সংগীতের রত্নখনি বাংলাদেশ: পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে অনেক ভালো ভালো ছেলে-মেয়ে রয়েছে যাদের কণ্ঠ এতো ভালো শুধু একটু পরিশ্রম করলে ও সঠিক পরিচর্যা পেলে তারা শীর্ষে যেতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববরেণ্য ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।

তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটা রত্নখনি। এখানে এতো ভালো ছেলে-মেয়ে রয়েছে যাদের কণ্ঠস্বর এতো উন্নত, এতো ভালো বিশেষ করে যারা রবীন্দ্রনাথের গান করেন এবং আরও অন্যান্য গান যারা করেন। অনেকেই আসেন আমার কাছে শেখার জন্য। আসলে এদের রক্ষা করা উচিত, এদের বাঁচিয়ে রাখা উচিত। আমি একটা অনলাইন ক্লাস করতে চাই। এই রত্নখনিদের বাঁচিয়ে রাখতে দরকার একটা শিক্ষা পদ্ধতি এবং অদম্য পরিশ্রম করার মানসিকতা।’

রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন বিখ্যাত এই সংগীতশিল্পী। তিনি মূলত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে ‘রাগ’ সংগীত গাইতে আসেন।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

পৈত্রিক সূত্রে বাঙালি এই পণ্ডিত বাংলাদেশের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছা থেকে বলেন, “সরকার যদি ব্যবস্থা করে এবং যদি একটা অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আমি ওদের শেখাতে পারবো। নির্দিষ্ট একটা সময় থাকলো। তাতে আমি বাংলা ভাষায় বোঝাতে পারবো।”

কিভাবে বাংলাদেশের সহযোগিতা করতে পারবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানকার (বাংলাদেশ) বাছা বাছা যদি কুড়িটা বা পঞ্চাশটা ছেলে-মেয়ে হয়, এমনকি যদি ১০ জনও হয়, একটা দেশকে চেনানোর জন্য সেই ১০ জন শিল্পীই যথেষ্ট। এই যেমন ধরুন একজন লতা মঙ্গেশকরই ভারতবর্ষের পরিচয় দিতে যথেষ্ট।

তিনি বলেন, এখানে যারা অল্প বয়সী, যাদের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছর বা ১৮-২০ বছর। যাদের ভেতর সংগীতের বীজ আছে, তাদের যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ থাকে বা তারা যদি আসে বা আমি যদি কখনও আসি তাদের যদি একটা শিক্ষা পদ্ধতির ব্যবস্থা করা যায় যেটা প্রথমে হয়তো অনলাইনে হলো। পরে তার মধ্যে থেকে বেছে বেছে কয়েকজন ছেলে-মেয়েকে আমার কাছে পাঠানো হলো। সেটা যদি সরকারিভাবে করা যায় তাহলে ভালো। আর আমি অনলাইনে একটা ক্লাস করি তাতে কিছু শেখাতে পারব।

বিখ্যাত সংগীতশিল্পী অজয় চক্রবর্তী বলেন, একটা নির্দিষ্ট সময় থাকলো, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন যেভাবে করছে। সেভাবে একটা অনলাইন ক্লাসও যদি করা যায়। আমাকে পারিশ্রমিক দেওয়াটা বড় কথা নয়, কিন্তু সবাই যেনো উপভোগ করতে পারে, ফায়দা নিতে পারে, লাভ নিতে পারে। মনে রাখতে হবে খুব কঠিন পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এটা সম্ভব। আমি বলে দিলাম এটি ২০০ বার করতে হবে, যদি কেউ ২০ করে তাহলে তো হবে না। আমার ইচ্ছা যদি মাসে দু’দিন করেও একটা অনলাইন ক্লাস বড় করে আয়োজন করা যায় কলকাতা থেকে শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য। আর পরে যখন আসলাম পুরোটা দেখলাম মনিটর করলাম।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

তিনি বলেন, যদি ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে হতে ১০ জনকে বললাম ওদের কলকাতা পাঠিয়ে দেন আমি দেখাশোনা করব। ১০টা বাচ্চাকে ভালো করে রেওয়াজ করালাম। সংগীতের অন্যতম পীঠস্থান এই বাংলাদেশ। ভারতে যন্ত্র সংগীতের যে একটা বিরাট প্রচার এবং প্রসার আছে তার পুরোধা হচ্ছে পণ্ডিত রবিশঙ্কর, পণ্ডিত নিখির রঞ্জন বন্ধ্যোপাধ্যায় আরও অগণিত তারা সবাই বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের ছাত্র। তারা সব বাংলাদেশের তৈরি, আজকে বাংলাদেশ যদি না থাকত তাহলে পঞ্চ কবির গান দিজেন্দ্রনাথ লাল রায়, অতুল প্রসাদ সেন, রজনীকান্ত এই পঞ্চ কবির গান হতো না। বাংলাদেশে যেভাবে শ্রদ্ধার সাথে এই পঞ্চ কবির গান পালিত হয় এবং পরিবেশিত হয়। এই পঞ্চ কবির গান ওই বাংলায় (ভারতবর্ষে) এভাবে প্রচার প্রসার হয় না। শুধু রবীন্দ্রনাথের গান হয় কিছুটা, নজরুল গীতি হয়। অতুল প্রসাদ, রজনীকান্ত ভারতে তো জানেনই না কেউ রবীন্দ্রনাথের মতো দার্শনিক গত ১০০ বছরে আর জন্মাননি। যিনি ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের শ্রষ্টা।

তিনি আরোও বলেন, পরিশ্রম করার মানসিকতা বাংলাদেশে কমে গেছে। পশ্চিমবঙ্গেও কমে গেছে ভীষণভাবে কমে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এতো সুন্দর সুন্দর কণ্ঠ আছে। আমাদের পরিচিত ছেলে-মেয়েরা আছে তারাও এতো ভালো গান করে কিন্তু তারা জানে না তারাও শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তাদের অনুষ্ঠান সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেন, ছোটবেলায় শুরু না করলে ২৬ বছর বা ২৮ বছর বয়সে শুরু করলে তো হবে না। পড়াশোনা যেমন ৩ বছরে শুরু করি তেমনি গানও ৩, ৪, ৫ বছর বয়সে শুরু করা উচিত। সেজন্য শ্রুতি নন্দনে সাড়ে ৫-৬ বছর থেকে ১২ বছর পেরিয়ে গেলে আর নিই না। ছোট বয়সে যদি না গ্রহণ করতে পারেন তাহলে ভালো কিছু আশা করা যায় না।

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে আমি যেন একটা নতুন ‘রাগ’ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জন্য আমি গাই। রাগের কোন পরিচয় সেদিন অনুষ্ঠানে দিতে পারিনি। রাগ একটা সমুদ্রের মতো। আর সমুদ্রকে একটা গ্লাসে করে পরিবেশন করা যায় না। একটা রাগ এর পরিচয় প্রচার প্রসার করতে গেলে তার বিস্তার দেখাতে গেলে সময়ের প্রয়োজন হয়। মনে হয়েছে আমি গঙ্গার জলে গঙ্গার পূজো করেছি। বাংলাদেশের এই সংগীত প্রেমি মানুষ তাদের জন্য পরিবেশনা। নাম দিয়েছি ‘মৈত্রি রাগ’। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সবসময় মৈত্রি ছিলো। অতিথি পরায়ণতা বাংলাতে বেশি্ ভারতবর্ষে কমে গেছে কোনদিনই এতোটা ছিল না যেটা বাংলাদেশে আছে। এখানে অবিশ্বাস্য ভালোবাসা মানুষের প্রতি আছে।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

শেখ মুজিবুর রহমান জি’র মতো মানুষ ছিলেন বলেই আমার নতুন রাগটি সৃষ্টি হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ রাগ নতুন গন্ধ পাওয়া গেছে। আমি বহুবার মুজিবুর রহমান জি’র বক্তৃতা শুনেছি তার কণ্ঠ এখনো আমার কানে বাজে। সেই কণ্ঠকে চোখে দেখিনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের উন্নতির জন্য তার আত্মা সচেতন আছে। আমি চাই সংগীতে বাংলাদেশ আবার শ্রেষ্ঠ আসন গ্রহণ করুক, উন্নতি করুক এবং তরুণ ছেলে-মেয়েদের জন্য আমি যদি কিছু করতে পারি। সেটা আমার সব থেকে বড় কাজ হবে। আমি যেহেতু এই বাংলার ছেলে আমি যদি কিছুটা ফিরিয়ে দিতে পারি এটা আমার কাছে বড় অর্জন হবে।

এখন হয়তো কলকাতা থাকি কিন্তু আপনাদেরই একজন ছেলে। যেন এই দেশকে কিছু ফেরত দিতে পারি এজন্য আপনারা আমাকে আর্শীবাদ করুন। আমার যোগ্যতা আছে, আমি খুবই যোগ্য কিন্তু তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং যেগুলো বলবো সেগুলো শুনতে হবে। না শুনলে তো হবে না।

   

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সম্পাদক ডিপজল



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে (২০২৪-২৬) সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুন আক্তার পেয়েছেন ২০৯ ভোট।

মিশা-ডিপজল ছাড়াও সহ-সভাপতি পদে ২৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব ২৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আলেকজান্ডার বো, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কলি-নিপুণ প্যানেলের মামনুন ইমন এবং কোষাধ্যক্ষ পদে কমল বিজয়ী হয়েছেন।

এছাড়া কার্যনির্বাহী পরিষদের ১১ জন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন- সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমীন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু এবং কলি-নিপুণ প্যানেলের পলি ও সনি রহমান।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ৪৭৫ জন শিল্পী। 

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মধ্যে একটি জোটে ছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে দুই অভিনেতা মিশা ও ডিপজল। আরেক প্যানেল থেকে লড়েন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি ও নায়িকা নিপুণ আক্তার।

এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন- খোরশেদ আলম খসরু এবং সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বিএইচ নিশান। শনিবার সকাল ৭টায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

;

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে চলছে ভোট গণনা, আসেননি অনেক তারকা



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে বিএফডিসি প্রাঙ্গণে চলছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক (২০২৪-২৬) নির্বাচন। সকাল সাড়ে ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল, ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল সাড়ে ৫টায়। এখন চলছে ভোট গণনা। 

ভোট দিতে সকালে তেমন কোন ভোটার উপস্থিত না থাকলেও জুমার নামাযের পর কিছু তারকা এফডিসি প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। ভোট গ্রহণের সময় শেষ দিকে চলে এলেও দেখা যায়নি চলচ্চিত্রের অনেক জনপ্রিয় তারকাদের। জানা গেছে, তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যার কারণে ভোট দিতে পারছেন না।

এরমধ্যে রয়েছেন ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। তিনি বর্তমান নতুন সিনেমার শুটিংয়ে ভারতের হায়দরাবাদে অবস্থান করছেন।

গত নির্বাচনে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হলেও এবার ভোটের মাঠ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন অরুণা বিশ্বাস। দেশে না থাকার কারণে এবার ভোট দিতে আসতে পারছেন না।

৮ বছর পর এফডিসিতে ভোট দিতে এলেন কাজী মারুফ

এছাড়াও এদিন ভোট দিতে পারছেন না এমন তালিকায় রয়েছেন সুপারস্টার শাবনূও, চিত্রনায়ক ও সাংসদ ফেরদৌস আহমেদ, প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা, শাহরিয়ার নাজিম জয়, আজিজুল হাকিম, আনিসুর রহমান মিলন, রেসি, বিপাশা কবির, সোহানা সাবাসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী।

২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুইটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি মিশা-ডিপজল পরিষদ, অন্যটি কলি-নিপুণ পরিষদ।

এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়ছেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও দাপুটে খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে গেল আসরের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৭০ জন। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন খোরশেদ আলম খসরু।

;

নতজানু হয়েও কোন পক্ষের সমর্থন পেলেন না জোভান



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

  • Font increase
  • Font Decrease

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান পড়েছেন দারুণ ঝামেলায়। তার একটি নাটককে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একপক্ষের সমালোচনায় অবশেষে নতজানু হয়ে ভিডিও বার্তা দিলেন তিনি। তাতেও সেই পক্ষের মন গলাতে পারলেন না। উল্টো তারা জোভানের বাকী নাটকগুলোকেও বয়কটের সুর তুলছে!

ঝামেলা এখানেই শেষ নয়। জোভান নতজানু হয়ে দুঃখ প্রকাশ করায় আরেকপক্ষ তাকে দারুণভাবে করছেন সমালোচনা। এই পক্ষে আবার রয়েছেন তারই সহকর্মীরা। তারা জোভানের সাহস ও শিনদাঁড়ার শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত গেল ঈদুল ফিতরে প্রচারিত জোভানের নাটক ‘রূপান্তর’ নিয়ে। রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত এই নাটক প্রচারের পরই এটি নিয়ে অন্তর্জালে ফুঁসে ওঠে একাংশ দর্শক। নিরুপায় হয়ে নাটকটি ইউটিউব থেকেও নামিয়ে ফেলা হয়।

 ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্যে সামিরা খান মাহি ও জোভান

কিন্তু রেহাই মেলেনি তাতেও। অগত্যা অভিনেতা জোভান নিজেই গা ঢাকা দেন, বন্ধ করে রাখেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল। অবশেষে আজ ১৯ এপ্রিল ভোর রাতে দেখা দিয়েছেন তিনি। একটি ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হলেন। যেখানে আকুতিভরা কণ্ঠে ক্ষমা চেয়েছেন দর্শকের কাছে।

আতঙ্ক আর অসহায়ত্বে ভরা চাহনিতে জোভান বলেন, ‘এই ঈদে আমার বেশ কিছু নাটক এসেছে। প্রথম দিন থেকেই ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। এই ঈদটা আমার খুব সুন্দর ঈদ হতে পারতো আপনাদের ভালোবাসায়, সাপোর্টে। কিন্তু সেটা হয়নি। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে আপনারা যেমন কষ্ট পেয়েছেন, আমিও কষ্ট পাচ্ছি। আমি কিন্তু একদমই ভালো নেই।’

‘রূপান্তর’ নাটকের প্রসঙ্গে জোভানের জবাবদিহি এরকম, “রূপান্তর’ নাটককে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা একদমই অপ্রত্যাশিত। এই নাটকের মাধ্যমে কারও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। আমি নিজেও একটা মুসলিম পরিবারের ছেলে। আমি জানি, ধর্মকে কতটা বিশ্বাস করি, আল্লাহকে শ্রদ্ধা করি। এই নাটকের মাধ্যমে আমরা কোনও কিছুকে নরমালাইজ করা বা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করিনি। কেবল একটি চরিত্র উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটার মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়েছি, এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সবার কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”

ফারহান আহমেদ জোভান

সবশেষে অনুরোধের সুরে জোভান বলেছেন, ‘দীর্ঘ এগারো বছর যাবত নাটক করছি। আজকে আমার যে অবস্থান, এর পেছনে আমার একার নয়, অবশ্যই দর্শকের ভালোবাসা ও সাপোর্ট ছিল। আমার কাজ করার মূল উদ্দেশ্য হলো দর্শককে একটু বিনোদন দেওয়া, সেজন্যই এত কষ্ট। এরপর থেকে আরেকটু বেশি সচেতন থাকবো চরিত্র বাছাই করতে। যাতে তাদের মনঃক্ষুণ্ণ না হয়, কষ্ট না পায়। আমার যে কাজগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে, তার চেয়েও ভালো কাজ উপহার দেবো। শুধু একটাই অনুরোধ, আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না। আমার জন্য দোয়া করবেন।’

যদিও জোভানের ভিডিও বার্তার কমেন্ট বক্স দেখলে আঁচ করা যায়, তার এই আর্তনাদ গলাতে পারছে না নেটিজেনদের মন। গণহারে তার নাটক বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে তারা। বিপরীতে অনেকেই জোভানের এই পরাজিত কণ্ঠ ও মুখ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বলছেন, প্রকৃত শিল্পী কখনোই এতোটা নতজানু হয় না।

উল্লেখ্য, নীহার আহমেদের চিত্রনাট্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটি নির্মিত হয়েছে। এর গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। যার ফলে তিনি জানতেই পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে। বড় হয়ে হয়েছেন চিত্রকর। পেয়েছেন খ্যাতিও। এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালী তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় চিত্রকরকে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এরপর তার চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোন জনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন। তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।

ফারহান আহমেদ জোভান

গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউবে। রাতে বেশ কিছু দর্শকের পক্ষ থেকে আপত্তি পেয়ে সেটি ১৬ এপ্রিল সকালে তুলেও নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। একই নাটক ডাউনলোড করে অসংখ্য ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করছে সমালোচনাকারীদের একটা বড় অংশ। তারাই আবার এমন নাটক নির্মাণ ও প্রচারণার প্রতিবাদ করছেন! এমনকি নির্মাতা-শিল্পীদের হুমকিও দিচ্ছে অনেকে। যা নিয়ে আতঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

;

আগামী মাসেই সোহেল-নীলা জুটির ‘শ্যামাকাব্য’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

গুণী নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘শ্যামাকাব্য’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ রয়েছে। এই ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন সদ্য ভারতের ফিল্মফেয়ার পুরস্কারজয়ী অভিনেতা সোহেল মণ্ডল ও জনপ্রিয় লাক্স তারকা নীলাঞ্জনা নীলা। তারা ছাড়াও এক ঝাক তারকা শিল্পীকে নিয়ে নির্মিত সরকারি অনুদানের এই সিনেমাটি গত ২৪ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা ছিল।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

কিন্তু সে সময় ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। তখন নির্মাতা সৌদ জানিয়েছিলেন, ‘‘দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যই এই সিদ্ধান্ত। চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম, এমন পরিস্থিতিতে দর্শক সিনেমা হলে এসে ছবি দেখতে চাইবেন না। দর্শকের জন্যই তো আমাদের সিনেমা। তাদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা জরুরী। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘শ্যামাকাব্য’ জাতীয় নির্বাচনের পরেই মুক্তি দেব।’’

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

অবশেষে ছবিটি মুক্তির নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ছবিটির নায়ক সোহেল মণ্ডল জানান, ‘‘আসছে ৩ মে আপনার নিকটস্ত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘শ্যামাকাব্য’।’’

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ধাচের ছবিটিতে প্রেমের বিষয়টিও বেশ স্পষ্ট। এতে নীলাকে দেখা যাবে শ্যামা’র চরিত্রে। আর সোহেল মণ্ডল রয়েছেন আজাদ নামের একটি চরিত্রটি।

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

নায়ক-নায়িকা দুজনই বললেন, তাদের চরিত্র দুটি একেবারেই নতুন। তাদের রসায়নও দর্শকের মন ছুঁয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদী। নীলার ভাষায়, শ্যামা মেয়েটি খুব শান্ত। দেখলে চোখে আরাম দেবে। আর সোহেল এখনই তার চরিত্রের কোন গোমর ফাঁস করতে চান না।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

ছবিতে একটি মাত্র গান রয়েছে। নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদের লেখা ‘পাখি যাও যাও’ শিরোনামের সেই গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ইমন সাহা। চমকপ্রদ বিষয় হলো সেই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত দুজন শিল্পী। একজন হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের কিংবদন্তি পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, অন্যজন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী।

;