প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ২৮ শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ‘রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে’র এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) দ্বিতীয় বর্ষের ২৮ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েও ফরম পূরণ না করায় ওই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) পরীক্ষার ঠিক দুই দিন পূর্বে এ খবর জানতে পেরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে এবং কলেজে ভাঙচুর চালায়। পরে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা।
কলেজ সভাপতি ও ইউএনও আল ইমরান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীরের গাফিলতির কারনে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় আগামী ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই ২৮ শিক্ষার্থীর।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানান, কলেজ অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীরে কাছে তারা ফরম পূরণের টাকা জমা দিয়েছিলো। কিন্তু পরীক্ষার ঠিক দুইদিন আগে প্রবেশপত্র নিতে কলেজে গিয়ে তারা জানতে পারেন দ্বিতীয় বর্ষের ২৮ পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র নেই।
বিষয়টি অনান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে দেখেন তিনি কলেজ থেকে পালিয়ে গেছেন। ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অত্র কলেজের একাধিক প্রভাষক বলেন, অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার করে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাত করেন।
অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
কলেজ সভাপতি ও রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান পুরো ঘটনার জন্য অধ্যক্ষকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণরূপে অধ্যেক্ষর গাফলতি। এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র না আসার বিষয়টি তিনি আজ দুপুরে আমাকে ফোনে জানান।’
ইউএনও বলেন, ‘প্রতিকার চেয়ে শিক্ষার্থীরা আমার মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষর গাফলতি প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন) স্যারকে আমি বিষয়টি সমাধানে অনুরোধ করেছি। আশা করছি একটা সমাধান হবে এবং সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।’