বিশেষ ফান্ড নয়, পুঁজিবাজার চাঙার জন্য প্রয়োজন কমিশন পুনর্গঠন

  • মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ছবি: সংগৃহীত

আস্থা ও তারল্য সংকটে মৃতপ্রায় পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে বিশেষ কোনো ফান্ডের প্রয়োজন নেই। তারল্য সংকট সমাধানে এই প্রণোদনা কার্যকর হবে না। বাজারকে চাঙা করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের একটি অংশ পুঁজিবাজার চাঙা করার জন্য স্বল্প সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার দাবি করেছে। এ উদ্যোগ বাজারের তারল্য সংকট দূর করবে বলে দাবি তাদের।

এ বিষয়ে ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘তারল্য সংকট সমাধানে এই প্রণোদনা কার্যকর হবে না। পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে হলে প্রথমেই বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে হবে।’

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে এখনই আট ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘প্রথমত পুঁজিবাজারে ন্যায্য মূল্যে ইক্যুইটি শেয়ার তালিকাভূক্ত করা এবং পুঁজির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

দ্বিতীয়ত, ‘পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের গঠন ও দায় ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে করপোরেট সুশাসন বিধিমালার প্রয়োগ করা। করপোরেট ব্যবস্থাপনাকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে কার্যত আলাদা করা। সম্পদের অব্যবস্থাপনা করলে অপরাধীদের আর্থিক অপরাধ আইনের আওতায় বিচার করতে হবে।’

তৃতীয়ত, পুঁজিবাজারের স্বার্থে কারসাজিমূলক লেনদেন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থত, অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকির বন্ড মার্কেটে চালু করতে হবে।

পঞ্চমত, দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা মুক্ত করতে হবে। লেনদেন ব্যয়কে কমিয়ে আনতে হব। সুদের হারকে এক অংকে নামিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে হবে।

বাংলদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ও বিনিময় হার নীতি প্রনয়নে এবং তার বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে এবং সরকার নিজে নিজের আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আনয়ন করবে।

সর্বোপরি, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)কে পুনর্গঠন এবং কার্যকর করতে হবে। তাহলেই বাজারে আস্থা আসবে, পুঁজি হারিয়ে চলে যাওয়া বিনিয়োগকারীরা আবারও বাজারে ফিরতে শুরু করবে। বিদেশিরা আকৃষ্ট হবে বিনিয়োগ করতে।