জাবিতে ২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট পাস
সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কার্যক্রম পরিচালনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় কমেছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
গত বছরের মতো এ বছরও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়নি। রোববার (২৭ জুন) সকালে ভার্চুয়্যালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় এ বাজেট পাস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বরাবরের মতো এ বাজেটে শিক্ষা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে নামে মাত্র বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গবেষণা খাতে এক কোটি টাকা বাড়িয়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বাজেটের এক দশমিক ৫০ শতাংশ। পাশাপাশি এ বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ৪০ কোটি ৯২ লাখ তিন হাজার টাকা।
২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার এ বাজেট বাস্তবায়নে আয়ের উৎস হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২৩৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার অনুদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বাজেটে শিক্ষক বেতন ও বিভাগ খরচ খাতেও বরাদ্দ বেড়েছে ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এই খাতে গত বছর বরাদ্দ ছিলো ৯২ কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা। সেটা বাড়িয়ে ৯৩ কোটি ২৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা করা হয়েছে। যা মূল বাজেটের ৩৫ শতাংশ।
অবসরকালীন সুবিধা বাবদ বরাদ্দ ৩৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১৩ দশমিক সাত শতাংশ।
প্রশাসনিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। বিবিধ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ১৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ৭.৫৭ শতাংশ।
শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে ছাত্রবৃত্তি বরাদ্দ ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা কমিয়ে তিন কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়া ও খেলাধুলা, শিক্ষার্থীদের পাঠ বহির্ভূত কার্যক্রমে ২৪ লাখ ৭০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসা খাতে বাজেট ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬৩ লাখ এক হাজার টাকা যা গত বছর ছিল তিন কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এবারের বাজেটে এই খাতে কমেছে এক কোটি আট লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়াও আনুসাঙ্গিক ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আবাসিক হল সমূহে ২৩ কোটি ৪২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, ভর্তি খরচ বাবদ ১২ কোটি টাকা। অন্যান্য ভাতা ৯ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় এক কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
বাজেট বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেট এর বিভিন্ন জায়গায় সংশোধনী আনা প্রয়োজন। আর শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ না বাড়িয়ে উল্টো কমানো হয়েছে। এটা মোটেই কাম্য না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য। সেখানে বাজেটে তাদের জন্যও কিছু রাখা হয়নি। বাজেট বাড়েনি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খাতেও। সেখানেও কমানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হলে বরাদ্দের মধ্যেও রয়েছে অসামঞ্জস্য। আবার গবেষণা খাতকে একেবারেই উপেক্ষিত রাখা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান গবেষণাগার ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের জন্য তেমন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য আমির হোসেন (প্রশাসন) বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবছরও সিনেট অধিবেশন করা সম্ভব হয়নি। তাই এবছরও অর্থ কমিটি বাজেট তৈরি করে সুপারিশ করেছে তারপর সেটা সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় পাস করা হয়েছে। অর্থ কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক।