূলত আসন্ন কোরবানিকে ঘিরে বাড়ছে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা।

এদিকে মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২০ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

এদিকে গত এপ্রিল মাসে দেশে এসেছে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মার্চে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর গত জানুয়ারি মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

;

‘সমস্যা আমাদের মতো করেই সমাধান করতে হবে’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প ও সহজলভ্য উৎস আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সমস্যা আমাদের মতো করেই সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রোববার (১৯ মে) বিদ্যুৎ ভবনে ইনোভেশন শোকেসিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে ইনোভেশন শোকেসিং-২০২৪ আয়োজন করা হয়। এতে বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন দফতর, সংস্থা হতে ২৪টি ইনোভশন উদ্যোগ প্রদর্শন করা হয়।

ভার্চয়ালি যুক্ত হয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশকে সামনে রেখে পরিকল্পনা ও কার্যক্রম গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। নতুন নতুন উদ্ভাবনকে আমরা প্রণোদনা দিচ্ছি।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট (এআই) এখনই অনেক সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে। এআই-এর ব্যবহার বাড়িয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টিতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় তত হবে। একই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যও নিশ্চিত হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ২০৪১ সালের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে নিজস্ব প্রযুক্তির উদ্ভাবন বা ব্যবহৃত প্রযুক্তির নিজস্ব ভার্সন সৃজন করতে হবে।

ইনোভেশন শোকেসিং ২০২৪-এ আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস তৈরিকরণ-এ প্রথম স্থান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বেজড ‘স্মার্ট কাস্টমার এসিস্ট্যান্ট- চ্যাটবট” ২য় স্থান, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) জিআইএস বেসড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থপনার আউটেজ ডিজিটালি মনিটরিং এবং লোড ম্যানেজমেন্ট-এ ২য়, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) আন্ডারগ্রাউড ক্যাবল টেস্ট ভ্যান, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি) অটোমেটিক ইমার্জেন্সী রেসপন্স টেস্ট অব এসটি ইমার্জেন্সী লুব অয়েল পাম্প থ্রো ডিসিএস ইন্ট্রিগেশন এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল) চার্জ এয়ারকুলার এন্ড চার্জ এয়ার রিসিভার ড্রেইন লাইন মডিফিকেশন ফর প্লান্ট আউটেজ রিডাকশন তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান ইনোভেশন কর্মকর্তা নিরোদ চন্দ্র মন্ডেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবির। স্রেডার চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা, পিডিবি’র চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, বিআরইবি’র চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্ত্তী, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সহ দফতর ও সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

প্রতি সপ্তাহে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত সেভিংস খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সব শ্রেণির জনগোষ্ঠিকে আরো সহজ, ঝামেলাহীন সেভিংস-সেবা গ্রহণের সুযোগ করে দিতে এবং তাদের মাঝে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে এবার বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হলো দুটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বল্পমেয়াদী ‘সাপ্তাহিক সেভিংস’। প্রথমবারের মতো দেশে সাপ্তাহিক এই ডিজিটাল সেভিংস সেবা চালু হলো বিকাশ অ্যাপে, যেখানে গ্রাহকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ২৫০ থেকে শুরু করে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সাপ্তাহিক কিস্তিতে সেভিংস করতে পারছেন। সেভিংস করা যাচ্ছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক-এ।

নতুন এই সাপ্তাহিক সেভিংস সেবা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। স্বল্প আয় এবং দৈনিক মজুরি ভিত্তিক পেশাজীবীদের অল্প অল্প করে অর্থ জমানোর সুযোগ করে দিবে, যা তাদের ভবিষ্যত নিরাপত্তা, কৃষি-ব্যবসায় বিনিয়োগ, শিক্ষা, চিকিৎসা বা অন্য যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে কাজে আসবে।

সাপ্তাহিক সেভিংস-এর পরিমাণ এবং মেয়াদ:

এই সেবার আওতায় বিকাশ গ্রাহকরা সাপ্তাহিক ২৫০, ৫০০, ১০০০, ২০০০, এবং ‌৫০০০ টাকা কিস্তিতে ৬ মাস অথবা ১২ মাস মেয়াদে আইডিএলসি, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক-এ সেভিংস খুলতে পারছেন। বিকাশ অ্যাপেই ব্যাংকগুলোর দেয়া তুলনামূলক মুনাফার হারের তথ্য বিবেচনা করে দিনে-রাতে যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে মাত্র কয়েক মিনিটেই সেভিংস খোলার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রাহক।

বিকাশ অ্যাপে সেভিংস করার পদ্ধতি:

নতুন সেভিংস খুলতে বিকাশ অ্যাপের হোমস্ক্রিন থেকে ‘সেভিংস’ আইকনে ট্যাপ করে ‘নতুন সেভিংস খুলুন’-এ ট্যাপ করতে হবে। সেভিংস এর ধরন থেকে ‘সাধারণ সেভিংস’ বেছে নিয়ে সেভিংসটি কেনো খুলতে চান সেটি বাছাই করতে হবে। এরপর, সেভিংস-এর মেয়াদ ৬ মাস বা ১২ মাস, জমার ধরন (সাপ্তাহিক) এবং প্রতি মাসে যে পরিমাণ টাকা জমাতে ইচ্ছুক ২৫০, ৫০০, ১০০০, ২০০০, বা ৫০০০ নির্বাচন করতে হবে।

পরের ধাপে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকের তালিকা থেকে পছন্দ অনুযায়ী আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক বা ঢাকা ব্যাংক নির্বাচন করতে হবে। এরপর সেভিংস-এর নমিনি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। তারপর সেভিংস-এর বিস্তরিত দেখে এবং নিয়ম ও শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে, বুঝে সম্মতি দিতে হবে। সবশেষে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নাম্বার দিয়ে স্ক্রিনের নিচের অংশ ট্যাপ করে ধরে রাখলেই সেভিংস-এর আবেদন সম্পন্ন হবে। প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে বিকাশ ও ব্যাংক থেকে চলে আসবে নিশ্চিতকরণ মেসেজ। বিকাশ অ্যাপ থেকে একাধিক সেভিংস খুলতে পারবেন যেকোনো গ্রাহক।

বিকাশ অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় ব্যালেন্স থাকা সাপেক্ষে নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেভিংস-এর টাকা কেটে নেয়া হবে। সেভিংস-এর মেয়াদপূর্ণ হয়ে যাবার পর বিকাশ অ্যাপেই মুনাফাসহ মূল টাকা পেয়ে যাবেন গ্রাহক যা কোনো খরচ ছাড়াই ক্যাশ আউট করতে পারবেন যেকোনো বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট বা নির্দিষ্ট ব্যাংকের এটিএম থেকে। এদিকে, জরুরি প্রয়োজনে মেয়াদপূর্তীর আগেই সেভিংস সেবা বন্ধ করতে চাইলে গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ থেকেই তা করতে পারবেন।

সাপ্তাহিক সেভিংস প্রসঙ্গে বিকাশ-এর চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, “ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে মাসে বা সপ্তাহে টাকা জমানো বেশ কঠিন। এদিকে দৈনিক বা সপ্তাহ ভিত্তিতে আয় করা মানুষদের জন্য নিয়মিত বিরতিতে ব্যাংকে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব। তাই ব্যস্ত জীবনে সকল পেশার মানুষের জন্য আর্থিক লেনদেনে স্বস্তি এনে দিতেই বিকাশ তার অ্যাপে দুটি নতুন ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক সেভিংস সেবা যুক্ত করেছে। সঞ্চয়ের অভ্যাস ব্যক্তি এবং সমাজের আর্থিক নিরাপত্তাকে যেমন নিশ্চিত করবে তেমনি দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করবে বলে আমরা মনে করি।”

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিকাশ অ্যাপে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাসিক সঞ্চয় সেবা চালু হয়। এই সেবার জনপ্রিয়তার কারনে স্বল্প সময়ের মধ্যে চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০ লাখ সেভিংস গ্রহণ করেছেন বিকাশ গ্রাহকরা, যাদের এক-তৃতীয়ংশই নারী। বর্তমানে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক-এর পাশাপাশি ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক সিটি ব্যাংকের মাসিক ‘সিটি ইসলামিক’ সেভিংস সেবা গ্রহণ করছেন গ্রাহকরা।

সেভিংস সেবা নিয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে– https://www.bkash.com/products-services/savings।

;