অর্থমন্ত্রীর বৈঠকের পর ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজিবাজার
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পর্ষদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর জরুরি বৈঠকের পর দেশের দুই পুঁজিবাজারেই ধারাবাহিকভাবে দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দরপতন শুরু হয়। দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার আরও বড় দরপতন হয়।
ব্যাংক, বিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ প্রায়সব শেয়ারের দাম কমায় দিনভর সূচক পতনের মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়। ফলে সোমবার (৬ জানুয়ারি) ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৬৮ পয়েন্ট। এর আগের দিন ডিএসইর সূচক কমেছিল ৫৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ দুদিনে সূচক ১২৭ পয়েন্ট কমে প্রায় চার বছর আগের জায়গায় ফিরেছে। এর আগে ২০১৬ সালের ১৭ মে ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৪ হাজার ৩২৬ পয়েন্ট।
একই অবস্থায় লেনদেন হয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সোমবার এই বাজারের প্রধান সূচক কমেছে ১৪৮ পয়েন্ট। রোববার কমেছিল ১৬৩ পয়েন্ট। সূচকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এর আগের দিন কমেছিল ৩ হাজার ১৮২ কোটি ২৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তবে, সোমবার সূচক ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও লেনদেন বেড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ক্রান্তিলগ্ন থেকে পুঁজিবাজারকে উত্তোলনের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ডিএসই পর্ষদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ডিএসইর পক্ষ থেকে বাজারের তারল্য সংকট নিরসনে ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড দেওয়া এবং গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির দ্বন্দ্ব নিরসনসহ মোট ১১ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী এসব দাবি শুনে বিএসইসিকে পুঁজিবাজারের সমস্যা নিরসনে প্রথমে গুজব বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আর তার প্রভাব রোববারের পর সোমবারও (৬ জানুয়ারি) দিনভর সূচক পতনের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। আর তাতে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬৮ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ২৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক কমেছে ১২ পয়েন্ট।
এদিন, লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৬৩টির, কমেছে ২৫৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৮১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
এদিকে, দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক ১৪৮ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন, সিএসইতে ৮২০টি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ১৬ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ১৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ৩৭৯টি কোম্পানির শেয়ারের।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির দাম বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ১৬৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।