আপত্তির পরও ডিএসইর এমডি পদে ছানাউলের নাম প্রস্তাব

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছানাউল হক/ছবি: সংগৃহীত

ছানাউল হক/ছবি: সংগৃহীত

তিন শেয়ারহোল্ডার ও একজন স্বতন্ত্র পরিচালকের আপত্তি সত্ত্বেও কাজী ছানাউল হককেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে পরিচালনা পর্ষদ। এখন এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে অনুমোদনের জন্য পাঠাবে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

ডিএসইর এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত ডিএসইর পর্ষদ সভায় ডিএসইর এনআরসি কমিটি দুজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করে। এর মধ্যে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান এবং চেয়ারম্যান আবুল হাশেমের নেতৃত্বে এমডি পদে কাজী সানাউল হকের নাম প্রস্তাব করা হয়। স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক এম কায়কোবাদ ছাড়া ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার ও স্বতন্ত্র পরিচালক সবাই উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সভায় রকিবুর রহমান এবং আবুল আবুল হাশেম ছাড়াও স্বতন্ত্র আর চার পরিচালক এমডি পদে ছানাউল হকের নাম সমর্থন করে। ফলে ১০ জন পরিচালকের মধ্যে ছানাউল হককে ৬ জন সমর্থন করেন। আর তার বিষয়ে আপত্তি করেন বাকি তিন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও একজন স্বতন্ত্র পরিচালক। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়।

বৈঠক সূত্রে জানায়, দ্রুত বিএসইসির কাছে চার পরিচালকের আপত্তিগুলোসহ কাজী সানাউল হককে নিয়োগের বিষয়ে চিঠি দেয়া হবে। এসব বিষয় বিবেচনা করে অনুমোদন দেবে বিএসইসি।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, কাজী ছানাউল হকের বিষয়ে আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে। তিনি বিডিবিএলের বিনিয়োগ বিভাগের জিএম পদে থাকাকালীন দুর্বল সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারীর শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে বিডিবিএলকে শাস্তি দিয়ে চিঠি দেয় বিএসইসি। তার সময়কালীন আইসিবির মুনাফায়ও বড় ধস নামে।

কাজী ছানাউল হক আইসিবি’র এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত। তার দায়িত্ব গ্রহণের আগের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) আইসিবি’র মুনাফা হয়েছিল ৪৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ৭.২৯ টাকা। আর ছানাউল হকের নেতৃত্বাধীন প্রথম অর্থবছরে (২০১৭-১৮) মুনাফা কমে আসে ৪১৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা শেয়ার প্রতি ৬.২৭ টাকায়। আর ২য় অর্থবছরে (২০১৮-১৯) রীতিমতো ধস নামে। ওই অর্থবছরে আইসিবির মুনাফা হয় মাত্র ৬০ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ০.৮৬ টাকা।

আইসিবি’র সাবেক এমডি কাজী ছানাউল হককে আইসিবির অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলব করার ঘটনাও আছে। তার দায়িত্বরত অবস্থায় ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। শেয়ার ব্যবসায় জড়িত যেসব লোক ঋণ পাওয়ার যোগ্য নন তাদের ঋণ দেয়া, যাকে ২৫ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা তাকে কয়েক কোটি টাকা করে ঋণ দেয়ার ঘটনা ঘটে। এসবের মাধ্যমে সরকারের ১৩৭ কোটি টাকা ক্ষতি হয় বলে বেরিয়ে আসে অনুসন্ধানে।

আরও পড়ুন- দুদকের তালিকায় থাকা ছানাউলই হচ্ছেন ডিএসইর এমডি!