প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ‘গৃহবন্দি’ প্রশ্নকর্তা
প্রায় প্রতিবারই শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুঞ্জন ওঠে থাকে। গত বছরও প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৬০ সদস্যকে আটক করা হয়েছিল। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা মানেই যেন প্রশ্ন ফাঁস। তাইতো এবার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে ভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার আওতায় পরীক্ষা চলাকালীন মূল প্রশ্নকর্তাকে রাখা হবে গৃহবন্দি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ৫০৩টি কেন্দ্রে একযোগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশ্নপত্র চূড়ান্তকারী কর্মকর্তাকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট স্থানে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তাকে মুক্ত করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, চূড়ান্ত প্রশ্নপত্রকারী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বাইরের। এবার যাতে কোনো ধরণের বিতর্ক না উঠে এজন্য সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সেলফোনসহ সব ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইসমুক্ত একটি নির্দিষ্ট কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে এ অবস্থায় রাখা হবে।
এছাড়া প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে প্রথমবারের মতো বুয়েটের কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রিন্টিং প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়েছে। প্রতি জেলায় একটি করে মোট ১৮ সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করার পর সেখান থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে একজন কর্মকর্তাকে প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
শুধু তাই নয়, প্রথমবারের মতো এবার প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় বিদ্যোৎসাহী সদস্যের নামে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বোর্ডে রাখা হচ্ছে না বলেও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং রাজনৈতিক তদবির ও প্রভাবশালীদের চাপ বন্ধ করতে ভাইভা বোর্ডে বিদ্যোৎসাহী সদস্যের নামে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা নেতাকে না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভগ দিয়ে প্রথম ধাপে ১৮টি জেলায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রংপুর বিভাগের ৮টি, বরিশাল বিভাগের ৬টি ও সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা রয়েছে। এবারের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন, কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৩৫টি, কক্ষের সংখ্যা ৮ হাজার ১৮৬টি।