নওগাঁয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত

  • সুমন আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

প্রায় দেড় বছর পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই নওগাঁর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে সশরীরে পাঠদান শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছে। তাদের পরনে সেই চিরচেনা স্কুল ড্রেস, কাঁধে বইয়ের ব্যাগ। তবে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরিধান করে স্কুলে এসেছে তারা।

বিজ্ঞাপন

স্কুলগুলোর ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, সাবান দিয়ে হাত ধুয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ফটকে স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও অবস্থান করতে দেখা গেছে।

জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল আজিজ সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞান বিলানোর মাঝেই শিক্ষকের আনন্দ। তা আবার শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা উচ্ছ্বসিত।

বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিলীমা আকতার বলেন, দেড় বছর পর শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাসরুমে পেয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। সরাসরি ক্লাস শুরু হওয়ায় আমরা ভীষণ খুশি। অনলাইন ক্লাসে সব শিক্ষার্থী যেমন যুক্ত হতো না, তেমনি সেখানে ‘প্রাণ’ পাওয়া যেত না। সরাসরি না পড়ালে বা ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে না এলে পাঠদানের ‘মজাটা আসে না’।

বিজ্ঞাপন

জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন বলেন, অনলাইনে ক্লাস করতে করতে সশরীরে ক্লাস করার অনুভূতি ভুলেই গেছিলাম। আজ অনেক দিন পর ক্লাস করতে এসেছি, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে, ক্লাস রুমে বসে ক্লাস করবো। সব মিলিয়ে অনূভূতিটাই অন্য রকমের।

একই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র রাফি বলেন, আমরা চাই নিয়মিত ক্লাস হোক। সরকার শর্ট সিলেবাস দিয়েছে সেগুলো সময়মতো সম্পন্ন করা হোক। তারপর পরীক্ষা হোক। বহুদিন পর স্কুল খোলার কারণে আজ আমাদের স্কুল প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মনে হচ্ছে, আমি একটি উৎসবে যুক্ত হয়েছি।

বালিকা উচ্চ বিদ্যারয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী রাত্রি বলেন, মনে হচ্ছে জেলখানা থেকে ছাড়া পেলাম। ঘরবন্দি জীবন কষ্টের ছিল। আজ আবারও স্কুলের চিরচেনা রূপ ফিরে পেয়েছি। গতকালের চেয়ে আজকের পৃথিবী বেশি সুখময়। স্কুল খোলার কারণে এখন থেকে বন্ধুদের সঙ্গে আগের মতো খেলাধুলা করতে পারব। স্কুল খোলায় খুব আনন্দ লাগছে।

এদিকে সকালে শহরের বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শণ করেন জেলা প্রশাসক মে: হারুন অর রশিদ। এসময় তিনি বলে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেখানে সব নির্দেশনা মানা হচ্ছে কি-না, তা মনিটরিং করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য সরকারের দেওয়া সব নির্দেশনা অনুসরণ করে স্কুল-কলেজে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শিহাব রায়হান, জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমানসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।