চট্টগ্রামে ২ আসনে ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, চট্টগ্রাম 
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম-১০ ও ১২ আসনে ভোটার সমর্থকের তালিকায় গরমিলসহ নানা কারণে ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১০ আসনের চারজন এবং বাকী চারজন চট্টগ্রাম-১২ আসনের প্রার্থী।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় এবং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা এসব প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। এদিন দ্বিতীয় দফায় চট্টগ্রাম ৭, ১২ ও ১৪ আসনসহ দুপুর পর্যন্ত মোট ৫টি আসনের যাচাই বাছাই শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর, পাহাড়তলী, ডবলমুরিং, খুলশী) আসনের চার প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ভোটার সমর্থকের তালিকায় গরমিল পাওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া বিএনএফের মঞ্জুরুল ইসলামসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল আমীন ও মো. ওসমান গনির মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়।

তবে এই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। এসময় চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ আসনেও একজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।

এদিন চট্টগ্রাম-১০ আসনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম ১২ (পটিয়া) আসনের আরও চার প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবকসহ ১ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি শনাক্ত না হওয়ায় এবং গরমিল থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াছ মিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী কিবরিয়া চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তার ১ শতাংশ সমর্থনসূচক ভোটার তালিকায় উল্লেখ এক ভোটার দুই বছর আগে মারা গেছে এবং আরও ভোটারের তথ্য গরমিল পাওয়া যাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এম এ মতিনের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায় মনোনয়ন বাতিল হয়। এ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী এম ইয়াকুব আলীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে।

এসময় প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী মুজিবুল হক। তখন তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলে মহানগর পিপি আবদুর রশিদ। পরে হুইপের ছেলে কমার্স কলেজের প্রত্যায়ন পত্র উপস্থাপন করেন। এরপর জেলা প্রশাসক বলেন, ‌'আপিল করলে তা যথাযথভাবে করতে হয়। এই মুহূর্তে যাচাই-বাছাই করে তা বৈধ ঘোষণা করা হল।' আসনটিতে দশ জন প্রার্থীর মধ্যে এরমধ্যে ৪টি বাতিল, একটি স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনের দুই প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়।

এর আগে, রোববার (৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে ১৬ আসনের মধ্যে ৮ আসনের মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এদিন মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ১৮ প্রার্থীর। তাঁদের বেশিরভাগই স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই), চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) ও চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এর মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ১১ জন এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

চট্টগ্রামে ১৬ আসনে মোট ১৫১ জন মনোনয়ন জমা দেয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৩ লাখ ৯৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৬২ জন এবং নারী ভোটার ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯০২ জন।