বাজেটে মানবিক উন্নয়ন ভাবনা



এরশাদুল আলম প্রিন্স, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর

  • Font increase
  • Font Decrease

দারিদ্র বিমোচন, অসমতা হ্রাস এবং জনগণের জীবনমানের মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনই বাজেট প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য। বাজেট শুধু জিনিস-পত্রের দাম বাড়া কমার ফিরিস্তি নয়। বাজেটের সাথে মানবিক উন্নয়নের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এটি সরকারের উন্নয়ন ভাবনা ও একইসাথে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডাও।

২০১৪ সালের নির্বাচনে এরকম একটি লক্ষ নিয়েই সরকার কাজ শুরু করেছে। সব সূচনে ইতিবাচক না হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই সরকার সফল। তবে উন্নয়ন অবকাঠামোর পাশাপাশি মানবিক উন্নয়ন বিষয়টিও আমাদের একইভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। এবারের বাজেটে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে মানবিক উন্নয়নের দিকটি নানাভাবেই এসেছে। বাস্তব কারণেই তার সবকিছু এখানে উল্লেখ করা সম্ভব না।

উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়ে সরকার ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দুটি পঞ্চ-বার্ষিকি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যা এখনও বাস্তবায়নাধীন। দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়তে সরকার রূপকল্প ২০২১ তৈরি করেছে। সে রূপকল্পমতো সরকার তার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একই ধারাবাহিকতায় সরকার ‘রূপকল্প ২০৪১’ও তৈরি করেছে যা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসা সাপেক্ষে কার্যকর হবে।

মাননীয় অর্থমন্ত্রী তার সরকারকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের সুযোগ দেয়ার জন্য জনগণের কাছে আবেদন করেছেন। অনেকেই হয়তো এটিকে নির্বাচনী বাজেট হিসেবে দেখবেন। রাজনৈতিক বক্তব্যের মারপ্যাচে বাজেট নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা কমই হয়।

সরকারের অনেক মন্ত্রীই গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে একে অপরের সহায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

গণতন্ত্র ও ‍উন্নয়ন যে একে অপরের বিকল্প না, বরং সহায়ক শক্তি মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে সে কথাই উঠে এসেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত  করতেই প্রয়োজন গণতন্ত্র ও সুশাসন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার সাথে সাথে একে সুসংসহ করা এবং উন্নয়নের সুফল সমাজের সর্বস্বরে পৌঁছানো জন্য প্রয়োজন মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও সুশাসন। অর্থমন্ত্রীর এরকম বক্তব্যে আমরা গণতন্ত্র সম্পর্কে আশান্বীত হই। তার এ বক্তব্য দেশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক ভূমিকারই প্রতিধ্বনি।

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধ পরিকর। ছোট দেশ কিন্তু অধিক জনসংখ্যা। এরকম একটি দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জনসংখ্যার চাপ। আমরা রাজনৈতিক বক্তব্যের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে জনসংখ্যাকে বোঝা না বলে জনসম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছি। এটি তখনই সত্যি যখন জনসংখ্যাকে জনসমপদে রূপান্তরিত করা যায়। কিন্তু আমরা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হইনি। এ বাজেটে জনসংখ্যাকে জনসম্পকে পরিণত করার জন্য দৃশ্যমান কিছু কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি বড় নিয়ামক হচ্ছে নিয়ম ও পদ্ধতির অনুসরণ ও সে মতো রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা। একটি দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামোতেই সেটি সম্ভব। কারণ, একটি দুর্নীতিযুক্ত সমাজে কোনো সিস্টেমই কাজ করেনা। তবে এর ভেতর দিয়েও আমরা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছি। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না। জনগণকে সাথে নিয়েই এ কাজটি করতে হয়।

সুশাসন, মানব উন্নয়নের একটি বড় হাতিয়ার হতে পারে ডিজিটালাইজেশন। এটি শুধু একটি শ্লোগান নয়, এটি সময় ও যুগের দাবী। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করতে ডিজিটালাইজেশনকে আমরা কাজে লাগাতে পারি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী যথাথই এটিকে সংস্কারে একটি কর্মকৌশল হিসেবে দেখছেন।

তবে তিনি সংস্কার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কতিপয় আইন প্রণয়নের কথাও বলেছেন। আইন প্র্রণয়ন সংস্কারের মূল সূচক-এটি একটি আমলাতান্ত্রিক ধারণা। আইন দিয়ে সংস্কার করা যায় না, বরং সংস্কারই আইন প্রণয়নের প্রণোদনা সৃষ্টি করে। যাই হোক-সরকারের এক দশকের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইনের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন; যেমন নিরাপদ খাদ্য আইন, নীতি ও বিধিমালা, ভোক্তা অধিকার আইন, সাধারণ ভবিষ্য তহবিল বিধিমালা, প্রতিযোগিতা আইন, এমএলএম বিষয়ক আইন, ট্রেডিং করপোরেশন আইন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আইন, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ইত্যাদি।  

ডিজিটাল বাংলাদেশ এই সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার। ক্ষমতায়নের একটি বড় উপায় হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়ন সম্ভব। রাষ্ট্র্রের অনেক সেবাই এর মাধ্যমে মানুষের দোড়গোড়ায় পৌছে দেয়া সম্ভব।

সেজন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠানো নির্মাণ ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু ডিজিটালাইজেশন মানে শুধু জেলা উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন নয়। দেশে ৮ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে মানুষের দোড়গোড়ায় তথ্য-প্রযুক্তি সেবা প্রদান সম্ভব নয়। সে জন্য সরকারের জনমুখী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমাল প্রয়োজন। এটিকে সরকারের রাজস্ব আয়ের উ]স হিসেবে বিবেচনা না করে বরং মানুষের ক্ষমতায়ন ও সর্বস্তরে সুশাসনের একটি হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন, তবেই তথ্যপ্রযুক্তির সুফল মানুষ ভোগ করতে পারবে। প্রান্তিক ভোক্তা ও সেবাদাতাদের জন্য এ খাতে বাণিজ্য না হলেও টিকে থাকার উপায় নির্ধারণও জরুরি।

প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার প্রসারে আমাদের অগ্রগতি আছে। কিন্তু জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তনের জন্য যে শিক্ষা প্রয়োজন তা এখনও সম্ভব হয়নি। সময়োপযোগী শিক্ষা ও শিক্ষার পরিবেশ আমাদের নেই। সে জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন। উন্নত শিক্ষাই উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের রূপকার। মাননীয় অর্থমন্ত্রী তা শিক্ষার ওপর জোড় দিয়েছেন। তিনি উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম বাড়ানো কথা বলেছেন। এটি শুভ  উদ্যোগ।

৭ হাজার নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৫ হাজার শ্রেণীকক্ষ, ১০ হাজার ৫০০ জন শিক্ষক ও ৩০ হাজার খেলার সামগ্রী বিতরণের যে কথা তিনি বলেছেন তা প্রশংসার দাবী রাখে। সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ভিত্তিক আইসিটি সেন্টার গড়ার যে পরিকল্পনা নিয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে আগামী প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করবে। মাধ্যমিক পর্যায়েও সরকার একইভাবে গুরুত্বারোপ করেছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রমে প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর জোড় দেয়া হয়েছে। নতুন করে ২৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ ও ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি কার্যক্রম হাতে নেয়ে হয়েছে।

দেশে প্রায় প্রতিবছর ২০ লক্ষ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। তাই শ্রমমুখী শিক্ষা প্রয়োজন। অনেকেই অভিবাসী হয়। ফলে তাদের জন্য কারিগরী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোড় দেয়া হয়েছে। সারা দেশে ১০০টি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৩৮৯টি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রও গড়ে তোলা হবে। এতে করে, দেশে ও দেশের বাইরে গড়ে উঠবে একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী। এরাই আগামী বাংলাদেশকে পথ দেখাবে। শিক্ষার মতো স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও মানব কল্যাণের অনেকগুলো প্রকল্পই এ বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে যা বাস্তবায়ন হলে মানব উন্নয়নে আমরা আরো এগিয়ে যাবো।

 

   

ইলেক্ট্রিক্যাল এবং লাইটিং পণ্যের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য



কানজুল কারাম কৌষিক, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
ইলেক্ট্রিক্যাল এবং লাইটিং পণ্যের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য

ইলেক্ট্রিক্যাল এবং লাইটিং পণ্যের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের 'ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ এবং লাইটিং পণ্য' এর ওপর সম্প্রতি 'মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশ' (এমডব্লিউবি)- দেশব্যাপী একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, বর্তমান এই শিল্পে দেশীয় কোম্পানিগুলো বাজারে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে এমডব্লিউবির গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। গবেষণার ফলাফল এবং দিক-নিদেশর্না তুলে ধরেন- মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডব্লিউবির সহ-প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসাইন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভাগের বর্তমান চ্যায়ারমেন ড.এ বি এম শহীদুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড.রাজিয়া বেগম।

গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণার আওতায় আনা পণ্যগুলো ছিল- সুইচ, সকেট, হোল্ডার, মাল্টি-প্লাগ, সার্কিট ব্রেকার, মিটার এবং বিভিন্ন হালকা পণ্য যেমন এলইডি লাক্স, এলইডি টিউব, এলইডি প্যানেল, ব্র্যাকেট এলইডি, জিএলএস, এনার্জি এফিশিয়েন্সি বাল্ব, ইমার্জেন্সি লাইটিং অপশনস।

প্রতিবেদন অনুসারে, এটি একটি বড় এবং অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। বর্তমানে দেশজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার খুচরা বিক্রেতা এবং ২৫০০ উদ্যোক্তাসহ মোট ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। দুই ক্যাটাগরির পণ্যের সম্মিলিত বাজার আকার প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ পণ্যের বাজার প্রায় ৩,৩০০ কোটি এবং লাইটিং পণ্যের বাজার প্রায় ২,৭০০কোটি টাকা। আশাব্যাঞ্জক তথ্য হলো- উভয় পণ্যের বাজার গত দুই দশক ধরে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যের গড় প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১০% (প্রায়) এবং ১৩%(প্রায়)।  যদি আগামী দিনগুলোতে এই প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকে তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই খাতটি একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বড় খাত হিসাবে আবির্ভূত হবে।

এই বাজারের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, মোট মার্কেট শেয়ারের প্রায় অর্ধেক নন ব্যান্ডেড অর্থাৎ নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনবিহীন পণ্য দখল করে আছে। যেহেতু দেশীয় কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধির হার অনেক বেশি, তাই আগামী দিনগুলোতে দেশীয় কোম্পানিগুলো বাজারে আরও বেশি আধিপত্য বিস্তার করবে।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুপারস্টার গ্রুপ উভয় প্রকার পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। গবেষণা অনুসারে, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ব্যান্ডেড পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৯ শতাংশ, ওয়ালটন ১৭ শতাংশ, ক্লিক ১৭ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৯ শতাংশ, ওসাকা শতাংশ এবং ব্লিঙ্ক, এমইপি ও লাক্সারি প্রত্যেকে ৩ শতাংশ করে বাজার দখল করে আছে। অন্যদিকে ব্রান্ডেড লাইটিং পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৫.৫৯ শতাংশ, ক্লিক ১৩ শতাংশ, ওয়ালটন ১২ শতাংশ, ট্রান্সটেক ১০ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৮ শতাংশ এবং ফিলিপস ৭ শতাংশ বাজার দখল করে আছে।

এই শিল্পের অগ্রগতির পেছনে মূলত গত ২৫ বছরে ব্যাপক বিদ্যুতায়ন, অব্যাহত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান আয়, দ্রুত ও পরিকল্পিত নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সরকারের গৃহীত সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে।

দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় এই শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য গ্রে-মার্কেটের কার্যক্রম হ্রাসে সরকারের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সাথে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারের বিদ্যমান ট্যাক্স পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করতে হবে যাতে কোম্পানিগুলো কম ব্যয়ে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারে। পাশাপাশি এ সমস্ত শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে তোলার জন্য সরকার এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে নিরাপদ ও মানসম্মত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

;

ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে শরী‘আহ বিষয়ক সচেতনতা ওয়েবিনার



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এর উদ্যোগে “ব্যাংকিং কার্যক্রমে শরী‘আহ পরিপালন” শীর্ষক ওয়েবিনার বুধবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তানভীর আহমেদ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ কায়সার আলী এবং মূল বিষয়ের ওপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ শামসুদ্দোহা।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস ও মোঃ আলতাফ হুসাইন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ শাব্বির, কাজী মোঃ রেজাউল করিম, মিফতাহ উদ্দীন ও ড. মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ক্যামেলকো তাহের আহমেদ চৌধুরী এবং আইবিটিআরএ-এর প্রিন্সিপাল মোঃ নজরুল ইসলামসহ প্রধান কার্যালয়, আইবিটিআরএ এবং আটটি কর্পোরেট শাখার ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

;

চট্টগ্রামে মাল্টিপারপাস বে-টার্মিনাল, আবুধাবি পোর্টস দিচ্ছে ১০০ কোটি ডলার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অধীন মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ (এডি পোর্টস)। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই স্মারকে সই করেন। এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এডি পোর্টসের বাংলাদেশ এজেন্ট সাইফ পাওয়ারটেকের প্রতিনিধিরা উপস্থিতি ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অধীনে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করবে।


জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ পাশে বঙ্গোপসাগরের তীরে ‘বে- টার্মিনাল’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়ার পর সেখানে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য ২০১৭ সালে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়। কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত মাস্টারপ্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, মাস্টারপ্ল্যানে এক হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ মোট তিনটি টার্মিনাল রয়েছে। তিনটি টার্মিনালের দৈর্ঘ্য চার দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। মাস্টারপ্ল্যানে মোট ১১টি জেটি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চ্যানেলে যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১২ মিটার ড্রাফটের এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। আবহাওয়া এবং সাগরের বড় বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার বা ঢেউনিরোধক বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বে-টার্মিনাল থেকে বহির্নোঙরের দূরত্ব এক কিলোমিটার।

মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। এক হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং অপরটি নির্মাণে দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড অর্থায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার ও অ্যাক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করবে বিশ্বব্যাংক।

বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ইতোমধ্যে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫০০ দশমিক ৬৯ একর সরকারি খাস জমি অনুমোদন পেয়েছে। ব্রেক ওয়াটার নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বছরে ৫০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৬ সালে অপারেশনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


স্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বন্দর পরিচালনাকারীরা বিনিয়োগ করছেন। আমি সম্ভাবনা ও স্বপ্ন দেখি, এক সময় আসবে, যখন চট্টগ্রাম বন্দর পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেও এর কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা কাসিফ আল মৌদি, আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমেদ আল মুতায়া।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে মেরিটাইম সেক্টরে আমাদের যে যাত্রা, তা পুনর্জীবিত ও উজ্জীবিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সময়ে সমুদ্র ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সক্ষমতা অর্জন করবে। পায়রা বন্দরে নির্মাণাধীন জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়েছে। এটি নতুন অনুভূতি। আগে মাদার ভেসেলে পণ্য পরিবহনের জন্য আমাদের কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হতো। বর্তমানে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে। এতে করে নির্ভরশীলতা কমে যাবে। মাতারবাড়ি বন্দর আঞ্চলিক হাবে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বে-টার্মিনাল নির্মিত হলে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ আসা-যাওয়া করবে। জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। চট্টগ্রাম বন্দর অন্য ধরনের উচ্চতায় চলে যাবে। বে-টার্মিনালের সঙ্গে সড়ক, রেলওয়ে কানেক্টিভিটি থাকবে। পণ্য পরিবহন সহজলভ্য হবে। বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। অল্প সময়ের মধ্যেই মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাই।


জানা যায়, টার্মিনালটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ১০ লাখ টিইইউ (টোয়েন্টি-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) কন্টেইনার এবং ৭০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এতে দেশের আমদানি ও রপ্তানি দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচ এবং সময় কমে আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় এডি পোর্ট গ্রুপ একটি দক্ষ প্রতিষ্ঠান। এডি পোর্ট গ্রুপের ৫টি সমন্বিত বিজনেস ক্লাস্টার ডিজিটাল, ইকোনমিক সিটিস এন্ড ফ্রি জোন, লজিস্টিকস, মেরিটাইম এবং পোর্ট রয়েছে। আবুধাবি অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ মাকতা গেটওয়ে এডভান্সড ট্রেড এন্ড লজিস্টিক প্লাটফরম তৈরি এবং পরিচালনা করেছে। যা আবুধাবি জুড়ে বাণিজ্য ও লজিস্টিক নৌ, স্থল ও আকাশ পথে পরিষেবা গুলোকে একীভূত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমসহ বে-টার্মিনাল প্রজেক্টে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথভাবে এডি পোর্ট গ্রুপ বিনিয়োগ করবে । এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে তথা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিদেশী বিনিয়োগ আসবে এবং দেশীয় অর্থের সাশ্রয় হবে। এতে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। এডি পোর্ট গ্রুপের সাথে অংশীদারিত্বে কাজ করার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে মর্মে আশা করা যায় ।

উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। বে টার্মিনালে ভিড়তে পারবে ১২ মিটার গভীরতা ও ২৮০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের জাহাজ।

;

‘রাজনীতিবিদরা অর্থনীতিবিদদের হুকুমের আজ্ঞাবহ দেখতে পছন্দ করেন’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
“বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

“বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতি ও অর্থনীতির মধ্যে অসম রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদরা অর্থনীতিবিদদের গৃহভৃত্য না হলেও হুকুমের আজ্ঞাবহ হিসেবে দেখতে পছন্দ করেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত “বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।

বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে ড. ফরাসউদ্দিনের লেখা বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।

বিআডিএস মহাপরিচালক (ডিজি) বিনায়ক সেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শামস্ রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অর্থনৈতিক বিবেচনায় নেয়া প্রকল্পের লাভ ক্ষতির সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের লাভ ক্ষতির বড় একটা পার্থক্য থাকে। সেটি সব দেশেই আছে, আর এটাকেই রাজনৈতিক অর্থনীতি বলা হয়ে থাকে।

‘নীতিমালার যে ধরনের বিশ্লেষণ দরকার এবং বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা দরকার, সেটা সরকারের অনেক সময় থাকে না। এর সঙ্গে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সংস্কারের বিষয়ও রয়েছে’। তিনি বলেন, এ কারণেই রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির বড় ধরনের বিচ্যুতি দেখা যায়।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেয়া পরামর্শের সঙ্গে রাজনৈতিক সরকারের পদক্ষেপ না মেলার কারণেও বড় ধরনের বিচ্যুতি হচ্ছে, বলে মনে করেন তিনি।

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, কিছু প্রভাবশালীদের রাতারাতি অন্যায়ভাবে অর্থ বৈভব অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া। এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল অপরিহার্য ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, নিজ পরিশ্রমে ছোট থেকে বড় হয়েছেন এমন সত্যিকারের শিল্প উদ্যোক্তারা এসব কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বৈষম্যের কারণে ব্যবসায় পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ফরাসউদ্দিন বলেন, অর্থনীতিবিদেরা গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে জ্ঞানের কথা বলে থাকেন। আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের কথা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের শোনা উচিত।

‘আমি বড় অর্থনীতিবিদ নই। তবু মনে করি, প্রচলিত পথে দারিদ্র্য বিমোচনের পরিবর্তে শিল্পায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার,’ তিনি বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদটিকে সাংবিধানিক পদে উন্নীত করার দিয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, “নিদেনপক্ষে গভর্নর পদে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া উচিত।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং এর গভর্নরের অটোনমির বিষয়ে কারো দ্বিমত করার সুযোগ নেই বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন ড. মশিউর রহমান।

ডঃ বিনায়ক সেন বলেন, রাজনীতি ও অর্থনীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না। রাজনীতির ওপর ধনীদের প্রভাব কমাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা কীভাবে করা যায় বিশ্বব্যাপী চিন্তা করা হচ্ছে।

ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খেলার যায়গা নয়। এখানে মানুষের আমানত থাকে। মানুষের আমানত নিয়ে খেলার সুযোগ নেই।

;